ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধুর নিজের চিন্তার ফসল ছয় দফা : প্রধানমন্ত্রী

  • পোস্ট হয়েছে : ০২:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ অগাস্ট ২০২০
  • 52

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাঙালি সব সময় বঞ্চিত, অরক্ষিত ছিল তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছয়দফা প্রণয়ন করেন। ছয়দফা প্রণয়ন নিয়ে অনেকে অনেকভাবে বলতে চায়। কেউ বলে এর পরামর্শে ওর পরামর্শে কিন্তু আমি নিজে জানি এটা সম্পূর্ণ তার (বঙ্গবন্ধুর) নিজস্ব চিন্তার ফসল।

বুধবার (২৬ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৫৮ সালে গ্রেফতার করা হলো এবং পরে তিনি ১৯৫৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর মুক্তি পান। সে সময় ঢাকার বাইরে যেতে পারতেন না। তখন তিনি একটা আলফা ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি নেন। তাজউদ্দীন সাহেবও গ্রেফতার ছিল মুক্তি পেয়ে তিনিও একটা চাকরি নিয়ে চলে গিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাতে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নিজে গিয়ে তাজউদ্দীন সাহেবকে নিয়ে আসলেন এবং আলফা ইন্সুরেন্সে চাকরি দিলেন। মোহাম্মদ হানিফ তাকেও চাকরি দেন তার পিএ হিসেবে। বঙ্গবন্ধু সব সময় নিজে বসে বসে চিন্তা করতেন নিজেই লিখতেন এবং হানিফকে দিয়ে টাইপ করাতেন। এখানে শুধুমাত্র হানিফ জানত, সেই টাইপ করেছিল এছাড়া কিন্তু আর কারো জানা ছিল না। এটা সম্পূর্ণ তার নিজস্ব চিন্তা থেকে ৬ দফা তৈরি করা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছয় দফার আন্দোলন এক দফায় পরিণত হয়। যখন এটা নিয়ে আলোচনা হতো আমাদের পতাকা কি হবে, জাতীয় সঙ্গীত কি হবে, আমাদের জাতীয় স্লোগান কি হবে এগুলো ছয়দফার সময় আলোচনা করতেন এবং বলে গিয়েছিলেন। এটা ছাত্রলীগকে সবার আগে বলে দেওয়া হতো যেন এটা আস্তে আস্তে ছাত্রদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সব সময় একটা অগ্রণী ভূমিকা এই সংগঠন নিয়েছে। এটা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। মানুষ এটা কিভাবে গ্রহণ করে মানুষের কাছে কিভাবে গ্রহণযোগ্যতা পায় সেটা হচ্ছে আগে তারপর জাতীয় পর্যায়ে তোলা। একটা জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা, মানসিকভাবে প্রস্তুত করা এবং এই জাতিকে পাকিস্তান আন্দোলনের জন্য সঙ্গবদ্ধ করেছিলেন। স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে ছয়দফা একটা ধাপ ছিল। আমাদের মুক্তির সংগ্রাম আমাদের বিজয় অর্জন। ইতিহাস আসলে মুছেই ফেলা হয়েছিল ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতার হত্যার পর। তার ৭ মার্চের ভাষণও নিষিদ্ধ ছিল। এই ভাষণ কখনো কেউ শুনতে পারত না। এখন আস্তে আস্তে সবাই জানতে পারছে।

তিনি বলেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দিয়ে যখন ফাঁসি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল তখন তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলা হল। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সারা দেশের মানুষ ৬ দফাকে বেছে নিয়েছিল। কোনো একটা দাবি এতো অল্প সময়ের মধ্যে মানুষ এমনভাবে গ্রহণ করতে পারে এবং তার জন্য বুকের রক্ত বিলিয়ে দিতে পারে এটা সত্যিই অনন্য। যা সম্ভব হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে।

এর আগে ‘শতবর্ষে শত পুরস্কার’ শীর্ষক এক অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার ও সনদ প্রদান করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন ও ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এই কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি।

অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। সভা পরিচালনা করেন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

বিজনেস আওয়ার/২৬ আগস্ট, ২০২০/কমা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বঙ্গবন্ধুর নিজের চিন্তার ফসল ছয় দফা : প্রধানমন্ত্রী

পোস্ট হয়েছে : ০২:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ অগাস্ট ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাঙালি সব সময় বঞ্চিত, অরক্ষিত ছিল তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছয়দফা প্রণয়ন করেন। ছয়দফা প্রণয়ন নিয়ে অনেকে অনেকভাবে বলতে চায়। কেউ বলে এর পরামর্শে ওর পরামর্শে কিন্তু আমি নিজে জানি এটা সম্পূর্ণ তার (বঙ্গবন্ধুর) নিজস্ব চিন্তার ফসল।

বুধবার (২৬ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৫৮ সালে গ্রেফতার করা হলো এবং পরে তিনি ১৯৫৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর মুক্তি পান। সে সময় ঢাকার বাইরে যেতে পারতেন না। তখন তিনি একটা আলফা ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি নেন। তাজউদ্দীন সাহেবও গ্রেফতার ছিল মুক্তি পেয়ে তিনিও একটা চাকরি নিয়ে চলে গিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাতে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নিজে গিয়ে তাজউদ্দীন সাহেবকে নিয়ে আসলেন এবং আলফা ইন্সুরেন্সে চাকরি দিলেন। মোহাম্মদ হানিফ তাকেও চাকরি দেন তার পিএ হিসেবে। বঙ্গবন্ধু সব সময় নিজে বসে বসে চিন্তা করতেন নিজেই লিখতেন এবং হানিফকে দিয়ে টাইপ করাতেন। এখানে শুধুমাত্র হানিফ জানত, সেই টাইপ করেছিল এছাড়া কিন্তু আর কারো জানা ছিল না। এটা সম্পূর্ণ তার নিজস্ব চিন্তা থেকে ৬ দফা তৈরি করা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছয় দফার আন্দোলন এক দফায় পরিণত হয়। যখন এটা নিয়ে আলোচনা হতো আমাদের পতাকা কি হবে, জাতীয় সঙ্গীত কি হবে, আমাদের জাতীয় স্লোগান কি হবে এগুলো ছয়দফার সময় আলোচনা করতেন এবং বলে গিয়েছিলেন। এটা ছাত্রলীগকে সবার আগে বলে দেওয়া হতো যেন এটা আস্তে আস্তে ছাত্রদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সব সময় একটা অগ্রণী ভূমিকা এই সংগঠন নিয়েছে। এটা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। মানুষ এটা কিভাবে গ্রহণ করে মানুষের কাছে কিভাবে গ্রহণযোগ্যতা পায় সেটা হচ্ছে আগে তারপর জাতীয় পর্যায়ে তোলা। একটা জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা, মানসিকভাবে প্রস্তুত করা এবং এই জাতিকে পাকিস্তান আন্দোলনের জন্য সঙ্গবদ্ধ করেছিলেন। স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে ছয়দফা একটা ধাপ ছিল। আমাদের মুক্তির সংগ্রাম আমাদের বিজয় অর্জন। ইতিহাস আসলে মুছেই ফেলা হয়েছিল ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতার হত্যার পর। তার ৭ মার্চের ভাষণও নিষিদ্ধ ছিল। এই ভাষণ কখনো কেউ শুনতে পারত না। এখন আস্তে আস্তে সবাই জানতে পারছে।

তিনি বলেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দিয়ে যখন ফাঁসি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল তখন তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলা হল। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সারা দেশের মানুষ ৬ দফাকে বেছে নিয়েছিল। কোনো একটা দাবি এতো অল্প সময়ের মধ্যে মানুষ এমনভাবে গ্রহণ করতে পারে এবং তার জন্য বুকের রক্ত বিলিয়ে দিতে পারে এটা সত্যিই অনন্য। যা সম্ভব হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে।

এর আগে ‘শতবর্ষে শত পুরস্কার’ শীর্ষক এক অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার ও সনদ প্রদান করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন ও ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এই কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি।

অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। সভা পরিচালনা করেন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

বিজনেস আওয়ার/২৬ আগস্ট, ২০২০/কমা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: