ঢাকা , শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকাকে পরিকল্পিত বাসযোগ্য নগরী করতে চাই : তাপস

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ জুন ২০২৩
  • 3

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: রাজধানী ঢাকাকে পরিকল্পিত বাসযোগ্য ও উন্নত সিটিতে পরিণত করার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

রোববার (৪ জুন) রাজধানীর শ্যামপুরে অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য নির্মিত গুদাম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।

মেয়র তাপস বলেন, আমরা চাই ঢাকাকে পরিকল্পিত বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে। পুরান ঢাকার রাসায়নিক দ্রব্যগুলো স্থানান্তর করতে এই গুদাম ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমি আশা করব রাসায়নিক দ্রব্য নিয়ে দ্রুত নীতিমালা প্রণয়ন হবে। ব্যবসায়ীদের মতামত এখানে নিতে হবে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে একটি নীতিমালা দ্রুত করতে হবে। রাসায়নিক গুদামগুলো দ্রুত স্থানান্তর করতে হবে।

তিনি বলেন, একটি সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই রাসায়নিক পণ্যর সব দোকানের মালামালগুলো দ্রুত স্থানান্তর করতে হবে। তবে এই নীতিমালা যেন ব্যবসায়ী বান্ধব হয়। এখানে তারা গুদামে আসবেন সেক্ষেত্রে কিন্তু তাদের এখানেও বিনিয়োগ করতে হবে। তারা যেন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তারা যেন উৎসাহী হোন। কিছুটা ছাড় দিয়ে হলেও যেন তাদের এখানে আসতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। এমনভাবে যেন কোনও নীতিমালা করা না হয়, যেন ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হোন। এখন এখানে ৫৪টি গুদামের মালামাল স্থানান্তর করা যাবে। পরবর্তী সময়ে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। এছাড়া আরও যেখানে স্থানান্তর করা হবে সেখানেও যেন ব্যবসায়ীরা উৎসাহের সঙ্গে স্থানান্তর হয়, সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরান ঢাকার অনেক ঐতিহ্য আছে, ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা আছে। এসবকে ঘিরেই পুরান ঢাকার অংশকে একটি পর্যটন নগরীর রূপ দিতে পারি। আমরা একটি ঐতিহ্যের বলয় তৈরি করতে চাই। এখানে যেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা এসে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরতে পারেন, পাশাপাশি দেখতে পারে পুরান ঢাকাকে। তারা পুরান ঢাকার ঐতিহ্যকে উপভোগ করবেন, খাওয়া দাওয়া করবেন। এতে ঢাকার বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা আরও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। সেই লক্ষ্যে পুরান ঢাকার রাসায়নিক কারখানাগুলো শ্যামপুরের গুদামে স্থানান্তর হয়ে যাবে। আমরা চাই অগ্নিকাণ্ডমুক্ত, দুর্যোগ ও দুর্ঘটনামুক্ত একটি নগরী। এই লক্ষ্যে আমরা শ্যামপুর গুদামে এসব স্থানান্তর করার কাজ করছি।’

২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে রাসায়নিক পদার্থের গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হন। পরবর্তী সময়ে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। সেদিনের ঘটনায় ৭৮ জন প্রাণ হারান। এ দুটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় সরকারের টনক নড়ে। ভবিষ্যতে রাসায়নিক কারখানা ও গুদামে বিস্ফোরণজনিত দুর্ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে লক্ষ্যে সরকার পুরান ঢাকায় অবস্থিত রাসায়নিক পদার্থ-মজুদের গুদাম ও কারখানাগুলো নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ ২০১৯ সালের মার্চে শুরু হয়। চার বছরের মাথায় সম্প্রতি এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ৫৪টি গুদাম এবং তিনতলা বিশিষ্ট দুটি অফিস ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/০৪ জুন, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ঢাকাকে পরিকল্পিত বাসযোগ্য নগরী করতে চাই : তাপস

পোস্ট হয়েছে : ০৪:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ জুন ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: রাজধানী ঢাকাকে পরিকল্পিত বাসযোগ্য ও উন্নত সিটিতে পরিণত করার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

রোববার (৪ জুন) রাজধানীর শ্যামপুরে অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য নির্মিত গুদাম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।

মেয়র তাপস বলেন, আমরা চাই ঢাকাকে পরিকল্পিত বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে। পুরান ঢাকার রাসায়নিক দ্রব্যগুলো স্থানান্তর করতে এই গুদাম ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমি আশা করব রাসায়নিক দ্রব্য নিয়ে দ্রুত নীতিমালা প্রণয়ন হবে। ব্যবসায়ীদের মতামত এখানে নিতে হবে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে একটি নীতিমালা দ্রুত করতে হবে। রাসায়নিক গুদামগুলো দ্রুত স্থানান্তর করতে হবে।

তিনি বলেন, একটি সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই রাসায়নিক পণ্যর সব দোকানের মালামালগুলো দ্রুত স্থানান্তর করতে হবে। তবে এই নীতিমালা যেন ব্যবসায়ী বান্ধব হয়। এখানে তারা গুদামে আসবেন সেক্ষেত্রে কিন্তু তাদের এখানেও বিনিয়োগ করতে হবে। তারা যেন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তারা যেন উৎসাহী হোন। কিছুটা ছাড় দিয়ে হলেও যেন তাদের এখানে আসতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। এমনভাবে যেন কোনও নীতিমালা করা না হয়, যেন ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হোন। এখন এখানে ৫৪টি গুদামের মালামাল স্থানান্তর করা যাবে। পরবর্তী সময়ে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। এছাড়া আরও যেখানে স্থানান্তর করা হবে সেখানেও যেন ব্যবসায়ীরা উৎসাহের সঙ্গে স্থানান্তর হয়, সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরান ঢাকার অনেক ঐতিহ্য আছে, ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা আছে। এসবকে ঘিরেই পুরান ঢাকার অংশকে একটি পর্যটন নগরীর রূপ দিতে পারি। আমরা একটি ঐতিহ্যের বলয় তৈরি করতে চাই। এখানে যেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা এসে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরতে পারেন, পাশাপাশি দেখতে পারে পুরান ঢাকাকে। তারা পুরান ঢাকার ঐতিহ্যকে উপভোগ করবেন, খাওয়া দাওয়া করবেন। এতে ঢাকার বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা আরও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। সেই লক্ষ্যে পুরান ঢাকার রাসায়নিক কারখানাগুলো শ্যামপুরের গুদামে স্থানান্তর হয়ে যাবে। আমরা চাই অগ্নিকাণ্ডমুক্ত, দুর্যোগ ও দুর্ঘটনামুক্ত একটি নগরী। এই লক্ষ্যে আমরা শ্যামপুর গুদামে এসব স্থানান্তর করার কাজ করছি।’

২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে রাসায়নিক পদার্থের গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হন। পরবর্তী সময়ে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। সেদিনের ঘটনায় ৭৮ জন প্রাণ হারান। এ দুটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় সরকারের টনক নড়ে। ভবিষ্যতে রাসায়নিক কারখানা ও গুদামে বিস্ফোরণজনিত দুর্ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে লক্ষ্যে সরকার পুরান ঢাকায় অবস্থিত রাসায়নিক পদার্থ-মজুদের গুদাম ও কারখানাগুলো নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ ২০১৯ সালের মার্চে শুরু হয়। চার বছরের মাথায় সম্প্রতি এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ৫৪টি গুদাম এবং তিনতলা বিশিষ্ট দুটি অফিস ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/০৪ জুন, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: