ঢাকা , রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্ষুদ্র শিল্পে ঋণ বিতরণ কমায় কর্মসংস্থানে প্রভাব

  • পোস্ট হয়েছে : ০৭:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৩
  • 5

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শিল্প খাতে ঋণ বিতরণ কমেছে। পাশাপাশি আদায়ের পরিমাণও কমেছে। দেশে এখনো প্রধান কর্মসংস্থান ক্ষুদ্র শিল্প। সেই ক্ষুদ্র শিল্প সংকুচিত হলে কর্মসংস্থান কমে যাওয়ার শঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক মার্চে শিল্পখাতে ঋণ বিতরণ কমেছে ১২ দশমিক ১৬ শতাংশ। ডিসেম্বরে এ খাতে ঋণ বিতরণ করা হয় ১ লাখ ৪৯ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। যা মার্চে এসে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে কমেছে ১৮ হাজার ২০৫ কোটি টাকা।

এদিকে শিল্প খাতে দেওয়া ঋণের বিপরীতে আদায় কমেছে প্রায় ৩৪ শতাংশ। ডিসেম্বরে আদায় হয়েছিলো ১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা যা এ বছর মার্চে এসে দাঁড়ায় ১ লাখ ৪ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকায়।

তথ্যে আরও বলা হয়, শিল্প খাতে দেওয়া ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার হার বেড়েছে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে। ডিসেম্বরে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ ছিলো ৯৩ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা, যা মার্চে এসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৩ কোটি টাকা। ২০২২ সালের শেষে ঋণের বকেয়া স্থিতি ছিলো ৭ লাখ ৩০ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। মার্চ প্রান্তিকে ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে বকেয়া ঋণ দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৫৩ হাজার ৬৯৭ কোটি টাকায়।

করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় এসএমই বা ক্ষুদ্র শিল্প। এ শিল্পের উন্নয়নে বেশ কয়েকবার প্রণোদনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে মার্চ প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ঋণ কমার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে ক্ষুদ্র শিল্পে। আলোচিত এই সময়ে বৃহৎ শিল্পে ঋণ বিতরণ কমেছে আগের তিন মাসের তুলনায় ২৭ শতাংশ। অথচ একই সময়ে এসএমই খাতে ঋণ বিতরণ কমেছে সর্বোচ্চ ৪৮ শতাংশ। এদিকে মাঝারি শিল্পে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ১৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মার্চে বৃহৎ শিল্পখাতে ঋণ বিতরণ করা হয় ১২ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা। যা ডিসেম্বরের তুলনায় ৫ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকা কম। গেল বছরের শেষ প্রান্তিকে এ খাতে ঋণ দেওয়া হয় ১৯ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। ক্ষুদ্র শিল্পে গেল ডিসেম্বরের প্রান্তিকে ঋণ বিতরণ করা হয় ৭ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা। যা চলতি বছর মার্চে কমে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা। তিন মাসের তুলনায় কমেছে ৩ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। তবে ব্যতিক্রম ছিলো মাঝারি শিল্পখাত। এ খাতে চলতি মার্চে বিতরণ করা হয়েছে ২ হাজার ৬০২ কোটি টাকা যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় ৩৩৬ কোটি টাকা বেশি। ডিসেম্বরে এ খাতে ২ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়।

এছাড়া একই সময়ে ঋণ বিতরণের পাশাপাশি ঋণ আদায়ও কমেছে। গেল ডিসেম্বর প্রান্তিকে বৃহৎ শিল্পে ঋণ আদায় হয় ২১ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। যা মার্চে এসে কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা বা ৩৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ। মাঝারি শিল্পে ঋণ আদায় কমেছে ৩১ দশমিক ২৬ শতাংশ। এ খাতে ডিসেম্বরে আদায় হয় ৩ হাজার ৭ কোটি টাকা যা মার্চে কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ৬৭ কোটি টাকায়। ক্ষুদ্র শিল্পখাতে ঋণ আদায় কমেছে সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ। ডিসেম্বরে ক্ষুদ্র শিল্পে ঋণ আদায় হয় ২৫ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা। যা মার্চে আদায় কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকায়।

বিজনেস আওয়ার/১৭ আগস্ট, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ক্ষুদ্র শিল্পে ঋণ বিতরণ কমায় কর্মসংস্থানে প্রভাব

পোস্ট হয়েছে : ০৭:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শিল্প খাতে ঋণ বিতরণ কমেছে। পাশাপাশি আদায়ের পরিমাণও কমেছে। দেশে এখনো প্রধান কর্মসংস্থান ক্ষুদ্র শিল্প। সেই ক্ষুদ্র শিল্প সংকুচিত হলে কর্মসংস্থান কমে যাওয়ার শঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক মার্চে শিল্পখাতে ঋণ বিতরণ কমেছে ১২ দশমিক ১৬ শতাংশ। ডিসেম্বরে এ খাতে ঋণ বিতরণ করা হয় ১ লাখ ৪৯ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। যা মার্চে এসে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে কমেছে ১৮ হাজার ২০৫ কোটি টাকা।

এদিকে শিল্প খাতে দেওয়া ঋণের বিপরীতে আদায় কমেছে প্রায় ৩৪ শতাংশ। ডিসেম্বরে আদায় হয়েছিলো ১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা যা এ বছর মার্চে এসে দাঁড়ায় ১ লাখ ৪ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকায়।

তথ্যে আরও বলা হয়, শিল্প খাতে দেওয়া ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার হার বেড়েছে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে। ডিসেম্বরে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ ছিলো ৯৩ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা, যা মার্চে এসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৩ কোটি টাকা। ২০২২ সালের শেষে ঋণের বকেয়া স্থিতি ছিলো ৭ লাখ ৩০ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। মার্চ প্রান্তিকে ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে বকেয়া ঋণ দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৫৩ হাজার ৬৯৭ কোটি টাকায়।

করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় এসএমই বা ক্ষুদ্র শিল্প। এ শিল্পের উন্নয়নে বেশ কয়েকবার প্রণোদনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে মার্চ প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ঋণ কমার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে ক্ষুদ্র শিল্পে। আলোচিত এই সময়ে বৃহৎ শিল্পে ঋণ বিতরণ কমেছে আগের তিন মাসের তুলনায় ২৭ শতাংশ। অথচ একই সময়ে এসএমই খাতে ঋণ বিতরণ কমেছে সর্বোচ্চ ৪৮ শতাংশ। এদিকে মাঝারি শিল্পে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ১৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মার্চে বৃহৎ শিল্পখাতে ঋণ বিতরণ করা হয় ১২ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা। যা ডিসেম্বরের তুলনায় ৫ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকা কম। গেল বছরের শেষ প্রান্তিকে এ খাতে ঋণ দেওয়া হয় ১৯ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। ক্ষুদ্র শিল্পে গেল ডিসেম্বরের প্রান্তিকে ঋণ বিতরণ করা হয় ৭ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা। যা চলতি বছর মার্চে কমে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা। তিন মাসের তুলনায় কমেছে ৩ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। তবে ব্যতিক্রম ছিলো মাঝারি শিল্পখাত। এ খাতে চলতি মার্চে বিতরণ করা হয়েছে ২ হাজার ৬০২ কোটি টাকা যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় ৩৩৬ কোটি টাকা বেশি। ডিসেম্বরে এ খাতে ২ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়।

এছাড়া একই সময়ে ঋণ বিতরণের পাশাপাশি ঋণ আদায়ও কমেছে। গেল ডিসেম্বর প্রান্তিকে বৃহৎ শিল্পে ঋণ আদায় হয় ২১ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। যা মার্চে এসে কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা বা ৩৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ। মাঝারি শিল্পে ঋণ আদায় কমেছে ৩১ দশমিক ২৬ শতাংশ। এ খাতে ডিসেম্বরে আদায় হয় ৩ হাজার ৭ কোটি টাকা যা মার্চে কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ৬৭ কোটি টাকায়। ক্ষুদ্র শিল্পখাতে ঋণ আদায় কমেছে সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ। ডিসেম্বরে ক্ষুদ্র শিল্পে ঋণ আদায় হয় ২৫ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা। যা মার্চে আদায় কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকায়।

বিজনেস আওয়ার/১৭ আগস্ট, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: