ঢাকা , বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনপিকে শত্রু বলতে পারে না আ’লীগ : মির্জা ফখরুল

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৩
  • 8

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার নয়। এরা শাসক, এরা ভয়ানক দল। এরা ঘোষণা দেয় বিএনপি আমাদের শত্রু। একটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব একথা বলতে পারে না।

শনিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে বিএনপির ডাকা গণ-অনশন কর্মসূচির প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা ও মুক্তি’র দাবি-তে ডাকা গণ-অনশন ফলের রস খেয়ে ভাঙেন দলটির মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।

স্থায়ী কমিটির সদস্যরা হলেন- মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান। ফলের রস খেয়ে অনশন ভাঙান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী ও এলডিপির চেয়ারম্যান কর্ণেল অব অলি আহমেদ। এটি ৩ ঘণ্টার গণ-অনশন ছিল বিএনপির। এরআগে বেলা ১১টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচির শুরু হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, যে নেত্রী গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আজীবন ত্যাগ স্বীকার করে আসছেন তিনি আজ বন্দী। আজকে এ অনশনে সকল রাজনৈতিক দল স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন এবং শপথ করেছেন এ সরকারের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, গোটা বিশ্ব এদেরকে সরে যেতে বলছে। এদের অত্যাচার-অবিচারে দেশবাসী আজ অতিষ্ট। এরা কাউকে পাত্তা দেয় না। এরা জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায়।

তিনি বলেন, আজকে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্রের মুক্তি অবিচ্ছেদ্য অংশ। খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে। তাই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। আজকে দেশকে বাঁচাতে হলে, অর্থনীতিতে বাঁচাতে হলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। তাই পূজায় আমরা কোনো কঠিন কর্মসূচি রাখিনি। সরকার নিজেরা পূজা পণ্ডপে হামলা চালিয়ে আমাদের ওপর দায় চাপাবে। এগুলো তাদের অতীত ইতিহাস। তারপরও গতকাল তারা হিন্দু-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভায় হামলা চালিয়েছে।

এলডিপির চেয়ারম্যান কর্ণেল অব অলি আহমেদ বলেন, আজকে তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য কেন ভিক্ষা চাওয়া হচ্ছে। আজকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কেন আটক রাখা হচ্ছে। কারণ, বেগম জিয়া বাইরে থাকলে এ সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। আজকে ৮৫ বছর বয়সেও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে যাচ্ছি। আজ তরুণদের এগিয়ে আসতে দেশকে রক্ষা করার জন্য।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য এমন কোনো কাজ নেই যে আমরা করি নাই। আবেদন করেছি, সমাবেশ করেছি, আন্দোলন করেছি। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে হত্যা করার জন্য। তাকে ভুয়া মামলায় আটক করা হয়েছে। একই মামলায় আ স ম রব, মায়া চৌধুরী, হাজী সেলিমসহ সবাইকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে। সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখনো সময় আছে বেগম খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠান। যদি উনাকে বিদেশে পাঠান তাহলে তাকে যে স্লো পয়েজিং করা হয়েছে তার জন্য হয়ত মাফ করে দিবো। যদি না পাঠান তাহলে এই স্লো পয়েজিংয়ের জন্য নতুন প্রজন্ম আপনাদের ক্ষমা করবে না।

বর্তমান সিইসিকে সাবেক নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা ও কাজী রকিব উদ্দীন -এর বংশধর উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আপনি কথা কম বলেন। আপনি নির্বাচন করতে পারবেন না। আপনার সেই সাহস নেই। আপনিও এ সরকারের প্রেসক্রিপশনে কাজ করে যাবেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, আমরা স্বৈরাচারী সরকারের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে আটক করে রেখেছে সেটা হতে পারে না। এরা দেশে বাকশালি শাসন কায়েম করেছে। এর বিরুদ্ধে আজ সবাই এক হয়েছে। এ অবস্থা দেশের মানুষ মেনে নিতে পারে না। এরা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। এরা যে লুট ও দুর্নীতি করেছে তা শুধু দেশের মানুষ নয়, সারা পৃথিবীর মানুষ জেনে গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, একজন মানুষ অসুস্থ হলে তার সুচিকিৎসার অধিকার রয়েছে। কিন্তু দেশনেত্রীকে এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এবারের লড়াই বেঁচে থাকার লড়াই, সবার লড়াই। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, সারাদেশ আজ ঐক্যবদ্ধ। এ সরকারের বিদায় করার জন্য দেশবাসী প্রস্তুত। এখন প্রয়োজন শুধু নির্দেশ। নির্দেশ পাওয়ার সাথে সাথে এ দেশে এমন আন্দোলন শুরু হবে যাতে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের মসনদ ভেঙে তছনছ হয়ে যাবে।

সভাপতি বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেন, এ সরকার ক্ষমতায় থাকলে খালেদা জিয়াকে বাঁচানো যাবে না, দেশ বাঁচানো যাবে না। দেশকে বাঁচাতে হলে এ সরকারকে বিদায় করতে হবে।

বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সমমনা দলগুলোর নেতারা বক্তব্য রাখেন এবং এই গণ-অনশনে সংহতি প্রকাশ করে একাত্মতা ঘোষণা করেন মোস্তফা জামাল হায়দার, ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, খন্দকার লুৎফর রহমান, কাদের গনি চৌধুরী, যুব জাগপার সভাপতি মীর আমির হোসেন আমু প্রমুখ।

বিজনেস আওয়ার/১৪ অক্টোবর, ২০২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বিএনপিকে শত্রু বলতে পারে না আ’লীগ : মির্জা ফখরুল

পোস্ট হয়েছে : ০৪:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার নয়। এরা শাসক, এরা ভয়ানক দল। এরা ঘোষণা দেয় বিএনপি আমাদের শত্রু। একটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব একথা বলতে পারে না।

শনিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে বিএনপির ডাকা গণ-অনশন কর্মসূচির প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা ও মুক্তি’র দাবি-তে ডাকা গণ-অনশন ফলের রস খেয়ে ভাঙেন দলটির মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।

স্থায়ী কমিটির সদস্যরা হলেন- মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান। ফলের রস খেয়ে অনশন ভাঙান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী ও এলডিপির চেয়ারম্যান কর্ণেল অব অলি আহমেদ। এটি ৩ ঘণ্টার গণ-অনশন ছিল বিএনপির। এরআগে বেলা ১১টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচির শুরু হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, যে নেত্রী গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আজীবন ত্যাগ স্বীকার করে আসছেন তিনি আজ বন্দী। আজকে এ অনশনে সকল রাজনৈতিক দল স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন এবং শপথ করেছেন এ সরকারের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, গোটা বিশ্ব এদেরকে সরে যেতে বলছে। এদের অত্যাচার-অবিচারে দেশবাসী আজ অতিষ্ট। এরা কাউকে পাত্তা দেয় না। এরা জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায়।

তিনি বলেন, আজকে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্রের মুক্তি অবিচ্ছেদ্য অংশ। খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে। তাই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। আজকে দেশকে বাঁচাতে হলে, অর্থনীতিতে বাঁচাতে হলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। তাই পূজায় আমরা কোনো কঠিন কর্মসূচি রাখিনি। সরকার নিজেরা পূজা পণ্ডপে হামলা চালিয়ে আমাদের ওপর দায় চাপাবে। এগুলো তাদের অতীত ইতিহাস। তারপরও গতকাল তারা হিন্দু-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভায় হামলা চালিয়েছে।

এলডিপির চেয়ারম্যান কর্ণেল অব অলি আহমেদ বলেন, আজকে তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য কেন ভিক্ষা চাওয়া হচ্ছে। আজকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কেন আটক রাখা হচ্ছে। কারণ, বেগম জিয়া বাইরে থাকলে এ সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। আজকে ৮৫ বছর বয়সেও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে যাচ্ছি। আজ তরুণদের এগিয়ে আসতে দেশকে রক্ষা করার জন্য।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য এমন কোনো কাজ নেই যে আমরা করি নাই। আবেদন করেছি, সমাবেশ করেছি, আন্দোলন করেছি। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে হত্যা করার জন্য। তাকে ভুয়া মামলায় আটক করা হয়েছে। একই মামলায় আ স ম রব, মায়া চৌধুরী, হাজী সেলিমসহ সবাইকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে। সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখনো সময় আছে বেগম খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠান। যদি উনাকে বিদেশে পাঠান তাহলে তাকে যে স্লো পয়েজিং করা হয়েছে তার জন্য হয়ত মাফ করে দিবো। যদি না পাঠান তাহলে এই স্লো পয়েজিংয়ের জন্য নতুন প্রজন্ম আপনাদের ক্ষমা করবে না।

বর্তমান সিইসিকে সাবেক নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা ও কাজী রকিব উদ্দীন -এর বংশধর উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আপনি কথা কম বলেন। আপনি নির্বাচন করতে পারবেন না। আপনার সেই সাহস নেই। আপনিও এ সরকারের প্রেসক্রিপশনে কাজ করে যাবেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, আমরা স্বৈরাচারী সরকারের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে আটক করে রেখেছে সেটা হতে পারে না। এরা দেশে বাকশালি শাসন কায়েম করেছে। এর বিরুদ্ধে আজ সবাই এক হয়েছে। এ অবস্থা দেশের মানুষ মেনে নিতে পারে না। এরা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। এরা যে লুট ও দুর্নীতি করেছে তা শুধু দেশের মানুষ নয়, সারা পৃথিবীর মানুষ জেনে গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, একজন মানুষ অসুস্থ হলে তার সুচিকিৎসার অধিকার রয়েছে। কিন্তু দেশনেত্রীকে এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এবারের লড়াই বেঁচে থাকার লড়াই, সবার লড়াই। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, সারাদেশ আজ ঐক্যবদ্ধ। এ সরকারের বিদায় করার জন্য দেশবাসী প্রস্তুত। এখন প্রয়োজন শুধু নির্দেশ। নির্দেশ পাওয়ার সাথে সাথে এ দেশে এমন আন্দোলন শুরু হবে যাতে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের মসনদ ভেঙে তছনছ হয়ে যাবে।

সভাপতি বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেন, এ সরকার ক্ষমতায় থাকলে খালেদা জিয়াকে বাঁচানো যাবে না, দেশ বাঁচানো যাবে না। দেশকে বাঁচাতে হলে এ সরকারকে বিদায় করতে হবে।

বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সমমনা দলগুলোর নেতারা বক্তব্য রাখেন এবং এই গণ-অনশনে সংহতি প্রকাশ করে একাত্মতা ঘোষণা করেন মোস্তফা জামাল হায়দার, ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, খন্দকার লুৎফর রহমান, কাদের গনি চৌধুরী, যুব জাগপার সভাপতি মীর আমির হোসেন আমু প্রমুখ।

বিজনেস আওয়ার/১৪ অক্টোবর, ২০২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: