বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : সরকারি সাধারণ ছুটি বাড়ানো না হলেও শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরও বাড়ানো হতে পারে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোপূর্বে সেপ্টেম্বরের আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে না দেয়ার ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছেন। সেটাকেই তারা যথাযথ দিকনির্দেশনা বলে মনে করছেন।
শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যে না ফেলতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হলেও অভিভাবকরা তাদের সন্তানকে পাঠাবেন না। তাই সব কিছু চিন্তা-ভাবনা করে ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার আগেই ছুটি বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হবে।
তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম বিদ্যমান অবস্থায় রাখা এবং ছাত্রছাত্রীদের বাসায় রেখে লেখাপড়ার ব্যবস্থা বা বিকল্প পাঠদানের চিন্তাভাবনা চলছে। ২৮ মে’র (বৃহস্পতিবার) মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ৪ জুনের আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পরবর্তী পরিকল্পনা জানানো হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে আমাদের এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তাদের ভালোর জন্য পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা চলছে। এ সপ্তাহের মধ্যে পরবর্তী ঘোষণা আসবে।
রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনই খুলে দেয়া হবে ঠিক হবে না। কেননা এখনও সংক্রমণ ও মৃত্যু পরিস্থিতি ঊর্ধ্বমুখী। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে বড় নিবুর্দ্ধিতা ও আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার মতো এখনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি বরং আরও কত দিন ছুটি বাড়ানো হবে সেটি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথাটি আগে চিন্তা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আগে জীবন, এরপর লেখাপড়া।
তিনি বলেন, ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন। সেটাই বাস্তবসম্মত দিকনির্দেশনা বলে আমরা মনে করছি। আগামী ৫ জুন পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি আছে। এর আগেই আমরা এ নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাব। এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও আমাদের আলোচনা করতে হবে।
করোনাভাইরাসের যে সংক্রমণ পরিস্থিতি তাতে জুন মাসটা মনে হচ্ছে টার্নিং পয়েন্ট। ঈদের ছুটির কারণে সংক্রমণে কী প্রভাব পড়বে সেটাও দেখতে হবে।
তবে এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলে নানা ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরামর্শ দিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী।
তিনি বলেন, করোনা বিস্তার কমে গেলে যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়, তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলবে। কারণ করোনাভাইরাসের এই সমস্যা দ্রুতই নির্মূল হবে না। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আগেই নানা ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে।
বিজনেস আওয়ার/২৭ মে, ২০২০/এ