ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সালাউদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে যা বললেন পাপন

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • 7

স্পোর্টস ডেস্ক: হার্টের অস্ত্রোপচার শেষে বাসায় বিশ্রামে আছেন বাফুফের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন আজ বাফুফে রাষ্ট্রপতির বাসায় সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। প্রায় ২০ মিনিটের বৈঠকে চলমান ফুটবল সংকট নিয়েও আলোচনা হয়।

শারীরিক অসুস্থতা ও বিধিনিষেধের কারণে মিডিয়ার সামনে আসেননি ফিফা সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন। বৈঠক শেষে চলে যাওয়ার সময় ক্রীড়ামন্ত্রী নাজাম হাসান বাবুন এ মন্তব্য করেন। গত বছর, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন এবং বিসিবি সভাপতি পাপন অলিম্পিক বাছাইপর্ব খেলতে মিয়ানমারে নারী ফুটবলারদের সফর বাতিল করা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

খেলাধুলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুই ব্যক্তিত্বের মধ্যে সংঘর্ষের পর একটি “স্নায়ু যুদ্ধ” বিরাজ করে। আজকের বৈঠকের পর পাপন বলেন, এত বছরের সম্পর্ক একদিনে নষ্ট হয় না।

বর্তমান প্রজন্মের কাছে সালাউদ্দিনের পরিচয় বাফুফে সভাপতি হলেও ক্রীড়াঙ্গন ও দেশের অধিকাংশ মানুষের হৃদয়ে ফুটবলার সালাউদ্দিনের চিত্রই বড় করে আঁকা। পাপনও এর ব্যতিক্রম নন, ‘ছোটবেলা মাঠেই যেতাম উনার খেলা দেখতে। উনার মতো কিংবদন্তী ফুটবলার তো দেশে নেই।’ দুই জনই এখন দুই খেলার শীর্ষ দায়িত্বে। একজনের মন্তব্যে আরেক জন মনঃক্ষুণ্ন হলেও সেখানেই শেষ বলে জানালেন পাপন, ‘অনেক কথায় উনি হার্ট (আহত) হতে পারেন, আমি হতে পারি। একটা রিঅ্যাকশন (প্রতিক্রিয়া) দিলাম। সেটা ওখানেই শেষ, কিন্তু সম্পর্ক তো শেষ হবে না।’

আজ সালাউদ্দিনের বাসায় ব্যক্তিগত আলোচনার মধ্যেও ফুটবলের কিছু সমস্যার কথা এসেছে। পাপন এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘কিছু সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উনি সুস্থ হয়ে একেবারে ফিরলে দেখব, এর মধ্যেও বলেছি কিছু কাগজপত্র পাঠাতে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে যেন আর সময় ক্ষেপণ না হয় এবং বিকল্প খেলার জায়গা করা যায় কিনা সেটাও আমার বিবেচনায় রয়েছে।’ চলতি সপ্তাহেই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম পরিদর্শনে যাবেন পাপন।

বাফুফে সভাপতি হৃদযন্ত্রের সমস্যা অনুভব করে বিজয় দিবসের পর দিনই হাসপাতালে ভর্তি হন। সপ্তাহ দুয়েক হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে থেকে বাইপাস সার্জারি হয় ২৮ ডিসেম্বর। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বাসায় আসেন। চিকিৎসকের পরামর্শে এখন সীমিত পরিসরে শুভাকাঙ্খীদের সঙ্গে দেখা করছেন।

সালাউদ্দিনকে কাছ থেকে দেখে পাপনের পর্যবেক্ষণ, ‘তিনি যখন অসুস্থ তখন আমি নির্বাচনী ব্যস্ততায় ছিলাম। এরপর ফুটবল ফেডারেশন যখন আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তখন তার খোজ নিয়েছি। মাঝে আমি এসিসির সভায় দেশের বাইরে ছিলাম। পরশু দিন যখন শুনলাম এখন সাক্ষাৎ করা যাবে। তখনই বলেছি,‌ ‘পরশু (আজ) দিন আজ যাব। আমি তো আর ডাক্তার না। দেখে ভালো লাগলো হাঁটাচলা করছেন। সুস্থই লেগেছে। তবে এটা সঠিক বড় অপারেশন হয়েছে। রিহ্যাব দরকার আছে।’

ক্রীড়া মন্ত্রী হয়ে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ফেডারেশনের সঙ্গে বসেছেন নাজমুল হাসান পাপন। আগামী সপ্তাহে আবার অন্য ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে বসবেন। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ অবদান রয়েছে সরকারি অনেক সংস্থার। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো খেলা থেকে ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। ফুটবলে নেই অগ্রণী ব্যাংক, হকিতে না থাকার সম্ভাবনা সোনালী ব্যাংকের। তাদের ক্রীড়াঙ্গনে ধরে রাখতে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কোনো উদ্যোগ থাকবে কিনা এই প্রসঙ্গে পাপন বলেন, ‘আপনি যেটা বলেছেন সেটা গুরুত্বর্পণ তবে অ্যাডভান্সড পর্যায়ের। আগে ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে বসে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে আরো গভীরে যাওয়া যাবে।’

বাংলাদেশে পঞ্চাশটির অধিক ফেডারেশন রয়েছে। সেই ফেডারেশনগুলোর অধিকাংশের সঙ্গে জনসম্পৃক্ততা নেই বলে মনে করেন নতুন ক্রীড়া মন্ত্রী, ‘আমাদের ফেডারেশনের সংখ্যা ৫৫ টির মতো। অনেক ফেডারেশন আছে ৯০ শতাংশ মানুষ হয়তো জানেও না। ফলে ঐ সকল খেলা অনেক চেষ্টার পরেও একটা পর্যায়ে যাওয়া সম্ভব নয়।’ অন্য সকল ফেডারেশনের চেয়ে ফুটবল ফেডারেশনকে সর্বাধিক গুরুত্ব নতুন মন্ত্রীর কন্ঠে, ‘ফুটবল সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। এটা নিঃসন্দেহে এবং এর গুরুত্বও অনেক।’

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সালাউদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে যা বললেন পাপন

পোস্ট হয়েছে : ০৪:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

স্পোর্টস ডেস্ক: হার্টের অস্ত্রোপচার শেষে বাসায় বিশ্রামে আছেন বাফুফের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন আজ বাফুফে রাষ্ট্রপতির বাসায় সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। প্রায় ২০ মিনিটের বৈঠকে চলমান ফুটবল সংকট নিয়েও আলোচনা হয়।

শারীরিক অসুস্থতা ও বিধিনিষেধের কারণে মিডিয়ার সামনে আসেননি ফিফা সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন। বৈঠক শেষে চলে যাওয়ার সময় ক্রীড়ামন্ত্রী নাজাম হাসান বাবুন এ মন্তব্য করেন। গত বছর, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন এবং বিসিবি সভাপতি পাপন অলিম্পিক বাছাইপর্ব খেলতে মিয়ানমারে নারী ফুটবলারদের সফর বাতিল করা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

খেলাধুলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুই ব্যক্তিত্বের মধ্যে সংঘর্ষের পর একটি “স্নায়ু যুদ্ধ” বিরাজ করে। আজকের বৈঠকের পর পাপন বলেন, এত বছরের সম্পর্ক একদিনে নষ্ট হয় না।

বর্তমান প্রজন্মের কাছে সালাউদ্দিনের পরিচয় বাফুফে সভাপতি হলেও ক্রীড়াঙ্গন ও দেশের অধিকাংশ মানুষের হৃদয়ে ফুটবলার সালাউদ্দিনের চিত্রই বড় করে আঁকা। পাপনও এর ব্যতিক্রম নন, ‘ছোটবেলা মাঠেই যেতাম উনার খেলা দেখতে। উনার মতো কিংবদন্তী ফুটবলার তো দেশে নেই।’ দুই জনই এখন দুই খেলার শীর্ষ দায়িত্বে। একজনের মন্তব্যে আরেক জন মনঃক্ষুণ্ন হলেও সেখানেই শেষ বলে জানালেন পাপন, ‘অনেক কথায় উনি হার্ট (আহত) হতে পারেন, আমি হতে পারি। একটা রিঅ্যাকশন (প্রতিক্রিয়া) দিলাম। সেটা ওখানেই শেষ, কিন্তু সম্পর্ক তো শেষ হবে না।’

আজ সালাউদ্দিনের বাসায় ব্যক্তিগত আলোচনার মধ্যেও ফুটবলের কিছু সমস্যার কথা এসেছে। পাপন এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘কিছু সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উনি সুস্থ হয়ে একেবারে ফিরলে দেখব, এর মধ্যেও বলেছি কিছু কাগজপত্র পাঠাতে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে যেন আর সময় ক্ষেপণ না হয় এবং বিকল্প খেলার জায়গা করা যায় কিনা সেটাও আমার বিবেচনায় রয়েছে।’ চলতি সপ্তাহেই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম পরিদর্শনে যাবেন পাপন।

বাফুফে সভাপতি হৃদযন্ত্রের সমস্যা অনুভব করে বিজয় দিবসের পর দিনই হাসপাতালে ভর্তি হন। সপ্তাহ দুয়েক হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে থেকে বাইপাস সার্জারি হয় ২৮ ডিসেম্বর। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বাসায় আসেন। চিকিৎসকের পরামর্শে এখন সীমিত পরিসরে শুভাকাঙ্খীদের সঙ্গে দেখা করছেন।

সালাউদ্দিনকে কাছ থেকে দেখে পাপনের পর্যবেক্ষণ, ‘তিনি যখন অসুস্থ তখন আমি নির্বাচনী ব্যস্ততায় ছিলাম। এরপর ফুটবল ফেডারেশন যখন আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তখন তার খোজ নিয়েছি। মাঝে আমি এসিসির সভায় দেশের বাইরে ছিলাম। পরশু দিন যখন শুনলাম এখন সাক্ষাৎ করা যাবে। তখনই বলেছি,‌ ‘পরশু (আজ) দিন আজ যাব। আমি তো আর ডাক্তার না। দেখে ভালো লাগলো হাঁটাচলা করছেন। সুস্থই লেগেছে। তবে এটা সঠিক বড় অপারেশন হয়েছে। রিহ্যাব দরকার আছে।’

ক্রীড়া মন্ত্রী হয়ে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ফেডারেশনের সঙ্গে বসেছেন নাজমুল হাসান পাপন। আগামী সপ্তাহে আবার অন্য ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে বসবেন। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ অবদান রয়েছে সরকারি অনেক সংস্থার। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো খেলা থেকে ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। ফুটবলে নেই অগ্রণী ব্যাংক, হকিতে না থাকার সম্ভাবনা সোনালী ব্যাংকের। তাদের ক্রীড়াঙ্গনে ধরে রাখতে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কোনো উদ্যোগ থাকবে কিনা এই প্রসঙ্গে পাপন বলেন, ‘আপনি যেটা বলেছেন সেটা গুরুত্বর্পণ তবে অ্যাডভান্সড পর্যায়ের। আগে ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে বসে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে আরো গভীরে যাওয়া যাবে।’

বাংলাদেশে পঞ্চাশটির অধিক ফেডারেশন রয়েছে। সেই ফেডারেশনগুলোর অধিকাংশের সঙ্গে জনসম্পৃক্ততা নেই বলে মনে করেন নতুন ক্রীড়া মন্ত্রী, ‘আমাদের ফেডারেশনের সংখ্যা ৫৫ টির মতো। অনেক ফেডারেশন আছে ৯০ শতাংশ মানুষ হয়তো জানেও না। ফলে ঐ সকল খেলা অনেক চেষ্টার পরেও একটা পর্যায়ে যাওয়া সম্ভব নয়।’ অন্য সকল ফেডারেশনের চেয়ে ফুটবল ফেডারেশনকে সর্বাধিক গুরুত্ব নতুন মন্ত্রীর কন্ঠে, ‘ফুটবল সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। এটা নিঃসন্দেহে এবং এর গুরুত্বও অনেক।’

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: