ঢাকা , সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাধার চামড়া ব্যবসা নিষিদ্ধ ৫৫ দেশে

  • পোস্ট হয়েছে : ০৭:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • 8

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাধার চামড়া ব্যবসা নিষিদ্ধ করেছে আফ্রিকান ইউনিয়ন। প্রাণীকল্যাণ দাতব্য সংস্থাগুলো বিতর্কিত এই ব্যবসার ওপর আফ্রিকাব্যাপী নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়েছে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে আফ্রিকা মহাদেশের ৫৫টি দেশে চামড়ার জন্য গাধা জবাই করা অবৈধ হয়ে পড়বে।

রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ইথিওপিয়ায় আফ্রিকান ইউনিয়নের শীর্ষ সম্মেলন শেষে আফ্রিকার রাষ্ট্র নেতারা এই নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করেন। গাধার চামড়া দিয়ে চীনে ‘ইজিয়াও’ নামক ঐতিহ্যবাহী একটি ওষুধ তৈরি করা হয়। দেশটিতে এই ওষুধের অনেক চাহিদা রয়েছে।

দাতব্য সংস্থা ডাংকি স্যাংচুয়ারি গাধার চামড়ার বাণিজ্যকে ‘নিষ্ঠুর’ বলে অভিহিত করেছে। সংস্থাটি বলেছে, এই ব্যবসা সারা বিশ্বে, বিশেষ করে আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকায় গাধার সংখ্যায় ধস নামিয়েছে। সংস্থাটির তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী কমপক্ষে ৫.৯ মিলিয়ন গাধা প্রতি বছর ‘ইজিয়াও’র চাহিদা মেটানোর জন্য জবাই করা হয়।

‘ইজিয়াও’ ওষুধটিকে অনেকেই বার্ধক্যবিরোধী ও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি বলে বিশ্বাস করেন, যদিও এটি অপ্রমাণিত। চীনের যে কোম্পানিগুলো এই ওষুধ তৈরি করে তারা আগে চীনে পাওয়া গাধার চামড়া ব্যবহার করতো। কিন্তু পরবর্তীতে দেশটিতে যখন গাধার সংখ্যা কমে যায়, তখন তারা বিদেশের দিকে তাকিয়ে থাকে।

কেনিয়ার ডাংকি স্যাংচুয়ারির কর্মকর্তা ডা. সলোমন ওনিয়াঙ্গো বলেন, ‘আফ্রিকার দেশগুলো গাধার চামড়ার ব্যবসাকে প্রথমে একটি সুযোগ হিসেবে দেখেছিল এবং সরকার অনুমোদিত অনেক কসাইখানা খোলা হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘কিন্তু এখানে (কেনিয়াতে) ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে, আমাদের প্রায় অর্ধেক গাধা চামড়ার ব্যবসার কারণে হত্যার শিকার হয়েছে।’

ডা. ওনিয়াঙ্গোর মতে, ‘বিতর্কিত এই ব্যবসায় নিষেধাজ্ঞার ফলে গাধা এবং এর ওপর নির্ভরশীল লাখ লাখ মানুষের জীবিকা রক্ষা পাবে।’

আফ্রিকাতে বিশ্বের ৫৩ মিলিয়ন গাধার মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ পাওয়া যায়। দরিদ্র ও গ্রামীণ সম্প্রদায়ের মানুষজন পানি, খাবার ও অন্যান্য পণ্য বহনের জন্য গাধার ওপর নির্ভরশীল। চামড়ার উচ্চ চাহিদা এবং উচ্চ মূল্যের জন্য আফ্রিকায় গাধা চুরির ঘটনা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।

বির্তকিত এই ব্যবসার ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘটনায় পূর্ব আফ্রিকার প্রাণীকল্যাণ দাতব্য সংস্থা দ্য ব্রুকের আঞ্চলিক পরিচালক রাফেল কিনোটি বলেন, ‘আফ্রিকার সেই সম্প্রদায়ের জন্য যারা অনাদিকাল থেকে গাধা থেকে উপকৃত হয়েছেন, তাদের জন্য এটি একটি দুর্দান্ত মুহূর্ত।’

তার মতে, চামড়ার জন্য গাধা জবাই আফ্রিকার জীবিকা ধ্বংস করেছে। মহাদেশটির সংস্কৃতি, জীববৈচিত্র্য ও পরিচয় কেড়ে নিয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/বিএইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

গাধার চামড়া ব্যবসা নিষিদ্ধ ৫৫ দেশে

পোস্ট হয়েছে : ০৭:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাধার চামড়া ব্যবসা নিষিদ্ধ করেছে আফ্রিকান ইউনিয়ন। প্রাণীকল্যাণ দাতব্য সংস্থাগুলো বিতর্কিত এই ব্যবসার ওপর আফ্রিকাব্যাপী নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়েছে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে আফ্রিকা মহাদেশের ৫৫টি দেশে চামড়ার জন্য গাধা জবাই করা অবৈধ হয়ে পড়বে।

রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ইথিওপিয়ায় আফ্রিকান ইউনিয়নের শীর্ষ সম্মেলন শেষে আফ্রিকার রাষ্ট্র নেতারা এই নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করেন। গাধার চামড়া দিয়ে চীনে ‘ইজিয়াও’ নামক ঐতিহ্যবাহী একটি ওষুধ তৈরি করা হয়। দেশটিতে এই ওষুধের অনেক চাহিদা রয়েছে।

দাতব্য সংস্থা ডাংকি স্যাংচুয়ারি গাধার চামড়ার বাণিজ্যকে ‘নিষ্ঠুর’ বলে অভিহিত করেছে। সংস্থাটি বলেছে, এই ব্যবসা সারা বিশ্বে, বিশেষ করে আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকায় গাধার সংখ্যায় ধস নামিয়েছে। সংস্থাটির তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী কমপক্ষে ৫.৯ মিলিয়ন গাধা প্রতি বছর ‘ইজিয়াও’র চাহিদা মেটানোর জন্য জবাই করা হয়।

‘ইজিয়াও’ ওষুধটিকে অনেকেই বার্ধক্যবিরোধী ও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি বলে বিশ্বাস করেন, যদিও এটি অপ্রমাণিত। চীনের যে কোম্পানিগুলো এই ওষুধ তৈরি করে তারা আগে চীনে পাওয়া গাধার চামড়া ব্যবহার করতো। কিন্তু পরবর্তীতে দেশটিতে যখন গাধার সংখ্যা কমে যায়, তখন তারা বিদেশের দিকে তাকিয়ে থাকে।

কেনিয়ার ডাংকি স্যাংচুয়ারির কর্মকর্তা ডা. সলোমন ওনিয়াঙ্গো বলেন, ‘আফ্রিকার দেশগুলো গাধার চামড়ার ব্যবসাকে প্রথমে একটি সুযোগ হিসেবে দেখেছিল এবং সরকার অনুমোদিত অনেক কসাইখানা খোলা হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘কিন্তু এখানে (কেনিয়াতে) ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে, আমাদের প্রায় অর্ধেক গাধা চামড়ার ব্যবসার কারণে হত্যার শিকার হয়েছে।’

ডা. ওনিয়াঙ্গোর মতে, ‘বিতর্কিত এই ব্যবসায় নিষেধাজ্ঞার ফলে গাধা এবং এর ওপর নির্ভরশীল লাখ লাখ মানুষের জীবিকা রক্ষা পাবে।’

আফ্রিকাতে বিশ্বের ৫৩ মিলিয়ন গাধার মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ পাওয়া যায়। দরিদ্র ও গ্রামীণ সম্প্রদায়ের মানুষজন পানি, খাবার ও অন্যান্য পণ্য বহনের জন্য গাধার ওপর নির্ভরশীল। চামড়ার উচ্চ চাহিদা এবং উচ্চ মূল্যের জন্য আফ্রিকায় গাধা চুরির ঘটনা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।

বির্তকিত এই ব্যবসার ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘটনায় পূর্ব আফ্রিকার প্রাণীকল্যাণ দাতব্য সংস্থা দ্য ব্রুকের আঞ্চলিক পরিচালক রাফেল কিনোটি বলেন, ‘আফ্রিকার সেই সম্প্রদায়ের জন্য যারা অনাদিকাল থেকে গাধা থেকে উপকৃত হয়েছেন, তাদের জন্য এটি একটি দুর্দান্ত মুহূর্ত।’

তার মতে, চামড়ার জন্য গাধা জবাই আফ্রিকার জীবিকা ধ্বংস করেছে। মহাদেশটির সংস্কৃতি, জীববৈচিত্র্য ও পরিচয় কেড়ে নিয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/বিএইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: