ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুষ্টু হিজড়াকে খুন করেন প্রেমিক রাকিব

  • পোস্ট হয়েছে : ০৭:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ জুলাই ২০২৩
  • 67

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় সোহেল রানা ওরফে দুষ্টু (২৫) নামে তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) একজনকে হত্যা করেছে তারই প্রেমিক রাকিব (২৩)।

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) গ্রেফতারের পর রাকিব ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি কসবা উপজেলার গুনিনপাড়া এলাকার মো. নাছিরের ছেলে।

গত শনিবার (১ জুলাই) রাতে আখাউড়া-কসবা আঞ্চলিক সড়কের গোপীনাথপুর এলাকা থেকে সোহেল রানা ওরফে দুষ্টুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দুষ্টু দিনাজপুরের চিরিরবন্দর এলাকার দক্ষিণ সুকদেবপুরের ছাদের আলীর সন্তান।

কসবা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন জানান, সোহেল রানা ওরফে দুষ্টু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার মনিয়ন্দ এলাকার নাজমা আক্তারের সন্তান অজান্তা হিজড়াকে গুরু মানতেন। সেই সুবাদে সোহেল রানা ওরফে দুষ্টু কসবা উপজেলায় গোপীনাথপুর থেকে হিজড়া সংগঠনের কাজকর্ম করতেন। আনুমানিক ৭-৮ মাস পূর্বে সোহেল রানা ওরফে দুষ্টুর সাথে অটোরিকশা চালক রাকিবের পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার পর থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে এবং বিভিন্ন সময়ে অটো গাড়ি দিয়ে চলা-ফেরা করতেন। রাকিব মাঝে-মধ্যে দুষ্টুর ভাড়া বাসায় এসে থাকতেন এবং উভয়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়াও হতো বলে জানা যায়।

এ সময় তিনি আরও বলেন, ঈদুল আজহার পরদিন ৩০ জুন রাতে দুষ্টু তার প্রেমিক অটোরিকশা চালক রাকিবকে কল দেন। ফোন কল পেয়ে রাকিব অটোরিকশা দিয়ে দুষ্টুকে নিয়ে বাসা থেকে বের হন। কিছুদূর যাওয়ার পর গোপীনাথপুর সেকান্দারপাড়ায় আসার পর দুষ্টু তার প্রেমিক রাকিবকে জানায়, সে তার বাড়ি দিনাজপুরে চলে যাবে। এই কথা শুনে রাকিব ক্ষিপ্ত হয়ে দুষ্টুকে গালাগাল করে। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে একটি গাছের ঢাল দিয়ে দুষ্টুর মাথায় রাকিব আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে একটি ইটের ভাঙা অংশ দিয়ে আবারও দুষ্টুর মাথায় আঘাত করে রাকিব। আঘাতপ্রাপ্ত দুষ্টুকে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে রাকিব পালিয়ে যান। একপর্যায়ে রাকিব ফোন দিয়ে দুষ্টুর গুরুর মাকে ফোন দিয়ে জানায় লাশ গোপীনাথপুর সেকান্দারপাড়ায় পড়ে আছে। পরে ফোন বন্ধ করে রাকিব পালিয়ে যায়। কসবা থানা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে রাকিবকে গ্রেফতার করেন।

ওসি জানান, গ্রেফারের পর রাকিব মঙ্গলবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রাকিবুল হাসানের কাছে ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/০৫ জুলাই ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

দুষ্টু হিজড়াকে খুন করেন প্রেমিক রাকিব

পোস্ট হয়েছে : ০৭:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ জুলাই ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় সোহেল রানা ওরফে দুষ্টু (২৫) নামে তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) একজনকে হত্যা করেছে তারই প্রেমিক রাকিব (২৩)।

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) গ্রেফতারের পর রাকিব ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি কসবা উপজেলার গুনিনপাড়া এলাকার মো. নাছিরের ছেলে।

গত শনিবার (১ জুলাই) রাতে আখাউড়া-কসবা আঞ্চলিক সড়কের গোপীনাথপুর এলাকা থেকে সোহেল রানা ওরফে দুষ্টুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দুষ্টু দিনাজপুরের চিরিরবন্দর এলাকার দক্ষিণ সুকদেবপুরের ছাদের আলীর সন্তান।

কসবা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন জানান, সোহেল রানা ওরফে দুষ্টু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার মনিয়ন্দ এলাকার নাজমা আক্তারের সন্তান অজান্তা হিজড়াকে গুরু মানতেন। সেই সুবাদে সোহেল রানা ওরফে দুষ্টু কসবা উপজেলায় গোপীনাথপুর থেকে হিজড়া সংগঠনের কাজকর্ম করতেন। আনুমানিক ৭-৮ মাস পূর্বে সোহেল রানা ওরফে দুষ্টুর সাথে অটোরিকশা চালক রাকিবের পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার পর থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে এবং বিভিন্ন সময়ে অটো গাড়ি দিয়ে চলা-ফেরা করতেন। রাকিব মাঝে-মধ্যে দুষ্টুর ভাড়া বাসায় এসে থাকতেন এবং উভয়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়াও হতো বলে জানা যায়।

এ সময় তিনি আরও বলেন, ঈদুল আজহার পরদিন ৩০ জুন রাতে দুষ্টু তার প্রেমিক অটোরিকশা চালক রাকিবকে কল দেন। ফোন কল পেয়ে রাকিব অটোরিকশা দিয়ে দুষ্টুকে নিয়ে বাসা থেকে বের হন। কিছুদূর যাওয়ার পর গোপীনাথপুর সেকান্দারপাড়ায় আসার পর দুষ্টু তার প্রেমিক রাকিবকে জানায়, সে তার বাড়ি দিনাজপুরে চলে যাবে। এই কথা শুনে রাকিব ক্ষিপ্ত হয়ে দুষ্টুকে গালাগাল করে। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে একটি গাছের ঢাল দিয়ে দুষ্টুর মাথায় রাকিব আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে একটি ইটের ভাঙা অংশ দিয়ে আবারও দুষ্টুর মাথায় আঘাত করে রাকিব। আঘাতপ্রাপ্ত দুষ্টুকে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে রাকিব পালিয়ে যান। একপর্যায়ে রাকিব ফোন দিয়ে দুষ্টুর গুরুর মাকে ফোন দিয়ে জানায় লাশ গোপীনাথপুর সেকান্দারপাড়ায় পড়ে আছে। পরে ফোন বন্ধ করে রাকিব পালিয়ে যায়। কসবা থানা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে রাকিবকে গ্রেফতার করেন।

ওসি জানান, গ্রেফারের পর রাকিব মঙ্গলবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রাকিবুল হাসানের কাছে ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/০৫ জুলাই ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: