ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএসইসির শাস্তি প্রদানে দ্বৈত নীতি

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • 72

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : এক মাস আগে বিভিন্ন সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের দায়ে সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের মালিকানাধীন ব্রোকারেজ হাউজকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে ১ মাস পরে এসে একই অপরাধে অন্যদের আর্থিক শাস্তি প্রদান করেছে। দুটি কমিশন সভায় এমন দ্বৈত নীতি গ্রহন করেছে কমিশন।

শেয়ারবাজারে সুশাষন প্রতিষ্ঠায় অনিয়মকারীদের বড় বড় আর্থিক শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন এরইমধ্যে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, এই আস্থা ধরে রাখার জন্য সব অপরাধীকে একই নীতিতে বিচার করা দরকার। সবলদের ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি দেখাতে গেলে সেটা ধরে রাখা কঠিন হবে।

কাজী ফিরোজ রশীদ সিকিউরিটিজ : সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি, নিজ প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত প্রতিনিধির নামে বিও হিসাব খোলা, নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মার্জিন দেওয়া, নগদ অ্যাকাউন্টে মার্জিন দেওয়া ও একটি বিও হিসাবে ৫ লাখ টাকার বেশি নগদ গ্রহনের মতো অনিয়ম হয়েছে হাউজটিতে। এসবের মাধ্যমে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ১৯৮৭ এর ৮এ -(১), (২); সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক-ডিলার, স্টক-ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা, ২০০০ এর বিধি ৪(২)(৪); বিএসইসি ডিরেকটিভ নং-এসইসি/সিএমআরআরসিডি/২০০১-৪৩/৩১; সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ১৯৮৭ এর ৮(১)(সিসি)(আই) এবং মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর ৩- (১), (২) ভঙ্গ করা হয়েছে। তবে পরবর্তীতে তারা আইন ভঙ্গের বিষয়সমূহ পরিপালন করেছে এবং ভবিষ্যতে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গ না করা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এসব আইন লংঘনের দায়ে গত ২৯ জুলাই বিএসইসির ৭৩৩তম কমিশন সভায় কাজী ফিরোজ রশিদ সিকিউরিটিজকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। এছাড়া একই কমিশন সভায় হাবিবুর রহমান সিকিউরিটিজকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নেয়।

সিলনেট সিকিউরিটিজ : এ হাজটিতে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি, নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে ঋণ সুবিধা দেওয়া, জেড ক্যাটাগরির শেয়ারে মার্জিন প্রদান ও নতুন শেয়ারে মার্জিন দেওয়ার অনিয়ম হয়েছে। এর মাধ্যমে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ১৯৮৭ এর ৮এ -(১), (২); বিএসইসি ডিরেকটিভ নং-এসইসি/সিএমআরআরসিডি/২০০১-৪৩/৩১; বিএসইসি ডিরেকটিভ নং-এসইসি/সিএমআরআরসিডি/২০০১-৪৩/১৬৯ এবং বিএসইসি ডিরেকটিভ নং-এসইসি/সিএমআরআরসিডি/২০০১-৪৩/১৭৭ ভঙ্গ করা হয়েছে। তবে এসব বিষয়ে শুনানী পরবর্তীতে তারা দ্রুতগতিতে আইন ভঙ্গের বিষয়ে সমন্বয় করেছে এবং ভবিষ্যতে সিকিউরিটিজ আইন পরিপালন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এসব অপরাধে গত ৩ সেপ্টেম্বর ৭৩৮তম কমিশন সভায় হাউজটিকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে কমিশন।

মডার্ন সিকিউরিটিজ : এ হাউজটিতে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি, নিজ প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত প্রতিনিধির নামে বিও হিসাব খোলা, নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মার্জিন প্রদান, নগদ অ্যাকাউন্টে মার্জিন প্রদান ও ব্যালেন্স না থাকার পরেও বিও হিসাব থেকে টাকা পরিশোধের অনিয়ম হয়েছে। এসবের মাধ্যমে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ১৯৮৭ এর ৮এ -(১), (২); বিএসইসি ডিরেকটিভ নং-এসইসি/সিএমআরআরসিডি/২০০১-৪৩/৩১; মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর ৩- (১), (২) এবং বিধি ১১ এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক-ডিলার, স্টক-ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা, ২০০০ এর দ্বিতীয় তফসিলের আচরণবিধি ১ ভঙ্গ করা হয়েছে। তাদেরকে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি সমন্বয়ের জন্য মৌখিকভাবে ২ মাসের সময় দেওয়া হলেও ব্যর্থ হয়।

এসব সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের দায়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর ৭৩৮তম কমিশন সভায় হাউজটিকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/০৬ সেপ্টেম্বর. ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বিএসইসির শাস্তি প্রদানে দ্বৈত নীতি

