ঢাকা , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিয়ন্ত্রণে আসছে না নিত্যপণ্যের দাম

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ অক্টোবর ২০২০
  • 0

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। কোনও ভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না দ্রব্যমূল্যের দাম। অন্যদিকে সরকার চালের দাম বেঁধে দিলেও তার প্রভাব পড়েনি বাজারে। এখনো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল। কাঁচা বাজারে যেয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে ক্রেতার।

সবজির দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বন্যাকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারা বলছেন অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে দাম বেড়েছে। আর অর্থনীতিবিদরা বলছে উৎপাদন কম হওয়া বা পরিবহনের জন্য সবজি বা কাঁচাবাজারে সাময়িক সময়ের জন্য দাম বাড়তে পারে।

এ সপ্তাহে বেশকিছু সবজির দাম ১০০ টাকার ঘর ছুঁই ছুঁই। অধিকাংশ সবজি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজি প্রতি ১২০ টাকা বেড়ে বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম উঠেছে ২৮০ টাকা।

রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে, প্রতি কেজি শসা ১০০ টাকা, ছোট প্রতি পিস ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, সিম কেজি প্রতি ১২০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, করল্লা ৮০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, লাউ ৭০ টাকা পিস, আলু ৫০ টাকা কেজি, বরবটি ৮০ টাকা, ক্যাপসিকাম ৩০০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, পেয়াজ ১০০ থেকে ১২০ টাকা, রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, আদা ১২০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবজি বিক্রেতারা বলছেন, এই মাস পুরোটাই এমন বাড়তি থাকবে সবজির দাম। শীত এলে দাম কমবে। তবে বিগত বছরগুলোর থেকে এবারে সবজির দামটা অস্বাভাবিক ভাবে বাড়ছে। দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বন্যাকে দায়ী করছেন তারা।

এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, কয়েকদিন ধরেই সবজির দাম বেশি। এক পোয়া কাঁচা মরিচ কিনতে গেলে লাগে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি বাজারে নেই। কোনো কোনো সবজির দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। করোনার কারণে একদিকে বেতন কমেছে অন্যদিকে সব কিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ভোগ পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে মানুষ কষ্টে আছে। করোনা মহামারি কারণে একদিকে মানুষের আয় কমে গেছে, অনেকের চাকরি চলে গেছে, অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। দাম বৃদ্ধিতে উচ্চবিত্তের মানুষের তেমন কিছু হয় না। কিন্তু নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তের মানুষ কষ্টে আছে।

তিনি বলেন, শাকসবজির যদি উৎপাদন না হয়, পরিবহন ব্যবস্থা যদি ভালো না হয় তাহলে কিছুটা দাম বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে এখানেও যে কারসাজি নেই তা নয়। চাল-ডাল বা আরো কিছু পণ্য আছে যার সাথে পরিবহনের কোনো সংযোগ নেই কিন্তু দাম বাড়ছে। এটি খুবই শঙ্কার ব্যাপার। সবজির দাম বেশি হওয়ার কৃষকরা যদি শীতকালীন সবজির আগাম চাষ করে তাহলে তাহলে বাজারে স্বস্তি আসতে পারে।

অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর মনে করেন বলেন, নিত্য ভোগ পণ্যের দাম বৃদ্ধি সবার জন্যই সমস্যা সৃষ্টি করেছে। এর পিছনে দেশে দীর্ঘ মেয়াদি বন্যাকে দায়ী করেন তিনি। তবে সরকার এই বন্যার কথা স্বীকার করে না। এখন বাজারে এটার প্রভাব পড়েছে।

বিজনেস আওয়ার/১০ অক্টোবর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

নিয়ন্ত্রণে আসছে না নিত্যপণ্যের দাম

পোস্ট হয়েছে : ০৪:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ অক্টোবর ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। কোনও ভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না দ্রব্যমূল্যের দাম। অন্যদিকে সরকার চালের দাম বেঁধে দিলেও তার প্রভাব পড়েনি বাজারে। এখনো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল। কাঁচা বাজারে যেয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে ক্রেতার।

সবজির দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বন্যাকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারা বলছেন অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে দাম বেড়েছে। আর অর্থনীতিবিদরা বলছে উৎপাদন কম হওয়া বা পরিবহনের জন্য সবজি বা কাঁচাবাজারে সাময়িক সময়ের জন্য দাম বাড়তে পারে।

এ সপ্তাহে বেশকিছু সবজির দাম ১০০ টাকার ঘর ছুঁই ছুঁই। অধিকাংশ সবজি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজি প্রতি ১২০ টাকা বেড়ে বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম উঠেছে ২৮০ টাকা।

রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে, প্রতি কেজি শসা ১০০ টাকা, ছোট প্রতি পিস ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, সিম কেজি প্রতি ১২০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, করল্লা ৮০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, লাউ ৭০ টাকা পিস, আলু ৫০ টাকা কেজি, বরবটি ৮০ টাকা, ক্যাপসিকাম ৩০০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, পেয়াজ ১০০ থেকে ১২০ টাকা, রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, আদা ১২০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবজি বিক্রেতারা বলছেন, এই মাস পুরোটাই এমন বাড়তি থাকবে সবজির দাম। শীত এলে দাম কমবে। তবে বিগত বছরগুলোর থেকে এবারে সবজির দামটা অস্বাভাবিক ভাবে বাড়ছে। দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বন্যাকে দায়ী করছেন তারা।

এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, কয়েকদিন ধরেই সবজির দাম বেশি। এক পোয়া কাঁচা মরিচ কিনতে গেলে লাগে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি বাজারে নেই। কোনো কোনো সবজির দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। করোনার কারণে একদিকে বেতন কমেছে অন্যদিকে সব কিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ভোগ পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে মানুষ কষ্টে আছে। করোনা মহামারি কারণে একদিকে মানুষের আয় কমে গেছে, অনেকের চাকরি চলে গেছে, অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। দাম বৃদ্ধিতে উচ্চবিত্তের মানুষের তেমন কিছু হয় না। কিন্তু নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তের মানুষ কষ্টে আছে।

তিনি বলেন, শাকসবজির যদি উৎপাদন না হয়, পরিবহন ব্যবস্থা যদি ভালো না হয় তাহলে কিছুটা দাম বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে এখানেও যে কারসাজি নেই তা নয়। চাল-ডাল বা আরো কিছু পণ্য আছে যার সাথে পরিবহনের কোনো সংযোগ নেই কিন্তু দাম বাড়ছে। এটি খুবই শঙ্কার ব্যাপার। সবজির দাম বেশি হওয়ার কৃষকরা যদি শীতকালীন সবজির আগাম চাষ করে তাহলে তাহলে বাজারে স্বস্তি আসতে পারে।

অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর মনে করেন বলেন, নিত্য ভোগ পণ্যের দাম বৃদ্ধি সবার জন্যই সমস্যা সৃষ্টি করেছে। এর পিছনে দেশে দীর্ঘ মেয়াদি বন্যাকে দায়ী করেন তিনি। তবে সরকার এই বন্যার কথা স্বীকার করে না। এখন বাজারে এটার প্রভাব পড়েছে।

বিজনেস আওয়ার/১০ অক্টোবর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: