ঢাকা , শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আদালত ভবনের ৩য় তলা থেকে স্ত্রীকে ফেলে দিয়ে স্বামীর আত্মহত্যা চেষ্টা

  • পোস্ট হয়েছে : ০৩:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৪
  • 6

মেহেরপুর প্রতিনিধি: স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুকের মামলায় হাজিরা দিতে এসে আদালত ভবনের ৩য় তলা ভবন থেকে স্ত্রী সিমা আক্তারকে নিচে ফেলে দেওয়ার পর স্বামী মামুনুর রশিদও ঝাঁপ দিয়ে নিচে পড়ে আত্মহত্যার করার চেষ্টা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে মেহেরপুর আদালত ভবনে এ ঘটনা ঘটে। আহত দুজনকে বর্তমানে মেহেরপুর-২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত মামুন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার শওড়াতলা গ্রামের আবুল কাসেমের ছেলে এবং সিমা আক্তার তেতুলবাড়িয়া রামদেবপুর গ্রামের ফরিদুল ইসলামের মেয়ে।

জানা গেছে প্রায় এক যুগ পূর্বে সীমার সাথে মামুনের বিবাহ হয়। বিবাহের পর যৌতুক চাওয়াকে কেন্দ্র করে সিমা তার স্বামী মামুনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সোমবার হাজিরা দিতে এসে সিমা ও মামুন আদালত ভবনের তৃতীয় তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় হঠাৎ করে মামুন সিমাকে জাপটে ধরে ৩য় তলা থেকে নিচে ফেলে দেওয়ার পরপর সে নিজেও নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের এই আকস্মিকতায় আদালত ভবনে দাঁড়িয়ে থাকা সকলেই কিং কর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে।

পরে খবর পেয়ে মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিসে সিভিল ডিফেন্সের সদস্য এসে দুজনকে উদ্ধার করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।

আহত সিমা খাতুন জানান, ১০ বছর আগে গাংনী উপজেলার সহড়াতলা গ্রামের মামুনুর রশিদের সঙ্গে বিয়ে হয়। নানান কারণে তার সঙ্গে সংসার জীবন ভালো না যাওয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। পরে মেহেরপুর জেলা জজ পারিবারিক আদালতে খোরপোষ দাবি করে একটি মামলা করা হয়। পরে দুই পরিবারের সমঝোতায় মামলাটি মীমাংসা করা হয়। আজ দুপুরে খোরপোষ বাবদ টাকা দেওয়ার দিন ছিল।

তিনি আরও জানান, টাকা দিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য আদালত থেকে বের হওয়ার সময় স্বামী আমাকে জড়িয়ে ধরে আদালতের বারান্দায় নিয়ে গিয়ে ধাক্কা দেয়। এ সময় আমি বারান্দার লোহার রেলিংয়ের ওপর দিয়ে নিচে পড়ে যাওয়ার সময় তার জামা ধরলে সেও আমার সঙ্গে তিন তলা থেকে নিচে পড়ে যায়। পরে আদালতে থাকা লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এতে আমার বাম হাত ভেঙে যাওয়াসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লেগেছে।

অন্যদিকে মামুনুর রশিদ স্ত্রীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, খোরপোষের টাকা দিয়ে আদালত থেকে বের হলে তার স্ত্রী তাকে ধাক্কা দেয়। দুজনে নিচে পড়ে তার শরীর বিভিন্ন স্থান ক্ষত হয়েছে।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ভারপ্রাপ্ত ডা. মঞ্জুরুল হাসান জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া আহত স্বামী-স্ত্রীর অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। তবে স্ত্রীর হাত ও স্বামীর কোমরের হাড় ভেঙে গেছে। তাদের চিকিৎসা চলছে।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

আদালত ভবনের ৩য় তলা থেকে স্ত্রীকে ফেলে দিয়ে স্বামীর আত্মহত্যা চেষ্টা

পোস্ট হয়েছে : ০৩:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৪

মেহেরপুর প্রতিনিধি: স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুকের মামলায় হাজিরা দিতে এসে আদালত ভবনের ৩য় তলা ভবন থেকে স্ত্রী সিমা আক্তারকে নিচে ফেলে দেওয়ার পর স্বামী মামুনুর রশিদও ঝাঁপ দিয়ে নিচে পড়ে আত্মহত্যার করার চেষ্টা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে মেহেরপুর আদালত ভবনে এ ঘটনা ঘটে। আহত দুজনকে বর্তমানে মেহেরপুর-২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত মামুন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার শওড়াতলা গ্রামের আবুল কাসেমের ছেলে এবং সিমা আক্তার তেতুলবাড়িয়া রামদেবপুর গ্রামের ফরিদুল ইসলামের মেয়ে।

জানা গেছে প্রায় এক যুগ পূর্বে সীমার সাথে মামুনের বিবাহ হয়। বিবাহের পর যৌতুক চাওয়াকে কেন্দ্র করে সিমা তার স্বামী মামুনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সোমবার হাজিরা দিতে এসে সিমা ও মামুন আদালত ভবনের তৃতীয় তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় হঠাৎ করে মামুন সিমাকে জাপটে ধরে ৩য় তলা থেকে নিচে ফেলে দেওয়ার পরপর সে নিজেও নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের এই আকস্মিকতায় আদালত ভবনে দাঁড়িয়ে থাকা সকলেই কিং কর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে।

পরে খবর পেয়ে মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিসে সিভিল ডিফেন্সের সদস্য এসে দুজনকে উদ্ধার করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।

আহত সিমা খাতুন জানান, ১০ বছর আগে গাংনী উপজেলার সহড়াতলা গ্রামের মামুনুর রশিদের সঙ্গে বিয়ে হয়। নানান কারণে তার সঙ্গে সংসার জীবন ভালো না যাওয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। পরে মেহেরপুর জেলা জজ পারিবারিক আদালতে খোরপোষ দাবি করে একটি মামলা করা হয়। পরে দুই পরিবারের সমঝোতায় মামলাটি মীমাংসা করা হয়। আজ দুপুরে খোরপোষ বাবদ টাকা দেওয়ার দিন ছিল।

তিনি আরও জানান, টাকা দিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য আদালত থেকে বের হওয়ার সময় স্বামী আমাকে জড়িয়ে ধরে আদালতের বারান্দায় নিয়ে গিয়ে ধাক্কা দেয়। এ সময় আমি বারান্দার লোহার রেলিংয়ের ওপর দিয়ে নিচে পড়ে যাওয়ার সময় তার জামা ধরলে সেও আমার সঙ্গে তিন তলা থেকে নিচে পড়ে যায়। পরে আদালতে থাকা লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এতে আমার বাম হাত ভেঙে যাওয়াসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লেগেছে।

অন্যদিকে মামুনুর রশিদ স্ত্রীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, খোরপোষের টাকা দিয়ে আদালত থেকে বের হলে তার স্ত্রী তাকে ধাক্কা দেয়। দুজনে নিচে পড়ে তার শরীর বিভিন্ন স্থান ক্ষত হয়েছে।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ভারপ্রাপ্ত ডা. মঞ্জুরুল হাসান জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া আহত স্বামী-স্ত্রীর অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। তবে স্ত্রীর হাত ও স্বামীর কোমরের হাড় ভেঙে গেছে। তাদের চিকিৎসা চলছে।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: