মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান : সব ধরনের সিম প্রতি সরবরাহের ওপর ২০০ টাকা ভ্যাট অব্যাহতিসহ এই শিল্পের উন্নয়ন নিশ্চিতে একগুচ্ছ দাবি রেখেছেন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল অপারেটরস অব বাংলাদেশের (এমটব)।
রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় সংগঠনটির মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ (অবসরপ্রাপ্ত) এ দাবিগুলো তুলে ধরেন। এমটব ছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি), বিড়ি শিল্প মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ বেভারেজ ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা। এনবিআরের সদস্য মো. মাসুদ সাদিকের (কাস্টমস নীতি) সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের পক্ষে জাকিয়া সুলতানা (ভ্যাটনীতি) এবং সামসুদ্দিন আহমেদ (আয়কর নীতি)।
সিম সরবরাহে ভ্যাট অব্যাহতির দাবি রেখে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ (অবসরপ্রাপ্ত) বলেন, ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হলে মোবাইল অপারেটররা সবার মাঝে আকর্ষণীয় সুযোগ সুবিধা নিয়ে হাজির হতে পারবে। যা বাংলাদেশের ডিজিটাইজেশন লক্ষ্য অর্জন করার জন্য সহায়ক হবে। সরকারের রাজস্বও বৃদ্ধি পাবে। একই সঙ্গে শিল্প খাতের উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।
বাংলাদেশে যে কয়টি খাত সরকারকে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব দেয়, মোবাইল খাত তার অন্যতম জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষের টেলিযোগাযোগ এবং ইন্টারনেট প্রাপ্তির প্রধান উৎস থেকে শুরু করে ব্যাংকিং, মোবাইল মানি, রাইড শেয়ারিং, ই-কমার্স, শিক্ষা বা ই-কুরিয়ারসহ সব খাতই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মোবাইলের ওপর নির্ভরশীল। তারপরও দেখা যায়, সরকার এ খাতে প্রতি বছর নতুন করে করারোপ করছে।
আরও বলেন, মোবাইল খাতের কর ব্যবস্থাকে যৌক্তিকভাবে বিবেচনা করে এ খাতের প্রবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করা না হলে তার প্রভাব আর সব খাতের ওপর পড়বে। মোবাইল সেবাদাতাদের প্রবৃদ্ধি যত বাড়বে গ্রাহকরা তত উৎকৃষ্ট মানের সেবা পাবে। সরকারও বেশি বেশি করে রাজস্ব পাবে।
সংগঠনের দাবিতে বলা হয়, মোবাইল অপারেটরদের বার্ষিক মোট রাজস্ব প্রাপ্তির ২ শতাংশ ন্যূনতম কর হিসেবে প্রদান করতে হয়। যা আয়কর আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই শিল্প টিকিয়ে রাখার পক্ষে ও সরকার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ করার লক্ষ্যে ন্যূনতম কর অপসারণ করার দাবি রাখেন।
আরও বলা হয়, দেশে সাধারণ করপোরেট করহার অতালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ২০ থেকে ২২ দশমিক ৫ শতাংশ। অথচ জরুরি সেবা হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ মোবাইল খাতের জন্য উচ্চহারে করপোরেট কর দিতে হয়। স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত মোবাইল অপারেটরদের ক্ষেত্রে করের হার ৪০ শতাংশ ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ৪৫ শতাংশ। এ কারণে করারোপের ক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটরদের পৃথক শ্রেণিভুক্ত না করে অন্যান্য কোম্পানির সারিতে পুনর্বিন্যস্ত করে সেই হারে কর হ্রাস করার দাবি রাখেন।
আলোচনায় নকল ব্যান্ড রোল ও নকল সিগারেট বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের (বিএটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেহজাদ মুনিম বলেন, নকল সিগারেটের কারণে সরকার বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে। এ সিগারেট বন্ধ করা হলে রাজস্ব আরও বাড়বে।
বিজনেস আওয়ার/১২ মার্চ, ২০২৩/এমএজেড