ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদ্মা ব্যাংকের এমডি তারেক রিয়াজের পদত্যাগ

  • পোস্ট হয়েছে : ০৯:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • 2

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক : পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারেক রিয়াজ খান পদত্যাগ করেছেন। ‘ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যগত কারণ’ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। গত রোববার থেকে তিনি ব্যাংকে অনুপস্থিত। ওই দিনই তারেক রিয়াজ পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে জানার জন্য তারেক রিয়াজ খানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। ব্যাংকটির গণসংযোগ বিভাগে যোগাযোগ করেও ব্যাংকটির আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তারেক রিয়াজ খান ২০২২ সালের মার্চে তিন বছরের জন্য পদ্মা ব্যাংকে এমডি হিসেবে যোগ দেন। ফলে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত তার মেয়াদ ছিল। এর আগে তিনি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ডিএমডি ও প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ছিলেন।

গত আগস্টে পদ্মা ব্যাংককে আবার বিশেষ সুবিধা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত নগদ জমা (সিআরআর) বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে ধার্য হওয়া ৫৫ কোটি টাকা জরিমানা পরিশোধে বাড়তি দুই বছরের বেশি সময় দেওয়া হয়েছে পদ্মা ব্যাংককে। এর ফলে আগামী ২০২৮ সালের এপ্রিলের মধ্যে তাদের এই জরিমানা শোধ করতে হবে। আগে এই সময়সীমা ছিল ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এর আগে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পদ্মা ব্যাংকের ৮৯ কোটি টাকা জরিমানা মওকুফ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিধিবদ্ধ জমা (এসএলআর) রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় এই জরিমানা করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই দিনই কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রজ্ঞাপন জারি করে পদ্মা ব্যাংককে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৩৩ ধারা মেনে চলা থেকে অব্যাহতি দেয়। এই ধারার অধীনে এসএলআর বজায় রাখা সব ব্যাংকের জন্য আবশ্যক এবং এতে ব্যর্থ হওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সিআরআর ও এসএলআর বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০১৯ সালের নভেম্বরে ১৪৪ কোটি টাকার জরিমানা মওকুফের আবেদন করে পদ্মা ব্যাংক।

অনিয়ম-জালিয়াতির কারণে সাবেক ফারমার্স ব্যাংক আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে চারটি সরকারি ব্যাংক ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ব্যাংকটির বড় অংশ শেয়ার অধিগ্রহণ করে। পাশাপাশি পদ্মা ব্যাংকে আমানতও রাখে। ব্যাংকের চেয়ারম্যান হন চৌধুরী নাফিজ সরাফত। এর ফলে ব্যাংকটির স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু হয় এবং এর নাম পরিবর্তন করে পদ্মা ব্যাংক করা হয়। তবে আমানতকারীরা পুরো আস্থা ফিরে পাননি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকটিকে নানা সুবিধা নিতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও বাছবিচার ছাড়া সরকারের মৌখিক নির্দেশে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বলে সূত্রগুলো জানাচ্ছে।

বিজনেস আওয়ার/০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

পদ্মা ব্যাংকের এমডি তারেক রিয়াজের পদত্যাগ

পোস্ট হয়েছে : ০৯:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক : পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারেক রিয়াজ খান পদত্যাগ করেছেন। ‘ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যগত কারণ’ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। গত রোববার থেকে তিনি ব্যাংকে অনুপস্থিত। ওই দিনই তারেক রিয়াজ পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে জানার জন্য তারেক রিয়াজ খানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। ব্যাংকটির গণসংযোগ বিভাগে যোগাযোগ করেও ব্যাংকটির আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তারেক রিয়াজ খান ২০২২ সালের মার্চে তিন বছরের জন্য পদ্মা ব্যাংকে এমডি হিসেবে যোগ দেন। ফলে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত তার মেয়াদ ছিল। এর আগে তিনি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ডিএমডি ও প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ছিলেন।

গত আগস্টে পদ্মা ব্যাংককে আবার বিশেষ সুবিধা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত নগদ জমা (সিআরআর) বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে ধার্য হওয়া ৫৫ কোটি টাকা জরিমানা পরিশোধে বাড়তি দুই বছরের বেশি সময় দেওয়া হয়েছে পদ্মা ব্যাংককে। এর ফলে আগামী ২০২৮ সালের এপ্রিলের মধ্যে তাদের এই জরিমানা শোধ করতে হবে। আগে এই সময়সীমা ছিল ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এর আগে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পদ্মা ব্যাংকের ৮৯ কোটি টাকা জরিমানা মওকুফ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিধিবদ্ধ জমা (এসএলআর) রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় এই জরিমানা করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই দিনই কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রজ্ঞাপন জারি করে পদ্মা ব্যাংককে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৩৩ ধারা মেনে চলা থেকে অব্যাহতি দেয়। এই ধারার অধীনে এসএলআর বজায় রাখা সব ব্যাংকের জন্য আবশ্যক এবং এতে ব্যর্থ হওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সিআরআর ও এসএলআর বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০১৯ সালের নভেম্বরে ১৪৪ কোটি টাকার জরিমানা মওকুফের আবেদন করে পদ্মা ব্যাংক।

অনিয়ম-জালিয়াতির কারণে সাবেক ফারমার্স ব্যাংক আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে চারটি সরকারি ব্যাংক ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ব্যাংকটির বড় অংশ শেয়ার অধিগ্রহণ করে। পাশাপাশি পদ্মা ব্যাংকে আমানতও রাখে। ব্যাংকের চেয়ারম্যান হন চৌধুরী নাফিজ সরাফত। এর ফলে ব্যাংকটির স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু হয় এবং এর নাম পরিবর্তন করে পদ্মা ব্যাংক করা হয়। তবে আমানতকারীরা পুরো আস্থা ফিরে পাননি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকটিকে নানা সুবিধা নিতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও বাছবিচার ছাড়া সরকারের মৌখিক নির্দেশে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বলে সূত্রগুলো জানাচ্ছে।

বিজনেস আওয়ার/০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: