ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৮ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা

  • পোস্ট হয়েছে : ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৩
  • 36

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ডলার সংকট মোকাবিলায় নানাধরনের আমদানি পণ্যে লাগাম টানলেও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বাণিজ্য ঘাটতি। এ কারণে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। আবার জরুরি পণ্য আমদানিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার খরচ করায় টান পড়েছে রির্জাভেও।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ১ হাজার ৩৮২ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় ডলার প্রতি ১০৫ টাকা ধরে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৪৫ হাজার ১১০ কোটি টাকা। ফলে প্রতি মাসে গড়ে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ১৮ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা।

বুধবার (৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে মোট ৪ হাজার ৮৭৯ কোটি ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয়েছে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ কম। আগের অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে ৫ হাজার ৪৩৭ কোটি ডলারের বিভিন্ন পণ্য আমদানি করেছিল বাংলাদেশ।

অন্যদিকে, আমদানির বিপরীতে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রফতানি হয়েছে ৩ হাজার ৪৯৬ কোটি ডলারের পণ্য। যা এর আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। গত বছর একই সময়ে ৩ হাজার ১৯৪ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছিল। এদিকে ডিসেম্বর শেষে দেশে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ১ হাজার ২৩০ কোটি ডলার। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসেই বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ১৫২ কোটি ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এলসি খোলা নিয়ে নানা পদক্ষেপের কারণে বাণিজ্য ঘাটতি কিছুটা কমেছে। বিশেষ করে অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করায় আমদানি ও রফতানির ব্যবধান কিছুটা কমেছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। একই সময়ে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ঘাটতিও ৪৩৮ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। যা দেশীয় মুদ্রায় ৪৫ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ফেব্রুয়ারি শেষে সেবা খাতে দেশের আয় ৫৮৩ কোটি ডলার। অন্যদিকে এ খাতে ব্যয় ৮৩৯ কোটি ডলার। এতে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৫৫ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২৪২ কোটি ডলার।

এছাড়া, সামগ্রিক লেনদেনেও বড় ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। ফেব্রুয়ারি শেষে সামগ্রিক লেনদেনের (ঋণাত্মক) অংক দাঁড়িয়েছে ৭৯৪ কোটি ডলারে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে (ঋণাত্মক) ২২২ কোটি ডলারের ঘাটতি ছিল।

তবে আলোচ্য সময়ে দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে। এই আট মাসে এফডিআই এসেছে ৩৫০ কোটি ডলার। যা এর আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১১ দশমিক ৯১ শতাংশ বেশি। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ৩১৩ কোটি ডলারের বিনিয়োগ এসেছিল।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতিতে পড়ে বাংলাদেশ। প্রায় চার বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি নিয়ে শেষ হয়েছিল ওই বছর। তার আগে ৯ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলারের বড় উদ্বৃত্ত নিয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষ হয়েছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে উদ্বৃত্ত ছিল ৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার।

বিজনেস আওয়ার/৬এপ্রিল, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

৮ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা

পোস্ট হয়েছে : ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ডলার সংকট মোকাবিলায় নানাধরনের আমদানি পণ্যে লাগাম টানলেও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বাণিজ্য ঘাটতি। এ কারণে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। আবার জরুরি পণ্য আমদানিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার খরচ করায় টান পড়েছে রির্জাভেও।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ১ হাজার ৩৮২ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় ডলার প্রতি ১০৫ টাকা ধরে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৪৫ হাজার ১১০ কোটি টাকা। ফলে প্রতি মাসে গড়ে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ১৮ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা।

বুধবার (৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে মোট ৪ হাজার ৮৭৯ কোটি ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয়েছে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ কম। আগের অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে ৫ হাজার ৪৩৭ কোটি ডলারের বিভিন্ন পণ্য আমদানি করেছিল বাংলাদেশ।

অন্যদিকে, আমদানির বিপরীতে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রফতানি হয়েছে ৩ হাজার ৪৯৬ কোটি ডলারের পণ্য। যা এর আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। গত বছর একই সময়ে ৩ হাজার ১৯৪ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছিল। এদিকে ডিসেম্বর শেষে দেশে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ১ হাজার ২৩০ কোটি ডলার। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসেই বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ১৫২ কোটি ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এলসি খোলা নিয়ে নানা পদক্ষেপের কারণে বাণিজ্য ঘাটতি কিছুটা কমেছে। বিশেষ করে অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করায় আমদানি ও রফতানির ব্যবধান কিছুটা কমেছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। একই সময়ে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ঘাটতিও ৪৩৮ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। যা দেশীয় মুদ্রায় ৪৫ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ফেব্রুয়ারি শেষে সেবা খাতে দেশের আয় ৫৮৩ কোটি ডলার। অন্যদিকে এ খাতে ব্যয় ৮৩৯ কোটি ডলার। এতে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৫৫ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২৪২ কোটি ডলার।

এছাড়া, সামগ্রিক লেনদেনেও বড় ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। ফেব্রুয়ারি শেষে সামগ্রিক লেনদেনের (ঋণাত্মক) অংক দাঁড়িয়েছে ৭৯৪ কোটি ডলারে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে (ঋণাত্মক) ২২২ কোটি ডলারের ঘাটতি ছিল।

তবে আলোচ্য সময়ে দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে। এই আট মাসে এফডিআই এসেছে ৩৫০ কোটি ডলার। যা এর আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১১ দশমিক ৯১ শতাংশ বেশি। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ৩১৩ কোটি ডলারের বিনিয়োগ এসেছিল।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতিতে পড়ে বাংলাদেশ। প্রায় চার বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি নিয়ে শেষ হয়েছিল ওই বছর। তার আগে ৯ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলারের বড় উদ্বৃত্ত নিয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষ হয়েছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে উদ্বৃত্ত ছিল ৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার।

বিজনেস আওয়ার/৬এপ্রিল, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: