ঢাকা , রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা হবে ১৭ জানুয়ারি

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৪
  • 8

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণা দুদিন পেছানো হয়েছে। ১৭ জানুয়ারি বেলা ৩টায় নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় গতকাল মুদ্রানীতির খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন হয়। মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহার বৃদ্ধিসহ বেশকিছু মৌলিক কাঠামোর পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘পর্ষদের সভায় আগামী ছয় মাসের মুদ্রানীতি চূড়ান্ত হয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়ার জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণার তারিখ ১৫ জানুয়ারির পরিবর্তে ১৭ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। ওইদিন বেলা ৩টায় নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে।’

গতকালের পর্ষদ সভায় মুদ্রানীতি অনুমোদন ছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক রিপোর্ট অনুমোদন হয়। আমানত বীমা ট্রাস্ট তহবিলের অর্থ সরকারের ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগের বিষয়েও সিদ্ধান্ত এসেছে সভা থেকে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু কার্যসূচিও পর্ষদের সভায় পাস হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

প্রায় দুই বছর ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। এ অবস্থায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকেই অগ্রাধিকার দিয়ে মুদ্রানীতি প্রণয়ন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মুদ্রানীতি প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারা জানান, অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য ঘোষিত সংকুলানমুখী মুদ্রানীতির ধারাবাহিকতা দ্বিতীয়ার্ধেও থাকবে। এক্ষেত্রে সুদহার আরো বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে। বাড়ানো হতে পারে নীতি সুদহার, রেপো, রিভার্স রেপোর মতো মুদ্রানীতির মৌলিক সুদ কাঠামোগুলোও। আর ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) নির্দেশিত ‘ক্রলিং পেগ’ নীতি অনুসরণের ঘোষণাও দেয়া হতে পারে। তবে এ নীতি বাস্তবায়ন ও কাঠামো ঠিক করতে আরো সময় নিতে চাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১১ শতাংশে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে। সব মিলিয়ে ব্যাংক খাতে সুশাসন ফেরানোর বিষয়ে নতুন মুদ্রানীতিতে বিশেষ ঘোষণা আসতে পারে।

এর আগে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতিতেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে জোর দেয়া হয়েছিল। গত ডিসেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতির হার সর্বোচ্চ ৮ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশের সীমা তুলে নেয়া হয়েছিল। গত ছয় মাসে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে চলতি জানুয়ারিতে ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। কিন্তু মূল্যস্ফীতির হার কমানো সম্ভব হয়নি। গত বছরজুড়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে নাজেহাল ছিল দেশের মানুষ। বছর শুরুর মাসে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আর সর্বশেষ ডিসেম্বরে এসে তা দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৪১ শতাংশে। মাঝে অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছিল। তবে অর্থনীতিবিদের অনেকে মনে করছেন, মূল্যস্ফীতির প্রকৃত হার সরকার প্রকাশিত পরিসংখ্যানের চেয়ে অনেক বেশি।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা হবে ১৭ জানুয়ারি

পোস্ট হয়েছে : ০১:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৪

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণা দুদিন পেছানো হয়েছে। ১৭ জানুয়ারি বেলা ৩টায় নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় গতকাল মুদ্রানীতির খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন হয়। মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহার বৃদ্ধিসহ বেশকিছু মৌলিক কাঠামোর পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘পর্ষদের সভায় আগামী ছয় মাসের মুদ্রানীতি চূড়ান্ত হয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়ার জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণার তারিখ ১৫ জানুয়ারির পরিবর্তে ১৭ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। ওইদিন বেলা ৩টায় নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে।’

গতকালের পর্ষদ সভায় মুদ্রানীতি অনুমোদন ছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক রিপোর্ট অনুমোদন হয়। আমানত বীমা ট্রাস্ট তহবিলের অর্থ সরকারের ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগের বিষয়েও সিদ্ধান্ত এসেছে সভা থেকে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু কার্যসূচিও পর্ষদের সভায় পাস হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

প্রায় দুই বছর ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। এ অবস্থায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকেই অগ্রাধিকার দিয়ে মুদ্রানীতি প্রণয়ন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মুদ্রানীতি প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারা জানান, অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য ঘোষিত সংকুলানমুখী মুদ্রানীতির ধারাবাহিকতা দ্বিতীয়ার্ধেও থাকবে। এক্ষেত্রে সুদহার আরো বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে। বাড়ানো হতে পারে নীতি সুদহার, রেপো, রিভার্স রেপোর মতো মুদ্রানীতির মৌলিক সুদ কাঠামোগুলোও। আর ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) নির্দেশিত ‘ক্রলিং পেগ’ নীতি অনুসরণের ঘোষণাও দেয়া হতে পারে। তবে এ নীতি বাস্তবায়ন ও কাঠামো ঠিক করতে আরো সময় নিতে চাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১১ শতাংশে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে। সব মিলিয়ে ব্যাংক খাতে সুশাসন ফেরানোর বিষয়ে নতুন মুদ্রানীতিতে বিশেষ ঘোষণা আসতে পারে।

এর আগে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতিতেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে জোর দেয়া হয়েছিল। গত ডিসেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতির হার সর্বোচ্চ ৮ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশের সীমা তুলে নেয়া হয়েছিল। গত ছয় মাসে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে চলতি জানুয়ারিতে ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। কিন্তু মূল্যস্ফীতির হার কমানো সম্ভব হয়নি। গত বছরজুড়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে নাজেহাল ছিল দেশের মানুষ। বছর শুরুর মাসে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আর সর্বশেষ ডিসেম্বরে এসে তা দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৪১ শতাংশে। মাঝে অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছিল। তবে অর্থনীতিবিদের অনেকে মনে করছেন, মূল্যস্ফীতির প্রকৃত হার সরকার প্রকাশিত পরিসংখ্যানের চেয়ে অনেক বেশি।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: