ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জমি-নগদ টাকা দিয়েও ইতালি যাওয়া হলো না আরমানের

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ২০ লাখ টাকা দামের জমি ও নগদ ১০ লাখ টাকা দিয়েও স্বপ্নের দেশ ইতালি যাওয়া হলো না কিশোরগঞ্জের ভৈরবের যুবক আরমানের (৩৫)। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সাগরপথে ট্রলারে চড়ে ইতালি যাওয়ার পথে অগ্নিকাণ্ডে তার মৃত্যু হয়। আরমান উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শুম্ভুপুর আলুকান্দা এলাকার রেনু মিয়ার ছেলে।

ওই দিন সকালে দালাল জসিম ফোন করে জানায় লিবিয়ার ত্রিপলী থেকে সাগরপথে বোর্ডে চড়ে ইতালি যাওয়ার পথে অগ্নিকাণ্ডে আরমানের মৃত্যু হয়। এ খবরে আরমানের পরিবারে চলছে আহাজারি। দিশেহারা ৩ সন্তানসহ স্ত্রী নার্গিস বেগম।

সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শম্ভুপুর গ্রামের আলুকান্দা এলাকার আরমান মিয়া মালয়েশিয়া থেকে ৫ বছর পর দেশে ফিরেন। দেশে কিছু দিন থাকার পর এক এলাকার জসিমের সঙ্গে ২০ লাখ টাকার দামের জমি ও নগদ ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে লিবিয়া থেকে সাগর পথে স্বপ্নের দেশ ইতালিতে পাঠানো চুক্তি হয়। সেই অনুযায়ী সম্পূর্ণ টাকা ও জমি জসিমের নামে দলিল করে দেন আরমান। এরপর গত ৭ নভেম্বর বাংলাদেশে থেকে প্রথমে সৌদি আরবে যান। সেখানে একদিন থাকার পর মিশরে পাঠানো হয় তারপর সেখান থেকে লিবিয়ায় যান আরমান। লিবিয়ায় কিছুদিন থাকার পর গত ১৬ নভেম্বর ত্রিপলী সাগরপাড় থেকে বিশেষ বোর্ডের মাধ্যমে ইতালি পাঠানো হবে বলে জানান দালাল। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে যুবক আরমান গেম করে অবস্থান করে। কিন্তু লিবিয়া থেকে সাগর পথে ইতালি যাওয়া সেই স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি তার।

আরমানের ছোট ভাই নয়ন মিয়া জানান, কিছুদিন হলো ছোট ভাই আরমান ৫ বছর পর মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেন। লিবিয়া থেকে সাগর পথে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে একই গ্রামের জসিম মিয়ার কাছে নগদ ১০ লাখ টাকা ও ২০ লাখ টাকা দামের ৩ গণ্ডা জমি দলিল করে দেই আমরা। এরপর লিবিয়া থেকে ট্রলারে ইতালি নেওয়ার কথা বলেন জসিম মিয়া। কিন্তু আজ ১৮ নভেম্বর মঙ্গলবার সকালে তিনি ফোনে জানান আমার ভাই আর জীবিত নেই। সে নাকি ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন।

এ বিষয়ে আরমানের বড় ভাই নুরে আলম জানান, কিছুদিন আগে জসিমের বাড়ির রাজা মিয়ার সঙ্গে আমাদের একটি পারিবারিক ঝামেলা হয় এ সূত্র ধরে আমার ভাইকে ইচ্ছাকৃতভাবে লিবিয়া থেকে ইতালি না পাঠিয়ে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। এ নির্মম হত্যার ঘটনায় জড়িতদের সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে ভৈরব থানার তদন্ত কর্মকর্তা আবু তালেব জানান, আমরা জানতে পেরেছি ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে আরমান নামের এক যুবক লিবিয়ায় মৃত্যু হয়েছে। ভুক্তভোগীর পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজনেস আওয়ার/ ২০ নভেম্বর / কাওছার

ট্যাগস

জমি-নগদ টাকা দিয়েও ইতালি যাওয়া হলো না আরমানের

আপডেট সময় ১৬ মিনিট আগে

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ২০ লাখ টাকা দামের জমি ও নগদ ১০ লাখ টাকা দিয়েও স্বপ্নের দেশ ইতালি যাওয়া হলো না কিশোরগঞ্জের ভৈরবের যুবক আরমানের (৩৫)। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সাগরপথে ট্রলারে চড়ে ইতালি যাওয়ার পথে অগ্নিকাণ্ডে তার মৃত্যু হয়। আরমান উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শুম্ভুপুর আলুকান্দা এলাকার রেনু মিয়ার ছেলে।

ওই দিন সকালে দালাল জসিম ফোন করে জানায় লিবিয়ার ত্রিপলী থেকে সাগরপথে বোর্ডে চড়ে ইতালি যাওয়ার পথে অগ্নিকাণ্ডে আরমানের মৃত্যু হয়। এ খবরে আরমানের পরিবারে চলছে আহাজারি। দিশেহারা ৩ সন্তানসহ স্ত্রী নার্গিস বেগম।

সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শম্ভুপুর গ্রামের আলুকান্দা এলাকার আরমান মিয়া মালয়েশিয়া থেকে ৫ বছর পর দেশে ফিরেন। দেশে কিছু দিন থাকার পর এক এলাকার জসিমের সঙ্গে ২০ লাখ টাকার দামের জমি ও নগদ ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে লিবিয়া থেকে সাগর পথে স্বপ্নের দেশ ইতালিতে পাঠানো চুক্তি হয়। সেই অনুযায়ী সম্পূর্ণ টাকা ও জমি জসিমের নামে দলিল করে দেন আরমান। এরপর গত ৭ নভেম্বর বাংলাদেশে থেকে প্রথমে সৌদি আরবে যান। সেখানে একদিন থাকার পর মিশরে পাঠানো হয় তারপর সেখান থেকে লিবিয়ায় যান আরমান। লিবিয়ায় কিছুদিন থাকার পর গত ১৬ নভেম্বর ত্রিপলী সাগরপাড় থেকে বিশেষ বোর্ডের মাধ্যমে ইতালি পাঠানো হবে বলে জানান দালাল। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে যুবক আরমান গেম করে অবস্থান করে। কিন্তু লিবিয়া থেকে সাগর পথে ইতালি যাওয়া সেই স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি তার।

আরমানের ছোট ভাই নয়ন মিয়া জানান, কিছুদিন হলো ছোট ভাই আরমান ৫ বছর পর মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেন। লিবিয়া থেকে সাগর পথে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে একই গ্রামের জসিম মিয়ার কাছে নগদ ১০ লাখ টাকা ও ২০ লাখ টাকা দামের ৩ গণ্ডা জমি দলিল করে দেই আমরা। এরপর লিবিয়া থেকে ট্রলারে ইতালি নেওয়ার কথা বলেন জসিম মিয়া। কিন্তু আজ ১৮ নভেম্বর মঙ্গলবার সকালে তিনি ফোনে জানান আমার ভাই আর জীবিত নেই। সে নাকি ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন।

এ বিষয়ে আরমানের বড় ভাই নুরে আলম জানান, কিছুদিন আগে জসিমের বাড়ির রাজা মিয়ার সঙ্গে আমাদের একটি পারিবারিক ঝামেলা হয় এ সূত্র ধরে আমার ভাইকে ইচ্ছাকৃতভাবে লিবিয়া থেকে ইতালি না পাঠিয়ে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। এ নির্মম হত্যার ঘটনায় জড়িতদের সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে ভৈরব থানার তদন্ত কর্মকর্তা আবু তালেব জানান, আমরা জানতে পেরেছি ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে আরমান নামের এক যুবক লিবিয়ায় মৃত্যু হয়েছে। ভুক্তভোগীর পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজনেস আওয়ার/ ২০ নভেম্বর / কাওছার