বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: নিজেকে ইহুদি দাবি করে ইসরায়েলের কাছে নাগরিকত্ব চেয়েছেন হক গ্রুপের চেয়ারম্যান আদম তমিজী হক। ইহুদি হিসেবে নাগরিকত্ব দিয়ে তাকে দ্রুত বাংলাদেশ থেকে উদ্ধারের জন্য ইসরায়েল সরকারের সহযোগিতাও কামনা করেছেন তিনি।

শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে তমিজী হক এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমার নাম আদম। আমার জন্ম ব্রিটেনে। আমার মা একজন অর্ধেক ইহুদি। ইহুদি হিসেবে নাগরিকত্ব দিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে নিয়ে যাক ইসরায়েল।

তমিজী বলেন, আমি ইসরায়েলের কাছে অভিযোগ জানাতে চাই। আমি বর্তমানে বাংলাদেশে। তিন দিন ধরে আমার বাসার পানি ও বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ঘরে খাবারও নেই, স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। দ্রুত আমাদের উদ্ধার করা দরকার।

এ সময় তাকে চেনা শ্মশ্রুমণ্ডিত অবয়ব ছেড়ে নিজের চুল-দাড়িও কামিয়ে ফেলেছেন বলেও দেখা যায়।

প্রসঙ্গত, বিভিন্ন সময় ফেসবুকে মন্তব্য করে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন ব্যবসায়ী আদম তমিজী হক। কখনো পাসপোর্ট ছিঁড়ে করেছেন রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ, আবার কখনো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে করেছেন বাজে মন্তব্য। বিদেশে বসে এসব মন্তব্য করলেও সম্প্রতি তিনি দেশে এসেছেন। এবার তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ও প্রধানমন্ত্রীবিরোধী বক্তব্যের অভিযোগে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। রাজধানীর দক্ষিণখান থানার ওসি মো. সিদ্দিকুর রহমান গত শনিবার মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত বুধবার (১৫ নভেম্বর) মামলাটি করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান নাঈম। এরপর দিনই তাকে গ্রেপ্তারের অভিযান চালায় র‌্যাব। তবে শেষ পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করা না হলেও নজরদারির মধ্যে রয়েছে আদম তমিজী হক।

বৃহিস্পতিবার রাতে তমিজীকে গ্রেপ্তারে তার বাড়িতে অভিযান শুরু করলে ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার হুমকি দেন তিনি। শুক্রবার রাতে আবারও লাইভে এসে নিজেকে ইহুদি দাবি করেন আদম তমিজী হক। তমিজী হকের গ্রেপ্তার অভিযানের বিষয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব সব নিয়ম মেনে আইনের আওতায় আনতে অভিযান চালায়। অভিযানে র্যাব ফোর্সের কর্মকর্তাসহ ম্যাজিস্ট্রেট, ডাক্তারকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অভিযানে।

খন্দকার আল মঈন বলেন, অভিযানের সময়ে তমিজী হক বেশকিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটান। আমরা সব নিয়ম মেনে তাকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করি; কিন্তু তিনি নিজে ছুরি হাতে আত্মহত্যার হুমকি দেন, বাসায় জানালার গ্লাস ভেঙে ফেলেন, ভবন থেকে লাফ দেওয়ার হুমকি দেন। এর পরও যখন আটক করতে যাই, তখন তিনি স্ত্রীকেও ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন। এমনকি কেউ যেন বাসা থেকে বের না হতে পারে, এজন্য বাসার প্রধান ফটক ঝালাই করেন। সার্বিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাকে গ্রেপ্তার করিনি। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। পাশাপাশি তার বাসায় সার্চের ওয়ারেন্ট রয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