পোস্ট হয়েছে : ১০:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : এক মাস আগে বিভিন্ন সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের দায়ে সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের মালিকানাধীন ব্রোকারেজ হাউজকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে ১ মাস পরে এসে একই অপরাধে অন্যদের আর্থিক শাস্তি প্রদান করেছে। দুটি কমিশন সভায় এমন দ্বৈত নীতি গ্রহন করেছে কমিশন।

শেয়ারবাজারে সুশাষন প্রতিষ্ঠায় অনিয়মকারীদের বড় বড় আর্থিক শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন এরইমধ্যে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, এই আস্থা ধরে রাখার জন্য সব অপরাধীকে একই নীতিতে বিচার করা দরকার। সবলদের ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি দেখাতে গেলে সেটা ধরে রাখা কঠিন হবে।

কাজী ফিরোজ রশীদ সিকিউরিটিজ : সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি, নিজ প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত প্রতিনিধির নামে বিও হিসাব খোলা, নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মার্জিন দেওয়া, নগদ অ্যাকাউন্টে মার্জিন দেওয়া ও একটি বিও হিসাবে ৫ লাখ টাকার বেশি নগদ গ্রহনের মতো অনিয়ম হয়েছে হাউজটিতে। এসবের মাধ্যমে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ১৯৮৭ এর ৮এ -(১), (২); সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক-ডিলার, স্টক-ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা, ২০০০ এর বিধি ৪(২)(৪); বিএসইসি ডিরেকটিভ নং-এসইসি/সিএমআরআরসিডি/২০০১-৪৩/৩১; সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ১৯৮৭ এর ৮(১)(সিসি)(আই) এবং মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর ৩- (১), (২) ভঙ্গ করা হয়েছে। তবে পরবর্তীতে তারা আইন ভঙ্গের বিষয়সমূহ পরিপালন করেছে এবং ভবিষ্যতে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গ না করা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এসব আইন লংঘনের দায়ে গত ২৯ জুলাই বিএসইসির ৭৩৩তম কমিশন সভায় কাজী ফিরোজ রশিদ সিকিউরিটিজকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। এছাড়া একই কমিশন সভায় হাবিবুর রহমান সিকিউরিটিজকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নেয়।

সিলনেট সিকিউরিটিজ : এ হাজটিতে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি, নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে ঋণ সুবিধা দেওয়া, জেড ক্যাটাগরির শেয়ারে মার্জিন প্রদান ও নতুন শেয়ারে মার্জিন দেওয়ার অনিয়ম হয়েছে। এর মাধ্যমে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ১৯৮৭ এর ৮এ -(১), (২); বিএসইসি ডিরেকটিভ নং-এসইসি/সিএমআরআরসিডি/২০০১-৪৩/৩১; বিএসইসি ডিরেকটিভ নং-এসইসি/সিএমআরআরসিডি/২০০১-৪৩/১৬৯ এবং বিএসইসি ডিরেকটিভ নং-এসইসি/সিএমআরআরসিডি/২০০১-৪৩/১৭৭ ভঙ্গ করা হয়েছে। তবে এসব বিষয়ে শুনানী পরবর্তীতে তারা দ্রুতগতিতে আইন ভঙ্গের বিষয়ে সমন্বয় করেছে এবং ভবিষ্যতে সিকিউরিটিজ আইন পরিপালন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এসব অপরাধে গত ৩ সেপ্টেম্বর ৭৩৮তম কমিশন সভায় হাউজটিকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে কমিশন।

মডার্ন সিকিউরিটিজ : এ হাউজটিতে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি, নিজ প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত প্রতিনিধির নামে বিও হিসাব খোলা, নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মার্জিন প্রদান, নগদ অ্যাকাউন্টে মার্জিন প্রদান ও ব্যালেন্স না থাকার পরেও বিও হিসাব থেকে টাকা পরিশোধের অনিয়ম হয়েছে। এসবের মাধ্যমে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ১৯৮৭ এর ৮এ -(১), (২); বিএসইসি ডিরেকটিভ নং-এসইসি/সিএমআরআরসিডি/২০০১-৪৩/৩১; মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর ৩- (১), (২) এবং বিধি ১১ এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক-ডিলার, স্টক-ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা, ২০০০ এর দ্বিতীয় তফসিলের আচরণবিধি ১ ভঙ্গ করা হয়েছে। তাদেরকে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি সমন্বয়ের জন্য মৌখিকভাবে ২ মাসের সময় দেওয়া হলেও ব্যর্থ হয়।

এসব সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের দায়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর ৭৩৮তম কমিশন সভায় হাউজটিকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/০৬ সেপ্টেম্বর. ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: