বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : অবণ্টিত লভ্যাংশ শেয়ারবাজারের অনেক শূন্যতা দূর করবে জানিয়ে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) চেয়ারম্যান এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে অবণ্টিত লভ্যাংশের তহবিলটি সুরক্ষা দেওয়া। পাশাপাশি তহবিলের অর্থ ব্যাপক ব্যবহার করে শেয়ারবাজার শক্তিশালী অবস্থা তৈরি করা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএসইসির মাল্টিপারপাস হলে সিএমএসএফ কর্তৃক আয়োজিত সিএমএসএফের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কাঠামো অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। সন্মানিত অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।
এছাড়া অতিথি হিসেবে ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। সেমিনারে সিএমএসএফের রিস্ক ম্যানেজম্যান্ট কমিটি (আরএমসি) চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ আমিনুল করিমের স্বাগত বক্তব্যের পর বিওজি এবং আরএমসি সদস্য ডা. শেখ তানজিলা দীপ্তির “সিএমএসএফের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কাঠামো” শিরোনামে একটি মূল প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন।
সিএমএসএফের যে অনুপ্রেরনা, তা দুই ব্যক্তির কাছ থেকে পেয়েছি মন্তব্য করে নজিবুর রহমান বলেন, একজন হলো আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশ স্বাধীনের সময় তিনি যে কতো ঝুঁকি নিয়েছেন এবং সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করেছেন, তার পরিচয় আমরা পাই। আমাদের এতো সুন্দর করে দেশে স্বাধীনতা অর্জন এনে দিয়েছেন। স্বাধীনের পর মিত্রবাহিনী দেশ থেকে প্রত্যাবত করেছেন, এসব গুরুত্বপূর্ন বিষয় আমাদের মনে করিয়ে দেন। এরপর সব সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের অনুপ্রাণিত করেন। সব সময় এগিয়ে যাওয়ার তার অদম্য চেতনা, আমি তার মূখ সচিব হিসেবে দুই বছর কাছ থেকে দেখিছি। এই দুই ব্যক্তি কাছ থেকে আমি ঝুঁকি ব্যবস্থপনার সাহস পাই।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি অবণ্টিত লভ্যাংশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফান্ড জানিয়ে তিনি বলেন, শেয়ারবাজার বহুদিনের চাহিদা এই ফান্ড। অধিকার ফলশ্রুতিতে এই ফান্ডটা এসেছে। এটি শেয়ারবজারের অনেক শূন্যতা দূর করবে। এটা গঠনে আমরা কাজ করি। এক বছরেই আমরা গঠন করতে পেরেছি। যদিও এ ধরনের ফান্ড গঠনে অনেক সময় নিয়ে ধীরে ধীরে করে। কিন্তু আমরা অল্প সময়ে, খুব দ্রুত এটা করতে পেরেছি। এখন ফান্ড থেকে ডিভিডেন্ড আসা শুরু করেছে। সামনে এই পরিমান আরো বাড়বে। ফান্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে অবণ্টিত লভ্যাংশের তহবিলটি সুরক্ষা দেওয়া। পাশাপাশি এই তহবিল অর্থ ব্যপক ব্যবহার করে শেয়ারবাজার শক্তিশালী অবস্থা তৈরি করা।
পিছিয়ে পড়া বা প্রতিবন্ধী বিনিয়োগকারীদের নিয়ে কাজ করছি জানিয়ে মো. নজিবুর রহমান বলেন, কিভাবে তাদের সহায়তা করা যায়, তার নিয়ে আলোচনা চলছে। একই সাথে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সক্ষমতা বাড়ানো ওপরে জোর দিয়েছে সিএমএসএফ। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের উন্নয়ন বেশ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। বিনিয়োগ ক্ষতি পুষিয়ে আনতে বা বিনিয়োগ সুরক্ষায় বিমা পলিসির বিষয় ভাবছি। বিএসইসির অনুমতি নিয়ে সাধারন বিমার সাথে আলোচনা করেছি। সামনে আরো করবো। সেবা আরো আধুনিক লক্ষে আমরা আইটির ওপরে জোর দিয়েছি।
সেমিনারে নজিবুর রহমান উপস্থিত সকলকে তাদের মূল্যবান মতামত এবং দিকনির্দেশনার জন্য ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি স্টেকহোল্ডারদের প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ফ্রেমওয়ার্ক নিয়মিতভাবে সুচারু রুপে বাস্তবায়ন করার আশ্বাস দেন। এসময় বিশিষ্ট অতিথিরা সকলেই পুঁজিবাজারে ঝুঁকির কারণগুলির বোঝাপড়া বাড়ানোর জন্য সিএমএসএফের নিষ্ঠা গবেষণা কার্যক্রম এবং অটল প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন। একই সাথে বাংলাদেশের আরও সমৃদ্ধ শেয়ারবাজারের কামনা করেন।
বিজনেস আওয়ার/ ২১ জুলাই,২০২৩/এমএজেড