বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ফরিদপুরে অভিনব পদ্ধতিতে সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতি করতে ডাকাত দল বাহুবলী সিনেমায় ব্যবহৃত অস্ত্রের মতো অস্ত্র ব্যবহার করত। এ ঘটনায় দলের এক সদস্যকে সেই অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১০ এপ্রিল) রাত আড়াইটার দিকে ভাঙ্গার নাসিরাবাদ ইউনিয়নের দুয়াই গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ডাকাতি করে নেওয়া ১০ হাজার পাঁচশ টাকাও জব্দ করা হয়। গ্রেফতার হওয়া ওই ব্যক্তির নাম জুয়েল তালুকদার (২৫)।
পুলিশ সোমবার ভোরে ওই এলাকায় তল্লাশি করে ডাকাতির জন্য ব্যবহৃত ভারতীয় জনপ্রিয় সিনেমা বাহুবলীর নায়কের অস্ত্রের মতো দেখতে স্টিলের ৩টি কুড়াল, দুটি বড় রামদা, দুটি দা, একটি বড় আকৃতির ছুড়ি, একটি করাত জব্দ করে।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে জুয়েল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর আদালতের নির্দেশে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান।
পুলিশ সুপার জানান, গত সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে একটি ট্রাকে করে কয়েকজন ব্যবসায়ী গরু কেনার জন্য চরদুয়াইর গ্রাম থেকে একটি পিকআপে করে খুলনার এক হাটের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তাদের কাছে ৯ লাখ ৭৬ হাজার ৪৮০ টাকা ছিল। তারা সদরপুর-তারাইল সড়ক ধরে নাসিরাবাদ ইউনিয়নের রায়হান ডাক্তারের বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছালে ১২ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল সড়কে গাছ ফেলে তাদের যাওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। পরে ডাকাত দলের সদস্যরা ব্যবসায়ীদের পিটুনি দিয়ে তাদের কাছ থেকে গরু কেনার টাকা নিয়ে নেন।
সোমবার দিবাগত রাতে এ ব্যাপারে সদরপুরের চরমানাই গ্রামের মিরাজ মাতুব্বর (৬২) বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় ডাকাতির অভিযোগে একটি মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, তিনি ও তার সঙ্গী ওমর শেখ (৬০), আলামিন বেপারি (৩৫), আমিরুল বেপারি (৩০), মোমিন সরদার (৫৭), ফরিদ মুন্সী (৪০) পিকআপে করে খুলনা যাওয়ার পথে ওই ডাকাত দলের খপ্পড়ে পড়েন। তারা সড়কে গাছ কেটে পিকআপটি থামায়। পরে ১২/১৩ জনের একটি ডাকাত দল দেশীয় অস্ত্রের মুখে তাদের কাছ থেকে ৯ লাখ ৯৭ হাজার ৪৮০ টাকা এবং ৬টি মোবাইল ফোন ডাকাতি করে।
এজাহারে আরও বলা হয়, ডাকাতরা অনুমানিক ১০/১৫ মিনিট ধরে ডাকাতি করে চলে যায়। পরে তারা ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করলে মুসল্লিরা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয়।
পুলিশ সুপার বলেন, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ভাঙ্গার নাসিরাবাদ ইউনিয়নের দুয়াই গ্রামের বাসিন্দা জুয়েল তালুকদারকে গত সোমবার রাত আড়াইটার দিকে গ্রেফতার করা হয়।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানার পরিদর্শক মো. জুয়েল হোসেন বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে গ্রেফতার হওয়া জুয়েল তালুকদার ফরিদপুর জজ আদালতের বিচারক শফিকুল ইসলামের কাছে এ ডাকাতির ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদালতের নির্দেশে তাকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের সধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোহাম্মদ ইমদাদ হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপস) শেখ মো. আব্দুল্লাহ বিন কালাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) মো. হেলাল উদ্দিন ভূইয়া, ভাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিজনেস আওয়ার/১২ এপ্রিল, ২০২৩/এএইচএ