আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বনকর্মীরা উত্তর অস্ট্রেলিয়ার রেইনফরেস্টে একটি বিশাল আকারের ব্যাঙ খুঁজে পেয়েছেন। আকৃতি বড় হওয়ায় বন্যপ্রাণী কর্মকর্তারা এটিকে প্রথমে নকল বলে মনে করেন।
বিভাগের কর্মীরাদের দাবি, তারা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যাঙটির দেখা পেয়েছেন। অস্ট্রেলীয়ার কুইন্সল্যান্ডের কনওয়ে ন্যাশনাল পার্ক রেইনফরেস্টের গভীর অঞ্চলে গত ১২ জানুয়ারি ব্যাঙটির দেখা পান তারা। তার ব্যাঙটির নাম দিয়েছেন ‘টডজিলা’।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর, অস্ট্রেলীয়রা বন বিভাগের কর্মীদের দাবি, কেন টড প্রজাতির ব্যাঙটি সেখানকার বাস্তুতন্ত্রকে হুমিকর মুখে ফেলে দিয়েছে। বিজ্ঞানীরা কয়েক মাস আগেই বিষয়টি শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। পরে এর কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা শুরু হয়। এরই মধ্যে ১২ জানুয়ারি নিয়মিত টহলের সময় বন বিভাগের কর্মী কাইল গ্রে প্রথমবার ব্যাঙটি শনাক্ত করেন।
গ্রে এবং তার অপর এক সহকর্মী মিলে ব্যাঙটিকে সেখান থেকে ধরে এনে তাদের কার্যালয়ে হেফাজতে রাখেন। সেখানে ব্যাঙটির ওজন মেপে দেখা যায় সেটির ওজন প্রায় ৩ কেজি (২ দশমিক ৭ কেজি)। এর আগে, ১৯৯১ সালে সুইডেনের একটি ব্যাঙের ওজন পরিমাপ করা হয়েছিল ২ দশমিক ৬৫ কেজি। সেটিই এতদিন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যাঙের রেকর্ড দখল করে ছিল।
অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম এবিসিকে শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) বলেছেন, ‘আমরা কনওয়ে ন্যাশনাল পার্কের নামানুসারে ব্যাঙটিকে কনি নাম দিব বলে ভেবেছিলাম। কিন্তু টডজিলা নামটি এতবার বলছিল সবাই যে, আমরা সেটিই নাম রেখে দিই।’
কাইলা গ্রের সহকর্মী ব্যারি নোলান রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এ ধরনের প্রাণীকে বাস্তুতন্ত্রের ওপর নেতিবাচক প্রভাবের জন্য আর দশটিা সাধারণ ব্যাঙের মতো প্রায়ই মেরে ফেলা হয়।’
নোলান জানান, ১৯৩৫ সালের দিকে কেন টড প্রজাতির ব্যাঙকে অস্ট্রেলিয়ায় আনা হয়। উদ্দেশ্য ছিল গুবরে পোকাসহ অন্যান্য ক্ষতিকর পোকামাকড়কে এই প্রজাতির ব্যাঙ খেয়ে ফেলবে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাস্তুতন্ত্রে এই ব্যাঙটিই সর্বোচ্চ স্তরের খাদকে পরিণত হয় এবং এই প্রজাতির ব্যাঙ শিকার করার মতো কোনো প্রাণী না থাকায় স্বাভবিক কারণেই সংখ্যা বাড়তে থাকে, যা এক পর্যায়ে অন্যান্য প্রজাতির প্রাণির জন্য হুমকি হয়ে দেখা দেয়।
ব্যারি নোলান আরও বলেন, ‘একটি স্ত্রী টডজিলা ৩৫ হাজার ডিম দেয়। এগুলোর প্রজনন ক্ষমতা বেশ বিস্ময়কর। কেন টডের প্রজনন চক্রের পুরো অংশটিই অস্ট্রেলীয় স্থানীয় প্রজাতির জন্য বিষাক্ত। তাই এই ব্যাঙগুলোকে কীভাবে প্রতিরোধ যায় এবং কীভাবে পরিচালনা করতে হবে তা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
বিজনেস আওয়ার/২১ জানুয়ারি, ২০২৩/এএইচএ