ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাত মাস পর প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পালে হাওয়া

  • পোস্ট হয়েছে : ০৯:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ এপ্রিল ২০২৩
  • 41

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ডলারের চাহিদা মেটানোর অন্যতম উৎস প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পালে হাওয়া লেগেছে। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর যে চাপ তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে কমে আসছে।

রমজান মাস উপলক্ষে মানুষের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা বেড়ে যায়, পরিবার-পরিজনের বাড়তি ব্যয়ের কথা মাথায় রেখে রোজায় বেশি বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এ ধারাবাহিকতায় সদ্য সমাপ্ত মার্চ মাসে প্রবাসীরা ২০১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। যা গত সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে সর্বশেষ ২ বিলিয়ন বা দুইশ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছিল গত বছরের আগস্টে। ওই মাসে আসে ২০৩ কোটি (২.০৩ বিলিয়ন) ডলার।

রোববার (২ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, পুরো মার্চ মাসে বৈধপথে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার রে‌মিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় (প্র‌তি ডলার ১০৭ টাকা ধরে) যার পরিমাণ ২১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। রেমিট্যান্সের এই পরিমাণ আগের মাসের চেয়ে ৪৫ কোটি ৭২ লাখ ডলার বেশি। ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলার।

এছাড়া আগের বছরের (২০২২ সালের) মার্চের তুলনায় রেমিট্যান্স বেড়েছে ৮ দশ‌মিক ৪৯ শতাংশ বা ১৫ কো‌টি ৮০ লাখ ডলার। গত বছরের মার্চে প্রবাসী আয় ছিল ১৮৫ কোটি ৯৭ লাখ ডলার।

সদ্য সমাপ্ত মার্চ মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৩ কোটি ৪৬ লাখ মার্কিন ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪ কোটি ৫০ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৭৩ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৫ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

রেমিট্যান্স বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সর্বশেষ সেবার বিনিময়ে দেশে রেমিট্যান্স আয় আনতে ফরম সি পূরণ করার শর্ত শিথিল করেছে। পাশাপাশি সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের ঘোষণা ছাড়াই ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা দেওয়া, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করার পাশাপাশি অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ন অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা এবং রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা হয়েছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম (জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত) ৯ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৫২৯ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে গত বছরের তুলনায় ৭৪ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স বেশি এসেছে।

বিদায়ী ২০২১-২০২২ অর্থবছরে দেশে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।

বিজনেস আওয়ার/৩ এপ্রিল, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সাত মাস পর প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পালে হাওয়া

পোস্ট হয়েছে : ০৯:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ এপ্রিল ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ডলারের চাহিদা মেটানোর অন্যতম উৎস প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পালে হাওয়া লেগেছে। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর যে চাপ তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে কমে আসছে।

রমজান মাস উপলক্ষে মানুষের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা বেড়ে যায়, পরিবার-পরিজনের বাড়তি ব্যয়ের কথা মাথায় রেখে রোজায় বেশি বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এ ধারাবাহিকতায় সদ্য সমাপ্ত মার্চ মাসে প্রবাসীরা ২০১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। যা গত সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে সর্বশেষ ২ বিলিয়ন বা দুইশ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছিল গত বছরের আগস্টে। ওই মাসে আসে ২০৩ কোটি (২.০৩ বিলিয়ন) ডলার।

রোববার (২ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, পুরো মার্চ মাসে বৈধপথে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার রে‌মিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় (প্র‌তি ডলার ১০৭ টাকা ধরে) যার পরিমাণ ২১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। রেমিট্যান্সের এই পরিমাণ আগের মাসের চেয়ে ৪৫ কোটি ৭২ লাখ ডলার বেশি। ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলার।

এছাড়া আগের বছরের (২০২২ সালের) মার্চের তুলনায় রেমিট্যান্স বেড়েছে ৮ দশ‌মিক ৪৯ শতাংশ বা ১৫ কো‌টি ৮০ লাখ ডলার। গত বছরের মার্চে প্রবাসী আয় ছিল ১৮৫ কোটি ৯৭ লাখ ডলার।

সদ্য সমাপ্ত মার্চ মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৩ কোটি ৪৬ লাখ মার্কিন ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪ কোটি ৫০ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৭৩ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৫ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

রেমিট্যান্স বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সর্বশেষ সেবার বিনিময়ে দেশে রেমিট্যান্স আয় আনতে ফরম সি পূরণ করার শর্ত শিথিল করেছে। পাশাপাশি সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের ঘোষণা ছাড়াই ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা দেওয়া, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করার পাশাপাশি অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ন অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা এবং রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা হয়েছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম (জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত) ৯ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৫২৯ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে গত বছরের তুলনায় ৭৪ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স বেশি এসেছে।

বিদায়ী ২০২১-২০২২ অর্থবছরে দেশে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।

বিজনেস আওয়ার/৩ এপ্রিল, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: