ঢাকা , রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মেহেরপুরে দুই ভাই হত্যায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড

  • পোস্ট হয়েছে : ০২:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ এপ্রিল ২০২৩
  • 72

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা কাজিপুর গ্রামে আপন দুই ভাই রফিকুল ও আবুজেল হত্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২ এপ্রিল) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপুতি কুমার বিশ্বাস এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের কিয়ামত আলীর ছেলে হালিম, একই গ্রামের আছের হালসানার ছেলে আতিয়ার, আব্দুল জলিলের ছেলে জালাল উদ্দিন, নজির আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম, দবির উদ্দিনের ছেলে শরিফ, নবীর উদ্দিনের ছেলে দবির উদ্দিন, আফেল উদ্দিন ওরফে আফেল সরদারের ছেলে আজিজুল হক, দাবির উদ্দিনের ছেলে ফরিদ, এবং মুনসারের ছেলে মনি। তাদের মধ্যে জালাল উদ্দীন পলাতক।

অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় মামলার অপর পাঁচ আসামি আরিফ, রাজিব, আলমেস, হারুন ও ফারুককে বেকসুর খালাস দেন আদালত।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১২ সালের ৫ জুন কাজিপুর এলাকায় ফেনসিডিলের একটি বড় চালান ধরা পড়ে। ফেনসিডিল ধরিয়ে দেওয়ায় একই গ্রামের কিয়ামুদ্দীনের ছেলে আবুজেল (৩৫) ও রফিকুল ইসলামের (৪০) হাত রয়েছে এমন অভিযোগ তোলা হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০১২ সালের ১৫ জুন রাতে বিষয়টি মীমাংসা করবে বলে দুই ভাইকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেন আসামিরা। পরদিন সকালে কাজিপুর গ্রামের মণ্ডল পাড়ার ভারতীয় সীমান্ত পিলার ১৪৫ নং/এস-৬ এর কাছ থেকে বাংলাদেশ সীমানার ভেতরে ৭০-৭৫১ দক্ষিণে লালটুর মরিচ ক্ষেত থেকে তাদের দুই ভাইয়ের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে দুই সহোদর হত্যার ঘটনায় নিহতদের বোন জরিনা বেগম বাদী হয়ে ৩০২/৩৪ ধারায় গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

যার মামলা নম্বর ১। জি আর কেস নম্বর ৪৩৩/১২। দায়রা নম্বর ১১/২০১৫। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাংনী থানার সেই সময়ের উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষ করে মোট ১৪ আসামির নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়। শুনানি ও সাক্ষ্যে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় নয় আসামিকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় বাকি পাঁচজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

মামলাটির রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত পিপি কাজী শহিদুল হক।

আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আতাউল হক, এ কে এম শফিকুল আলম এবং কামরুল হাসান।

মামলার রায় ঘোষণার পর অতিরিক্ত পিপি কাজী শহিদুল হক বলেন, এটা মেহেরপুরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রায়। এ রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে আবার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলো।

মামলার বাদী জরিনা বেগম সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আদালতের এ রায় অনতিবিলম্বে কার্যকরের দাবি জানাই।

এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম বলেন, রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব।

রায় শেষে আসামিদের মেহেরপুর জেলা কারাগারে পেরণ করা হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/২এপ্রিল, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

মেহেরপুরে দুই ভাই হত্যায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড

পোস্ট হয়েছে : ০২:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ এপ্রিল ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা কাজিপুর গ্রামে আপন দুই ভাই রফিকুল ও আবুজেল হত্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২ এপ্রিল) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপুতি কুমার বিশ্বাস এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের কিয়ামত আলীর ছেলে হালিম, একই গ্রামের আছের হালসানার ছেলে আতিয়ার, আব্দুল জলিলের ছেলে জালাল উদ্দিন, নজির আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম, দবির উদ্দিনের ছেলে শরিফ, নবীর উদ্দিনের ছেলে দবির উদ্দিন, আফেল উদ্দিন ওরফে আফেল সরদারের ছেলে আজিজুল হক, দাবির উদ্দিনের ছেলে ফরিদ, এবং মুনসারের ছেলে মনি। তাদের মধ্যে জালাল উদ্দীন পলাতক।

অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় মামলার অপর পাঁচ আসামি আরিফ, রাজিব, আলমেস, হারুন ও ফারুককে বেকসুর খালাস দেন আদালত।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১২ সালের ৫ জুন কাজিপুর এলাকায় ফেনসিডিলের একটি বড় চালান ধরা পড়ে। ফেনসিডিল ধরিয়ে দেওয়ায় একই গ্রামের কিয়ামুদ্দীনের ছেলে আবুজেল (৩৫) ও রফিকুল ইসলামের (৪০) হাত রয়েছে এমন অভিযোগ তোলা হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০১২ সালের ১৫ জুন রাতে বিষয়টি মীমাংসা করবে বলে দুই ভাইকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেন আসামিরা। পরদিন সকালে কাজিপুর গ্রামের মণ্ডল পাড়ার ভারতীয় সীমান্ত পিলার ১৪৫ নং/এস-৬ এর কাছ থেকে বাংলাদেশ সীমানার ভেতরে ৭০-৭৫১ দক্ষিণে লালটুর মরিচ ক্ষেত থেকে তাদের দুই ভাইয়ের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে দুই সহোদর হত্যার ঘটনায় নিহতদের বোন জরিনা বেগম বাদী হয়ে ৩০২/৩৪ ধারায় গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

যার মামলা নম্বর ১। জি আর কেস নম্বর ৪৩৩/১২। দায়রা নম্বর ১১/২০১৫। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাংনী থানার সেই সময়ের উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষ করে মোট ১৪ আসামির নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়। শুনানি ও সাক্ষ্যে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় নয় আসামিকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় বাকি পাঁচজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

মামলাটির রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত পিপি কাজী শহিদুল হক।

আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আতাউল হক, এ কে এম শফিকুল আলম এবং কামরুল হাসান।

মামলার রায় ঘোষণার পর অতিরিক্ত পিপি কাজী শহিদুল হক বলেন, এটা মেহেরপুরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রায়। এ রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে আবার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলো।

মামলার বাদী জরিনা বেগম সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আদালতের এ রায় অনতিবিলম্বে কার্যকরের দাবি জানাই।

এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম বলেন, রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব।

রায় শেষে আসামিদের মেহেরপুর জেলা কারাগারে পেরণ করা হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/২এপ্রিল, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: