ঢাকা , সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চমক হারিয়ে স্বাভাবিকে লেনদেন, পতনে মূলধন

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩
  • 36

মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান : চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে (রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার) একটি বাদে বাকী পাঁচ ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। লেনদেনের পরিমাণ আগের সপ্তাহের তুলনায় গেল সপ্তায় বেড়েছে। কোম্পানিরগুলোর শেয়ার দর উত্থানের চেয়ে পতন বেশি হয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৭ হাজার কোটি টাকা।

ঈদের (পবিত্র ঈদুল আযহা) আগে চার কার্যদিবনের মধ্যে তিনদিন (২১, ২২ ও ২৫ জুন) লেনদেনে চমক দেখিয়েছিল সিএসই। গত ২১ জুন (বুধবার) লেনদেন হয়েছিল ৫৩০ কোটি টাকা। পরেরদিন ২২ জুন (বৃহস্পতিবার) লেনদেন ছিল ৩২০ কোটি টাকা। পরের কার্যদিবস ২৫ জুন (রবিবার) লেনদেন ছিল ২৩৫ কোটি টাকা। অবশ্য এর আগের দিনগুলোতে সিএসইর লেনদেন ১৫ থেকে ২২ কোটি টাকার ঘরে গড়াগড়ি করছিল। সেখান থেকে হঠাৎ করে ঈদের আগের তিন কার্যদিবস লেনদেন ৫৩০, ৩২০ ও ২৩৫ কোটি টাকা, এটা রীতিমত চমক। ঈদের পর সেই লেনদেনের চমক নেই।

সিএসইর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পলিচালক মুঠোফোনে বলেন, ঈদের আগে ২১ জুনের (বুধবার) লেনদেন সিএসইর ইতিহাসের সেরা হিসেবে গন্য হয়েছে। এই লেনদেন অতীতের সব রেকর্ডকে হার মানিয়েছে। ২২ জুন বৃহস্পতিবার ৩২০ কোটি টাকা এবং ২৫ জুন ২৩৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। টানা তিনদিন এতো বেশি লেনদেন হওয়ার কারন আমি বলতে পারবো না। এটা বলতে পারবে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

আরও বলেন, বিশেষ কারনে এতো বাড়তি লেনদেন হতে পারে। তবে আমার জানা মতে, সেই ধরনের কোন ঘটনা নেই। তাই তিনদিনের এই লেনদেনের ব্যাখা, আমার কাছে নেই। তবে ঈদের পরের দুই সপ্তার লেনদেন পূর্বের মতো স্বাভাবিক হয়েছে, বলেন ওই পরিচালক।

মূলধন হিসেবে লেনদেন কম প্রসঙ্গে মুঠোফোনে ভিন্ন কথা শুনালেন সিএসইর একাধিক কর্মকর্তা। তারা বলেন, সাড়ে ৭ লাখ কোটি টাকার মূলধনের বাজারে ১৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা লেনদেন, চিন্তাই করা যায় না। এতো কম লেনদেন কারন হিসেবে আমরা পতন বাজারকে দায়ী করে আসছি। আসলে এটা মোটেও ঠিক না। সিএসইর মূলধন সাড়ে ৭ কোটি টাকা হিসেবে লেনদেন ৫শ কোটি টাকার বেশি হওয়ার চাহিদা রয়েছে। কিন্তু সেখানে লেনদেন হচ্ছে সামান্য। এটা সত্যিই দু:খজনক।

সিএসইর সূত্র মতে, বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস গত বৃহস্পতিবার মূলধন দাঁড়ায় ৭ লাখ ৫১ হাজার ৭৮২ কোটি ২৩ লাখ টাকায়। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস সোমবার বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছিল ৭ লাখ ৫৯ হাজার ১৪ কোটি ৮ লাখ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৭ হাজার ২৩১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৮৪ কোটি ৯৩ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ১ কোটি ২১ লাখ টাকা। তালিকাভুক্ত ৩১৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৭০টির, দর কমেছে ৯৫টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪৯টি কোম্পানির।

সিএসইর সূত্র মতে, গেল সপ্তায় একটি বাদে বাকী পাঁচ ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান সূচক সিএএসপিআই দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৭৩১ দশমিক ৮৮ পয়েন্টে। সিএসই ৫০ সূচক দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, সিএসসিএক্স সূচক দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, সিএসআই সূচক দশমিক ১৮ শতাংশ এবং সিএসই এসএমইএক্স ১৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ১ হাজার ৩১৬ দশমিক শূন্য ৬ পয়েন্টে, ১১ হাজার ১৮৮ দশমিক ২৮ পয়েন্টে, ১ হাজার ১৭৯ দশমিক ৬৩ পয়েন্টে এবং ২ হাজার ৩২১ দশমিক ৪১ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই৩০ সূচক দশমিক ৩১ শতাংশ কমে দাঁড়ায় যথাক্রমে ১৩ হাজার ৩৫৬ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্টে।

গেল সপ্তায় বি ক্যাটাগরির ৫০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার টপটেন লেনদেনে অবস্থান করেছে। এছাড়া এ ক্যাটাগরির ৪০ শতাংশ এবং জেড ক্যাটাগরির ১০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার টপটেন লেনদেনে অবস্থান করেছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বি ক্যাটাগরির জেনারেশন নেক্সটের শেয়ার। একাই ৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে।

এছাড়া ফু-ওয়াং ফুডসের ৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা, লুব-লেফের ৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা, এমারেল্ড অয়েলের ৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, ইন্ট্রাকোর ৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, ফু-ওয়াং সিরামিকের ৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, অলিম্পিক এক্সেসরিজের ২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, বেক্সিমকোর ২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেনের ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা এবং সেন্ট্রাল ফার্মার ২ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/১৫ জুলাই, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

চমক হারিয়ে স্বাভাবিকে লেনদেন, পতনে মূলধন

পোস্ট হয়েছে : ০১:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩

মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান : চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে (রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার) একটি বাদে বাকী পাঁচ ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। লেনদেনের পরিমাণ আগের সপ্তাহের তুলনায় গেল সপ্তায় বেড়েছে। কোম্পানিরগুলোর শেয়ার দর উত্থানের চেয়ে পতন বেশি হয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৭ হাজার কোটি টাকা।

ঈদের (পবিত্র ঈদুল আযহা) আগে চার কার্যদিবনের মধ্যে তিনদিন (২১, ২২ ও ২৫ জুন) লেনদেনে চমক দেখিয়েছিল সিএসই। গত ২১ জুন (বুধবার) লেনদেন হয়েছিল ৫৩০ কোটি টাকা। পরেরদিন ২২ জুন (বৃহস্পতিবার) লেনদেন ছিল ৩২০ কোটি টাকা। পরের কার্যদিবস ২৫ জুন (রবিবার) লেনদেন ছিল ২৩৫ কোটি টাকা। অবশ্য এর আগের দিনগুলোতে সিএসইর লেনদেন ১৫ থেকে ২২ কোটি টাকার ঘরে গড়াগড়ি করছিল। সেখান থেকে হঠাৎ করে ঈদের আগের তিন কার্যদিবস লেনদেন ৫৩০, ৩২০ ও ২৩৫ কোটি টাকা, এটা রীতিমত চমক। ঈদের পর সেই লেনদেনের চমক নেই।

সিএসইর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পলিচালক মুঠোফোনে বলেন, ঈদের আগে ২১ জুনের (বুধবার) লেনদেন সিএসইর ইতিহাসের সেরা হিসেবে গন্য হয়েছে। এই লেনদেন অতীতের সব রেকর্ডকে হার মানিয়েছে। ২২ জুন বৃহস্পতিবার ৩২০ কোটি টাকা এবং ২৫ জুন ২৩৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। টানা তিনদিন এতো বেশি লেনদেন হওয়ার কারন আমি বলতে পারবো না। এটা বলতে পারবে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

আরও বলেন, বিশেষ কারনে এতো বাড়তি লেনদেন হতে পারে। তবে আমার জানা মতে, সেই ধরনের কোন ঘটনা নেই। তাই তিনদিনের এই লেনদেনের ব্যাখা, আমার কাছে নেই। তবে ঈদের পরের দুই সপ্তার লেনদেন পূর্বের মতো স্বাভাবিক হয়েছে, বলেন ওই পরিচালক।

মূলধন হিসেবে লেনদেন কম প্রসঙ্গে মুঠোফোনে ভিন্ন কথা শুনালেন সিএসইর একাধিক কর্মকর্তা। তারা বলেন, সাড়ে ৭ লাখ কোটি টাকার মূলধনের বাজারে ১৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা লেনদেন, চিন্তাই করা যায় না। এতো কম লেনদেন কারন হিসেবে আমরা পতন বাজারকে দায়ী করে আসছি। আসলে এটা মোটেও ঠিক না। সিএসইর মূলধন সাড়ে ৭ কোটি টাকা হিসেবে লেনদেন ৫শ কোটি টাকার বেশি হওয়ার চাহিদা রয়েছে। কিন্তু সেখানে লেনদেন হচ্ছে সামান্য। এটা সত্যিই দু:খজনক।

সিএসইর সূত্র মতে, বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস গত বৃহস্পতিবার মূলধন দাঁড়ায় ৭ লাখ ৫১ হাজার ৭৮২ কোটি ২৩ লাখ টাকায়। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস সোমবার বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছিল ৭ লাখ ৫৯ হাজার ১৪ কোটি ৮ লাখ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৭ হাজার ২৩১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৮৪ কোটি ৯৩ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ১ কোটি ২১ লাখ টাকা। তালিকাভুক্ত ৩১৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৭০টির, দর কমেছে ৯৫টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪৯টি কোম্পানির।

সিএসইর সূত্র মতে, গেল সপ্তায় একটি বাদে বাকী পাঁচ ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান সূচক সিএএসপিআই দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৭৩১ দশমিক ৮৮ পয়েন্টে। সিএসই ৫০ সূচক দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, সিএসসিএক্স সূচক দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, সিএসআই সূচক দশমিক ১৮ শতাংশ এবং সিএসই এসএমইএক্স ১৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ১ হাজার ৩১৬ দশমিক শূন্য ৬ পয়েন্টে, ১১ হাজার ১৮৮ দশমিক ২৮ পয়েন্টে, ১ হাজার ১৭৯ দশমিক ৬৩ পয়েন্টে এবং ২ হাজার ৩২১ দশমিক ৪১ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই৩০ সূচক দশমিক ৩১ শতাংশ কমে দাঁড়ায় যথাক্রমে ১৩ হাজার ৩৫৬ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্টে।

গেল সপ্তায় বি ক্যাটাগরির ৫০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার টপটেন লেনদেনে অবস্থান করেছে। এছাড়া এ ক্যাটাগরির ৪০ শতাংশ এবং জেড ক্যাটাগরির ১০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার টপটেন লেনদেনে অবস্থান করেছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বি ক্যাটাগরির জেনারেশন নেক্সটের শেয়ার। একাই ৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে।

এছাড়া ফু-ওয়াং ফুডসের ৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা, লুব-লেফের ৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা, এমারেল্ড অয়েলের ৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, ইন্ট্রাকোর ৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, ফু-ওয়াং সিরামিকের ৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, অলিম্পিক এক্সেসরিজের ২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, বেক্সিমকোর ২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেনের ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা এবং সেন্ট্রাল ফার্মার ২ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/১৫ জুলাই, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: