বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বিশ্ববাজারে নিজেদের দখলদারত্ব প্রতিষ্ঠা করতে নকল প্লাস্টিক পণ্য তৈরি বন্ধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। আরও বলেন, প্লাস্টিক পণ্য যেন পরিবেশের জন্য হুমকি না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
বুধবার ১৫তম আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক ফেয়ারের (আইপিএফ) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। এছাড়া অতিথি হিসেবে ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, ইয়র্কার ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিসের সভাপতি জুডি ওয়াং।
এদিকে “বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনে (বিপিজিএমইএ) আয়োজনে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) তিন দিনব্যাপী মেলা শুরু হয়েছে বুধবার।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, আমি এ খাতে প্রচুর সম্ভাবনা দেখি। এরই মধ্যে বাংলাদেশের প্লাস্টিক পণ্য বিদেশে একটি জায়গা করে ফেলেছে। এতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অবদান সবচেয়ে বেশি।
আমরা এ খাতকে সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছি জানিয়ে তিনি বলেন, মুন্সিগঞ্জে আমরা ১০ একরের একটি প্লাস্টিক শিল্পপার্ক করছি। কেমিক্যালের জন্য আলাদা শিল্পপার্ক হচ্ছে। এই খাতকে পুরোপুরি কমপ্লায়েন্সের মধ্যে আনার পরিকল্পনা বর্তমান সরকারের রয়েছে।
সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, সরকার প্লাস্টিককে সমর্থন দিচ্ছে। প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে, কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সরকার কাজ করছে। অচিরেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দুটি প্লাস্টিকের টেকনোলজি সেন্টার করছি। পরে আরও দুটি হবে।
তবে এ খাতকে এগিয়ে নিতে উদ্যোক্তাদের অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। বিশ্ববাজারে নিজেদের দখলদারত্ব প্রতিষ্ঠা করতে নকল পণ্য তৈরি বন্ধ করতে হবে। এটি যেন পরিবেশের জন্য হুমকি না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। একসময় সারাবিশ্বে কম্পালায়েন্স বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে। এভাবে থাকলে তখন আর পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব হবে না।
অনুষ্ঠানে বিপিজিএমইএ সভাপতি সামিম আহমেদ বলেন, বিশ্বের ২১টি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক এ ফেয়ারে অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত, চীন, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা, ইউএসএ, ফ্রান্স, হংকং, ইতালি, জাপান, মালয়েশিয়া, অস্ট্রিয়া, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এবার মেলায় এসেছে।
আরও বলেন, আইপিএফ এখন দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ইভেন্টগুলোর একটি। এ মেলা প্লাস্টিক খাতে বিনিয়োগ, বাজারের আকার এবং জাতীয় ও বিশ্বব্যাপী রপ্তানি বাড়াতে সাহায্য করে। এতে প্লাস্টিকের ব্যবহারও বাড়ছে।
এদিকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ১৪তম আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক ফেয়ার বিভিন্ন দেশ ও জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে কোভিডের কারণে গত তিন বছর এ মেলা বন্ধ ছিল। বাংলাদেশসহ মোট ২১টি দেশ থেকে ৪৯৪টি কোম্পানি ৭৫০টি স্টল নিয়ে মেলায় অংশ নিয়েছে। এতে মেশিনারিজ, মোল্ড, কাঁচামাল উৎপাদনকারী ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানসহ দেশে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নিয়েছে। পাশাপাশি মেলায় দেশীয়ভাবে মোট ১৫টি ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্ৰতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকপণ্য উৎপাদনকারী মেশিন ও ক্যাটালগ প্রদর্শন করবে মেলায়।
বিজনেস আওয়ার/২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩/এমএজেড