ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুড়ঙ্গে পাথর চেটে তৃষ্ণা মেটানোর গল্প শোনালেন অনিল

  • পোস্ট হয়েছে : ০২:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩
  • 55

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ১৪০ কোটি মানুষের দোয়া আর উদ্ধারকর্মীদের তৎপরতায় ৪০০ ঘন্টার উদ্বেগ কাটিয়ে আলোর মুখ দেখেছেন উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ শ্রমিক। এখন তারা সকলেই ভালো আছেন।মনে মনে বলছেন, ‘রাখে আল্লাহ মারে কে’।

সুড়ঙ্গের ধ্বংসস্তূপ থেকে ১৭ দিন ধরে আটকে থাকা ৪১ শ্রমিককে মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাতে উদ্ধার করা হয়েছে।

সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ঝাড়খন্ডের শ্রমিক অনিল বেদিয়া (২২) জানান, ধস নামার প্রায় ৭০ ঘণ্টা পরে উদ্ধারকারীদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়। তার আগে অন্তত দুদিন নরকযন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে আমাদের। আমাদের কাছে খাবার বা পানি, কিছুই ছিল না। পানির পিপাসায় সুড়ঙ্গের পাথর বেয়ে গড়িয়ে পড়া ফোঁটা ফোঁটা পানি চেটে খেয়েছি।

একদিন উদ্ধারকারীরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ৬ ইঞ্চির একটি পাইপ দিয়ে মুড়ি পাঠানো হয়। সে খাবার খেয়ে ১০ দিন কাটাই আমরা। সময়টা দুঃস্বপ্নের মতো ছিল। বাঁচব বলে ভাবিনি। প্রথম আশার আলো দেখলাম যখন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

সুড়ঙ্গের ৬০ মিটার পেছনে আটকে পড়েছিলেন শ্রমিকরা। তাদের উদ্ধারে চলতে থাকে নানা প্রচেষ্টা। দিন গড়াতে থাকে, দীর্ঘ হতে থাকে অপেক্ষার প্রহর। প্রথমে চেষ্টা করা হচ্ছিল ভূমি ধসের ফলে সুড়ঙ্গের ভেতরে যে মাটি-পাথর জমা হয়েছে, সেগুলো সরিয়ে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছানোর। কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পরে ফের ধস নামে, তাই সেই পদ্ধতি বাতিল করা হয়। পরে মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে ধ্বংসাবশেষের ভেতরে গর্ত খোঁড়ার চেষ্টা হয়। সেই যন্ত্রও বিকল হয়ে যায়।

তারপর দিল্লি থেকে আরেকটি বড় মাটি কাটার যন্ত্র এনে ধ্বংসাবশেষের ভেতর দিয়ে ৯০০ মিলিমিটার ব্যাসের একটা পাইপ গুঁজে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। এক পর্যায়ে সেই যন্ত্রও থমকে যায়।

এভাবে নানা প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হওয়ার পর সুড়ঙ্গের ভেতরে জমে থাকা ধসের শেষ অংশটি হাতে কাটা হয়। এরপর সুড়ঙ্গের ভেতরে ৯০০ মিলিমিটার একটি লোহার পাইপ গুঁজে দিয়ে তা দিয়েই বের করে আনা হয় শ্রমিকদের।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সুড়ঙ্গে পাথর চেটে তৃষ্ণা মেটানোর গল্প শোনালেন অনিল

পোস্ট হয়েছে : ০২:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ১৪০ কোটি মানুষের দোয়া আর উদ্ধারকর্মীদের তৎপরতায় ৪০০ ঘন্টার উদ্বেগ কাটিয়ে আলোর মুখ দেখেছেন উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ শ্রমিক। এখন তারা সকলেই ভালো আছেন।মনে মনে বলছেন, ‘রাখে আল্লাহ মারে কে’।

সুড়ঙ্গের ধ্বংসস্তূপ থেকে ১৭ দিন ধরে আটকে থাকা ৪১ শ্রমিককে মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাতে উদ্ধার করা হয়েছে।

সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ঝাড়খন্ডের শ্রমিক অনিল বেদিয়া (২২) জানান, ধস নামার প্রায় ৭০ ঘণ্টা পরে উদ্ধারকারীদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়। তার আগে অন্তত দুদিন নরকযন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে আমাদের। আমাদের কাছে খাবার বা পানি, কিছুই ছিল না। পানির পিপাসায় সুড়ঙ্গের পাথর বেয়ে গড়িয়ে পড়া ফোঁটা ফোঁটা পানি চেটে খেয়েছি।

একদিন উদ্ধারকারীরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ৬ ইঞ্চির একটি পাইপ দিয়ে মুড়ি পাঠানো হয়। সে খাবার খেয়ে ১০ দিন কাটাই আমরা। সময়টা দুঃস্বপ্নের মতো ছিল। বাঁচব বলে ভাবিনি। প্রথম আশার আলো দেখলাম যখন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

সুড়ঙ্গের ৬০ মিটার পেছনে আটকে পড়েছিলেন শ্রমিকরা। তাদের উদ্ধারে চলতে থাকে নানা প্রচেষ্টা। দিন গড়াতে থাকে, দীর্ঘ হতে থাকে অপেক্ষার প্রহর। প্রথমে চেষ্টা করা হচ্ছিল ভূমি ধসের ফলে সুড়ঙ্গের ভেতরে যে মাটি-পাথর জমা হয়েছে, সেগুলো সরিয়ে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছানোর। কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পরে ফের ধস নামে, তাই সেই পদ্ধতি বাতিল করা হয়। পরে মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে ধ্বংসাবশেষের ভেতরে গর্ত খোঁড়ার চেষ্টা হয়। সেই যন্ত্রও বিকল হয়ে যায়।

তারপর দিল্লি থেকে আরেকটি বড় মাটি কাটার যন্ত্র এনে ধ্বংসাবশেষের ভেতর দিয়ে ৯০০ মিলিমিটার ব্যাসের একটা পাইপ গুঁজে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। এক পর্যায়ে সেই যন্ত্রও থমকে যায়।

এভাবে নানা প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হওয়ার পর সুড়ঙ্গের ভেতরে জমে থাকা ধসের শেষ অংশটি হাতে কাটা হয়। এরপর সুড়ঙ্গের ভেতরে ৯০০ মিলিমিটার একটি লোহার পাইপ গুঁজে দিয়ে তা দিয়েই বের করে আনা হয় শ্রমিকদের।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: