ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বনানীতে সরকারি জমিতে পাঁচ তারকা হোটেল: সুমনের রিট

  • পোস্ট হয়েছে : ১২:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ জুন ২০২৩
  • 62

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: রাজধানীর বনানীতে সিটি করপোরেশনের ৬০ কাঠা জায়গায় ২৮ তলা ভবন বানিয়ে পাঁচ তারকা হোটেল শেরাটন তৈরির ঘটনা অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার সচিব, রাজউক, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

রোববার (১১ জুন) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এ রিট দায়ের করেন।

গত ১ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে ‘সরকারি জমিতে পাঁচ তারকা হোটেল’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিট আবেদনটি দায়ের করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানীতে সিটি করপোরেশনের ৬০ কাঠা জায়গায় ২৮ তলা ভবন বানিয়ে একাই ভোগদখল করছে বোরাক রিয়েল এস্টেট প্রাইভেট লিমিটেড। সেখানে তৈরি করা হয়েছে পাঁচ তারকা হোটেল।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) কর্তৃপক্ষ বলছে, বোরাক রিয়েল এস্টেটের সঙ্গে চুক্তি ছিল ১৪ তলা ভবন নির্মাণের। যার ৩০ শতাংশ পাবে সিটি করপোরেশন, বাকিটা বোরাক। সিটি করপোরেশনের হিসাব অনুযায়ী তাদের ভাগের সম্পদের মূল্য প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা। কিন্তু সে হিস্যা গত এক দশকেও বুঝে পায়নি সিটি করপোরেশন। উল্টা চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে ১৪ তলার স্থলে ২৮ তলা ভবন নির্মাণ করে পুরোটাই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে বোরাক।

অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সময়ে বোরাক রিয়াল এস্টেটের সঙ্গে করপোরেশনের চুক্তি হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, বনানী কাঁচাবাজারের পশ্চিম পাশে ও বনানী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের উত্তর পাশে সিটি করপোরেশনের জমিতে ‘বনানী সুপার মার্কেট কাম হাউজিং কমপ্লেক্স’ নির্মাণ করা হবে। ভবনের ৩০ শতাংশ পাবে সিটি করপোরেশন, ৭০ শতাংশ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। অসম এই চুক্তি নিয়ে তখন ব্যাপক সমালোচনা হয়। সংসদীয় কমিটিতেও আলোচনা হয়।

ঢাকা উত্তর সিটির সম্পত্তি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বনানীর ৪৪ কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ে করপোরেশনের ৬০ কাঠা জমি রয়েছে। এর মধ্যে ৪৪ কাঠা জমিতে আগেই করপোরেশনের তিনতলা মার্কেট ছিল। মার্কেটের সামনে প্রধান সড়ক লাগোয়া প্রায় ১৬ কাঠা খালি জমি ছিল। দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল কেবল ৪৪ কাঠা জমিতে ভবন নির্মাণের জন্য। সামনের ১৬ কাঠা থাকবে খোলা জায়গা। নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দিতে পরে সামনের খালি ১৬ কাঠা জমিও প্রকল্পে যুক্ত করে ৬০ কাঠা জমিতে ১৪ তলা ভবন নির্মাণের চুক্তি করা হয়।

কিন্তু নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোরাক সামনের ১৬ কাঠা খালি জমিতে ২৮ তলা ভবন নির্মাণ করে। চুক্তি ভঙ্গ করে ২৮ তলা ভবন না করতে বোরাককে চিঠি দিয়ে কাজ করতে বারণ করে সিটি করপোরেশন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, করপোরেশন কেবল চিঠি দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেছে। কাজ বন্ধের কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

বিজনেস আওয়ার/১১ জুন, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বনানীতে সরকারি জমিতে পাঁচ তারকা হোটেল: সুমনের রিট

পোস্ট হয়েছে : ১২:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ জুন ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: রাজধানীর বনানীতে সিটি করপোরেশনের ৬০ কাঠা জায়গায় ২৮ তলা ভবন বানিয়ে পাঁচ তারকা হোটেল শেরাটন তৈরির ঘটনা অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার সচিব, রাজউক, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

রোববার (১১ জুন) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এ রিট দায়ের করেন।

গত ১ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে ‘সরকারি জমিতে পাঁচ তারকা হোটেল’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিট আবেদনটি দায়ের করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানীতে সিটি করপোরেশনের ৬০ কাঠা জায়গায় ২৮ তলা ভবন বানিয়ে একাই ভোগদখল করছে বোরাক রিয়েল এস্টেট প্রাইভেট লিমিটেড। সেখানে তৈরি করা হয়েছে পাঁচ তারকা হোটেল।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) কর্তৃপক্ষ বলছে, বোরাক রিয়েল এস্টেটের সঙ্গে চুক্তি ছিল ১৪ তলা ভবন নির্মাণের। যার ৩০ শতাংশ পাবে সিটি করপোরেশন, বাকিটা বোরাক। সিটি করপোরেশনের হিসাব অনুযায়ী তাদের ভাগের সম্পদের মূল্য প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা। কিন্তু সে হিস্যা গত এক দশকেও বুঝে পায়নি সিটি করপোরেশন। উল্টা চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে ১৪ তলার স্থলে ২৮ তলা ভবন নির্মাণ করে পুরোটাই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে বোরাক।

অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সময়ে বোরাক রিয়াল এস্টেটের সঙ্গে করপোরেশনের চুক্তি হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, বনানী কাঁচাবাজারের পশ্চিম পাশে ও বনানী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের উত্তর পাশে সিটি করপোরেশনের জমিতে ‘বনানী সুপার মার্কেট কাম হাউজিং কমপ্লেক্স’ নির্মাণ করা হবে। ভবনের ৩০ শতাংশ পাবে সিটি করপোরেশন, ৭০ শতাংশ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। অসম এই চুক্তি নিয়ে তখন ব্যাপক সমালোচনা হয়। সংসদীয় কমিটিতেও আলোচনা হয়।

ঢাকা উত্তর সিটির সম্পত্তি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বনানীর ৪৪ কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ে করপোরেশনের ৬০ কাঠা জমি রয়েছে। এর মধ্যে ৪৪ কাঠা জমিতে আগেই করপোরেশনের তিনতলা মার্কেট ছিল। মার্কেটের সামনে প্রধান সড়ক লাগোয়া প্রায় ১৬ কাঠা খালি জমি ছিল। দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল কেবল ৪৪ কাঠা জমিতে ভবন নির্মাণের জন্য। সামনের ১৬ কাঠা থাকবে খোলা জায়গা। নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দিতে পরে সামনের খালি ১৬ কাঠা জমিও প্রকল্পে যুক্ত করে ৬০ কাঠা জমিতে ১৪ তলা ভবন নির্মাণের চুক্তি করা হয়।

কিন্তু নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোরাক সামনের ১৬ কাঠা খালি জমিতে ২৮ তলা ভবন নির্মাণ করে। চুক্তি ভঙ্গ করে ২৮ তলা ভবন না করতে বোরাককে চিঠি দিয়ে কাজ করতে বারণ করে সিটি করপোরেশন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, করপোরেশন কেবল চিঠি দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেছে। কাজ বন্ধের কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

বিজনেস আওয়ার/১১ জুন, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: