ঢাকা , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিএসইতে কাকের মাংস খেলো কাক

  • পোস্ট হয়েছে : ০৯:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • 1

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : প্রবাদে আছে কাকের মাংস খায় না কাক। কিন্তু দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এক পরিচালক আরেক পরিচালকের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে, তার পদ খেয়ে ফেলেছেন। শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এমনটিই ঘটেছে ডিএসইর জনপ্রিয় পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমনের সঙ্গে। আর এ কাজ করা হয়েছে বিতর্কিত এক শেয়ারহোল্ডার পরিচালকের নেতৃত্বে।

মিনহাজ মান্নান ইমন আইনী জটিলতার কারনে কারাগারে ছিলেন প্রায় ৪ মাস। যে কারনে ডিএসইর পর্ষদে ৩ মাসের বেশি অনুপস্থিত থাকার ক্ষেত্রে ছুটি নেওয়ার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তা পূরন করতে পারেননি। আর এই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়েছে ডিএসইর এক শেয়ারহোল্ডার পরিচালক। যে নিজে ক্যান্সারের চিকিৎসার কারনে ৬ মাস অনুপস্থিত থাকলেও মিনহাজ মান্নান ইমন তার পরিচালক পদ শূন্য করার জন্য কোন পদক্ষেপ নেননি। যিনি শুধুমাত্র মৌখিকভাবে পর্ষদকে জানিয়েছিলেন।

রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারের অভিযোগ এনে গত মে মাসের শুরুতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১, ২৫(১)(খ), ৩১ ও ৩৫ ধারায় র‌্যাব ঢাকার রমনা থানায় ১১জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছিল। ওই মামলায় গত ৬ মে মিনহাজ মান্নানকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। ওইদিন রাতেই তাকে রমনা থানায় হস্তান্তর করে। পরদিন আদালতে তুললে, বিচারক জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপরে গত ৭ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে মুক্ত হয়েছেন।

ডিএসইর পর্ষদ প্রতি সপ্তাহে বোর্ড মিটিং করলেও এবার ইমন ফিরে আসার কারনে দীর্ঘসময় নিল। তারা এবার প্রায় ৩ সপ্তাহ পরে বোর্ড মিটিং করল। এইসময়ে ইমনকে সড়ানোর জন্য সকল কর্ম সাধন করে ওই বিতর্কিত শেয়ারহোল্ডার পরিচালক। তিনি স্বতন্ত্র পরিচালকদের নিয়ে জোট গঠন করেন তাকে সড়ানোর জন্য। অথচ কয়েকদিন আগেও এক টেলিভিশন টকশোতে তিনি স্বতন্ত্র পরিচালকদের সমালোচনা করেন। যার কাজই হচ্ছে রং বদল করা। সকালে প্রশংসা করলেও বিকালে সমালোচনা করতে ছাড়েন না।

অবশেষে গতকাল মিনহাজ মান্নান ইমনের পরিচালক পদ থাকা না থাকা নিয়ে ডিএসইর পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার পদে থাকা নির্ভর করছিল পর্ষদের উপর। যে সুযোগে পর্ষদ তার পদ খেয়ে ফেলেছে। তিনি আইনগত কারনে জেলে এবং ছুটি নেওয়ার সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও এমনটি করেছে ডিএসইর পর্ষদ। এমনকি মিনহাজ মান্নান ইমনের স্ত্রী ছুটির আবেদন করলেও তা গ্রহণ করা হয়নি।

গত কয়েক বছরে ডিএসইতে ন্যায় প্রতিষ্ঠা ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেন মিনহাজ মান্নান ইমন। তবে তার এই ন্যায় প্রতিষ্ঠা এক শেয়ারহোল্ডার পরিচালকের অন্যায় কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া সে এটা বুঝতে পারে, ইমন যদি পর্ষদে ফিরে আসে, তাহলে নিজের প্রভাব থাকবে না ডিএসইতে। একইসঙ্গে চাইলেই সবকিছু করতে পারবে না। যে কারনে স্বতন্ত্র পরিচালকদের সঙ্গে জোট করে সড়িয়ে দিলেন ইমনকে।

বিজনেস আওয়ার/২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০/এস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

4 thoughts on “ডিএসইতে কাকের মাংস খেলো কাক

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ডিএসইতে কাকের মাংস খেলো কাক

পোস্ট হয়েছে : ০৯:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : প্রবাদে আছে কাকের মাংস খায় না কাক। কিন্তু দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এক পরিচালক আরেক পরিচালকের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে, তার পদ খেয়ে ফেলেছেন। শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এমনটিই ঘটেছে ডিএসইর জনপ্রিয় পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমনের সঙ্গে। আর এ কাজ করা হয়েছে বিতর্কিত এক শেয়ারহোল্ডার পরিচালকের নেতৃত্বে।

মিনহাজ মান্নান ইমন আইনী জটিলতার কারনে কারাগারে ছিলেন প্রায় ৪ মাস। যে কারনে ডিএসইর পর্ষদে ৩ মাসের বেশি অনুপস্থিত থাকার ক্ষেত্রে ছুটি নেওয়ার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তা পূরন করতে পারেননি। আর এই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়েছে ডিএসইর এক শেয়ারহোল্ডার পরিচালক। যে নিজে ক্যান্সারের চিকিৎসার কারনে ৬ মাস অনুপস্থিত থাকলেও মিনহাজ মান্নান ইমন তার পরিচালক পদ শূন্য করার জন্য কোন পদক্ষেপ নেননি। যিনি শুধুমাত্র মৌখিকভাবে পর্ষদকে জানিয়েছিলেন।

রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারের অভিযোগ এনে গত মে মাসের শুরুতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১, ২৫(১)(খ), ৩১ ও ৩৫ ধারায় র‌্যাব ঢাকার রমনা থানায় ১১জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছিল। ওই মামলায় গত ৬ মে মিনহাজ মান্নানকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। ওইদিন রাতেই তাকে রমনা থানায় হস্তান্তর করে। পরদিন আদালতে তুললে, বিচারক জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপরে গত ৭ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে মুক্ত হয়েছেন।

ডিএসইর পর্ষদ প্রতি সপ্তাহে বোর্ড মিটিং করলেও এবার ইমন ফিরে আসার কারনে দীর্ঘসময় নিল। তারা এবার প্রায় ৩ সপ্তাহ পরে বোর্ড মিটিং করল। এইসময়ে ইমনকে সড়ানোর জন্য সকল কর্ম সাধন করে ওই বিতর্কিত শেয়ারহোল্ডার পরিচালক। তিনি স্বতন্ত্র পরিচালকদের নিয়ে জোট গঠন করেন তাকে সড়ানোর জন্য। অথচ কয়েকদিন আগেও এক টেলিভিশন টকশোতে তিনি স্বতন্ত্র পরিচালকদের সমালোচনা করেন। যার কাজই হচ্ছে রং বদল করা। সকালে প্রশংসা করলেও বিকালে সমালোচনা করতে ছাড়েন না।

অবশেষে গতকাল মিনহাজ মান্নান ইমনের পরিচালক পদ থাকা না থাকা নিয়ে ডিএসইর পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার পদে থাকা নির্ভর করছিল পর্ষদের উপর। যে সুযোগে পর্ষদ তার পদ খেয়ে ফেলেছে। তিনি আইনগত কারনে জেলে এবং ছুটি নেওয়ার সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও এমনটি করেছে ডিএসইর পর্ষদ। এমনকি মিনহাজ মান্নান ইমনের স্ত্রী ছুটির আবেদন করলেও তা গ্রহণ করা হয়নি।

গত কয়েক বছরে ডিএসইতে ন্যায় প্রতিষ্ঠা ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেন মিনহাজ মান্নান ইমন। তবে তার এই ন্যায় প্রতিষ্ঠা এক শেয়ারহোল্ডার পরিচালকের অন্যায় কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া সে এটা বুঝতে পারে, ইমন যদি পর্ষদে ফিরে আসে, তাহলে নিজের প্রভাব থাকবে না ডিএসইতে। একইসঙ্গে চাইলেই সবকিছু করতে পারবে না। যে কারনে স্বতন্ত্র পরিচালকদের সঙ্গে জোট করে সড়িয়ে দিলেন ইমনকে।

বিজনেস আওয়ার/২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০/এস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: