ঢাকা , রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জেলের জালে ১৫০ কেজি ওজনের হাঙ্গর

  • পোস্ট হয়েছে : ০২:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩
  • 5

বিজনেস আওয়ার প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় এলাকায় স্থানীয় জেলেদের জালে ১৫০ কেজি ওজনের একটি হাঙ্গর মাছ ধরা পড়েছে।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে রায়পুর ইউনিয়নের খোর্দ্দ গহিরার উঠান মাঝির ঘাট এলাকায় প্রায় সাত ফুট লম্বা মাছটি নিয়ে আসা হয়।

জেলেরা জানান, শনিবার দুপুরে ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নিয়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যান কাইয়ুম মাঝি। সন্ধ্যায় বিশাল আকৃতির হাঙ্গরটি জালে আটকা পড়ে।

রাতে সেটি উঠান মাঝির ঘাটে নিয়ে আসা হয়। ওজন ১৫০ কেজি। হাঙ্গরটি এই মৌসুমের সবচেয়ে বড় মাছ।

আনোয়ারা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. রাশিদুল হক বলেন, হাঙ্গর মাছ ধরা এবং বিক্রি করা বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য আইনে নিষিদ্ধ। তারপরও মানুষ এটা শিকার করছে।

২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর তফসিল সংশোধন করে বিপন্ন হাঙ্গর ও রে মাছের ৫২ প্রজাতিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আইনের ৩৯ ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে এসব প্রাণী আহরণ ও বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হলে এক বছরের কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। কোন ব্যক্তি একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে শাস্তির পরিমাণ দ্বিগুণ হবে। এমনকি এ অপরাধ সংঘটনে সহায়তাকারী বা প্ররোচনাকারীও নির্ধারিত দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্রাফিক’র জরিপ অনুযায়ী, নিষিদ্ধ হলেও হাঙ্গর রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ২০তম। বাংলাদেশের জলসীমা থেকে এ পর্যন্ত ২২টি পরিবারের অন্তর্গত মোট ৪৬ প্রজাতির হাঙর মাছ রেকর্ড করা হয়েছে। সামুদ্রিক প্রাণীর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী হাঙ্গর ৩৬ শতাংশ বিলুপ্তির ঝুঁকি রয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য দপ্তর সূত্র জানায়, ১২ বছর আগেও বাংলাদেশে যে সংখ্যায় হাঙ্গর ছিল, এখন তা অনেক কমে এসেছে। বছর তিনেক ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে উচ্চমূল্যের কারণে হাঙ্গর শিকারের প্রবণতা বেড়েছে। এ কারণে বাংলাদেশে বড় আকারের হাঙ্গর প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।

বাণিজ্যিকভাবে হাঙ্গরের মাংস, চামড়া, পাখনা রপ্তানি হয়। সিঙ্গাপুর, হংকং, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশে এর বেশ চাহিদা রয়েছে। ২০০৮-২০০৯ সালে বাংলাদেশে ৩,৯৩৩ মেট্রিক টন হাঙ্গর ধরা হয়েছিল। তবে এরপর দেশে হাঙ্গর শিকারের কোনো জরিপ হয়নি। বঙ্গোপসাগরে যান্ত্রিক, অ-যান্ত্রিক এবং শিল্প ট্রলারের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা অতিরিক্ত মাছ ধরার প্রাথমিক কারণ। যার ফলে হাঙ্গরসহ বিপন্ন প্রজাতির মাছের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

জেলের জালে ১৫০ কেজি ওজনের হাঙ্গর

পোস্ট হয়েছে : ০২:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় এলাকায় স্থানীয় জেলেদের জালে ১৫০ কেজি ওজনের একটি হাঙ্গর মাছ ধরা পড়েছে।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে রায়পুর ইউনিয়নের খোর্দ্দ গহিরার উঠান মাঝির ঘাট এলাকায় প্রায় সাত ফুট লম্বা মাছটি নিয়ে আসা হয়।

জেলেরা জানান, শনিবার দুপুরে ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নিয়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যান কাইয়ুম মাঝি। সন্ধ্যায় বিশাল আকৃতির হাঙ্গরটি জালে আটকা পড়ে।

রাতে সেটি উঠান মাঝির ঘাটে নিয়ে আসা হয়। ওজন ১৫০ কেজি। হাঙ্গরটি এই মৌসুমের সবচেয়ে বড় মাছ।

আনোয়ারা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. রাশিদুল হক বলেন, হাঙ্গর মাছ ধরা এবং বিক্রি করা বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য আইনে নিষিদ্ধ। তারপরও মানুষ এটা শিকার করছে।

২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর তফসিল সংশোধন করে বিপন্ন হাঙ্গর ও রে মাছের ৫২ প্রজাতিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আইনের ৩৯ ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে এসব প্রাণী আহরণ ও বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হলে এক বছরের কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। কোন ব্যক্তি একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে শাস্তির পরিমাণ দ্বিগুণ হবে। এমনকি এ অপরাধ সংঘটনে সহায়তাকারী বা প্ররোচনাকারীও নির্ধারিত দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্রাফিক’র জরিপ অনুযায়ী, নিষিদ্ধ হলেও হাঙ্গর রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ২০তম। বাংলাদেশের জলসীমা থেকে এ পর্যন্ত ২২টি পরিবারের অন্তর্গত মোট ৪৬ প্রজাতির হাঙর মাছ রেকর্ড করা হয়েছে। সামুদ্রিক প্রাণীর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী হাঙ্গর ৩৬ শতাংশ বিলুপ্তির ঝুঁকি রয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য দপ্তর সূত্র জানায়, ১২ বছর আগেও বাংলাদেশে যে সংখ্যায় হাঙ্গর ছিল, এখন তা অনেক কমে এসেছে। বছর তিনেক ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে উচ্চমূল্যের কারণে হাঙ্গর শিকারের প্রবণতা বেড়েছে। এ কারণে বাংলাদেশে বড় আকারের হাঙ্গর প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।

বাণিজ্যিকভাবে হাঙ্গরের মাংস, চামড়া, পাখনা রপ্তানি হয়। সিঙ্গাপুর, হংকং, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশে এর বেশ চাহিদা রয়েছে। ২০০৮-২০০৯ সালে বাংলাদেশে ৩,৯৩৩ মেট্রিক টন হাঙ্গর ধরা হয়েছিল। তবে এরপর দেশে হাঙ্গর শিকারের কোনো জরিপ হয়নি। বঙ্গোপসাগরে যান্ত্রিক, অ-যান্ত্রিক এবং শিল্প ট্রলারের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা অতিরিক্ত মাছ ধরার প্রাথমিক কারণ। যার ফলে হাঙ্গরসহ বিপন্ন প্রজাতির মাছের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: