ঢাকা , রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এলডিসির পরেও চীনের কাছে শুল্ক-মুক্ত সুবিধা চান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

  • পোস্ট হয়েছে : ০৮:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪
  • 4

বিজনেস আওয়ার পতিবেদক: ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পরও পণ্য রপ্তানিতে ডিউটি ফ্রি, কোটা ফ্রি সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য চীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। পাটজাত পণ্য আমদানির পাশাপাশি পাটশিল্প এবং চামড়াশিল্প খাতে বিনিয়োগের জন্য চীন আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

বুধবার চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর অফিস কক্ষে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে এসব কথা জানান তিনি।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, এলডিসি থেকে ২০২৬ সালে উত্তরণের পর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখমুখি হবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার এরই মধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং কৌশল নির্ধারণে কাজ করছে। বিভিন্ন দেশ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি বা প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট-পিটিএ করার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে এলডিসি গ্রাজুয়েশন পরবর্তী সময়েও বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য চীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এসময় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, চীন বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে আগ্রহী। এই চুক্তি সম্পাদিত হলে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের পাশাপাশি বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধি পাবে।

আহসানুল ইসলাম বলেন, দেশের পাট ও চামড়া উদীয়মান এবং সম্ভাবনাময় একটি খাত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দুই খাতের উন্নয়নে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পাট ও চামড়া শিল্পের উন্নয়নে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশে ঈদুল আজহার দিন এক কোটির বেশি পশুর চামড়া ছাড়াও সারাবছর প্রচুর পশুর চামড়া সংগৃহিত হয়। যথেষ্ট লজিস্টিক সাপোর্ট না থাকায় এগুলো দ্রুত প্রসেসিং করা সম্ভব হয় না। ফলে নষ্ট হয়ে যায়।

চামড়া খাতকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকার চামড়াজাত শিল্পের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে উল্লেখ করে তিনি চামড়া শিল্পের উন্নয়নে চীন সরকারকে বাংলাদেশকে লজিস্টিক সাপোর্ট প্রদানসহ এ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাট ও পাটজাত পণ্য উৎপাদনে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে। অভ্যন্তরীণ বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নতি করে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে পাটজাত পণ্য রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। পাটজাত পণ্যকে ২০২৩ সালের ‘বর্ষ পণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পাট ঐতিহ্যগতভাবেই দেশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে। পাট থেকে তৈরি সব পণ্য পরিবেশবান্ধব ও ব্যবহার উপযোগী।

চীনে বাংলাদেশি আম, কাঁঠাল ও পেয়ারা ছাড়াও মানসম্মত তাজা খাবার, চিংড়ি, কাঁকড়া এবং ঈল মাছের চাহিদা থাকায় এসব পণ্য আরও বেশি রপ্তানির জন্য অনুরোধ জানান প্রতিমন্ত্রী। এছাড়া অন্যান্য কৃষি পণ্য এবং ফার্মাসিউটিক্যালস রপ্তানিরও আহবান জানান।

আহসানুল ইসলাম জানান, করোনা সংকট এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী পণ্য সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটছে। ফলে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে পণ্যের। পৃথিবীর সব দেশ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকটা সফল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বিজনেস আওয়ার/বিএইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

এলডিসির পরেও চীনের কাছে শুল্ক-মুক্ত সুবিধা চান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

পোস্ট হয়েছে : ০৮:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪

বিজনেস আওয়ার পতিবেদক: ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পরও পণ্য রপ্তানিতে ডিউটি ফ্রি, কোটা ফ্রি সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য চীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। পাটজাত পণ্য আমদানির পাশাপাশি পাটশিল্প এবং চামড়াশিল্প খাতে বিনিয়োগের জন্য চীন আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

বুধবার চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর অফিস কক্ষে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে এসব কথা জানান তিনি।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, এলডিসি থেকে ২০২৬ সালে উত্তরণের পর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখমুখি হবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার এরই মধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং কৌশল নির্ধারণে কাজ করছে। বিভিন্ন দেশ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি বা প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট-পিটিএ করার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে এলডিসি গ্রাজুয়েশন পরবর্তী সময়েও বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য চীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এসময় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, চীন বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে আগ্রহী। এই চুক্তি সম্পাদিত হলে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের পাশাপাশি বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধি পাবে।

আহসানুল ইসলাম বলেন, দেশের পাট ও চামড়া উদীয়মান এবং সম্ভাবনাময় একটি খাত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দুই খাতের উন্নয়নে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পাট ও চামড়া শিল্পের উন্নয়নে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশে ঈদুল আজহার দিন এক কোটির বেশি পশুর চামড়া ছাড়াও সারাবছর প্রচুর পশুর চামড়া সংগৃহিত হয়। যথেষ্ট লজিস্টিক সাপোর্ট না থাকায় এগুলো দ্রুত প্রসেসিং করা সম্ভব হয় না। ফলে নষ্ট হয়ে যায়।

চামড়া খাতকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকার চামড়াজাত শিল্পের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে উল্লেখ করে তিনি চামড়া শিল্পের উন্নয়নে চীন সরকারকে বাংলাদেশকে লজিস্টিক সাপোর্ট প্রদানসহ এ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাট ও পাটজাত পণ্য উৎপাদনে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে। অভ্যন্তরীণ বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নতি করে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে পাটজাত পণ্য রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। পাটজাত পণ্যকে ২০২৩ সালের ‘বর্ষ পণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পাট ঐতিহ্যগতভাবেই দেশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে। পাট থেকে তৈরি সব পণ্য পরিবেশবান্ধব ও ব্যবহার উপযোগী।

চীনে বাংলাদেশি আম, কাঁঠাল ও পেয়ারা ছাড়াও মানসম্মত তাজা খাবার, চিংড়ি, কাঁকড়া এবং ঈল মাছের চাহিদা থাকায় এসব পণ্য আরও বেশি রপ্তানির জন্য অনুরোধ জানান প্রতিমন্ত্রী। এছাড়া অন্যান্য কৃষি পণ্য এবং ফার্মাসিউটিক্যালস রপ্তানিরও আহবান জানান।

আহসানুল ইসলাম জানান, করোনা সংকট এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী পণ্য সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটছে। ফলে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে পণ্যের। পৃথিবীর সব দেশ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকটা সফল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বিজনেস আওয়ার/বিএইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: