ঢাকা , বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগে গাফিলতি খুঁজলে বেইলি রোডের ঘটনা ঘটত না : ডিবি প্রধান

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ মার্চ ২০২৪
  • 12

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, একটা ঘটনা ঘটার পর আমরা গাফিলতি খুঁজি। কিন্তু নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে অসংখ্য জায়গায় তো রেস্টুরেন্ট ও ভবন করা হচ্ছে। এগুলোর আমরা খোঁজ-খবর নেই না। আগে থেকে দায়িত্বরতরা যদি খোঁজ-খবর নিতো, তাহলে নিমতলী, বঙ্গবাজার, এফআর টাওয়ার কিংবা বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজের ঘটনা ঘটত না।

সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

হারুন অর রশীদ বলেন, আমরাও দেখি, আপনারাও দেখেন। মোড়ের মধ্যে বড় দুটো বিল্ডিংয়ে এতোগুলো রেস্টুরেন্ট চালানোর মতো আদৌ পরিবেশ বা অনুমতি লাইসেন্স ছিল কি-না! ২০ শতাংশ ছাড়ে কাচ্চি খাওয়াচ্ছে…। ছোট একটা জায়গায় এতোগুলো মানুষ, যেখানে ২০ জন বসতে পারে না, সেখানে ৫০ জন মানুষ কাচ্চি খাচ্ছে। দুর্ঘটনা ঘটলে এই মানুষগুলো কীভাবে বের হবে? সিঁড়ির ওপরে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা হয়েছে। একটা ট্রেড লাইসেন্স আছে কি না… ফায়ার সার্ভিস আদৌ যথাযথ তদারকি করছে কি-না আমার জানা নেই।

তিনি বলেন, রেস্টুরেন্টের রুমগুলোর কথা কী বলবো! এমনভাবে ডেকোরেশন করেছে যে, ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা রাখা হয়নি, বাতাস যদি আসা-যাওয়া করত, তাহলে বেইলি রোডে ওই ভবনে এত মানুষ মরত না। আবার সেখানকার ছাদকেও রেস্টুরেন্ট বানিয়ে ফেলা হয়েছে। সেটিও যদি খালি থাকত, তাহলে মানুষ বাঁচার হয়ত পথ পেতো বা উদ্ধারের একটা জায়গা পাওয়া যেত। মানুষের যাওয়ার জায়গাও নেই, আবার সিঁড়িও খালি নেই… সেখানে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা। এ রকম অবস্থা তো শুধু বেইলি রোডেই নয়, এ রকম ভবন তো পুরো ঢাকা শহরেই আছে।

তিনি আরও বলেন, যে সংস্থা বা যার যে দায়দায়িত্ব, খেয়াল লাখা উচিত ছিল। ওই ভবনের যিনি ম্যানেজার, তিনি কী খবর রাখছিলেন! সেটিও আমরা জানি না। এই যে ৪৬ জন মারা গেলেন, মায়ের বুক খালি হলো, একজন পুলিশ কর্মকর্তার বুক খালি হলো, তার মেয়ে মেধাবী ছাত্রী। যার সন্তান মারা যায় সেই শোক বোঝে।

ডিবি প্রধান বলেন, আমরা মারা যাওয়ার পর শোক করি, কান্না করি ও জ্ঞান দেই। পরবর্তী সময়ে আরও যেসব অসংলগ্ন জায়গা বা অসংগতি আছে, সেখানে যদি নজর দিতাম, প্রতিটি সংস্থার যে দায়িত্ব… তা যদি পালন করতাম, তাহলে হয়ত নিমতলী, বঙ্গবাজার বা এফআর টাওয়ার কিংবা বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজের ঘটনা ঘটত না।

ডিএমপি অসংলগ্ন বা অসঙ্গতিপূর্ণ ভবন ও রেস্টুরেন্টে নজর রাখছে উল্লেখ করে ডিএমপির এ অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আমরা এখন ডিএমপির থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ রাজধানীর বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় নজর রাখছি। আমরাও চাই সবার মধ্যে স্বচ্ছতা আসুক। আমাদের টিম যেসব জায়গায় কাজ করছে, দেখছে যে, ঢাকা শহরে বিভিন্ন ভবন বিশেষ করে রেস্টুরেন্টের অগ্নিনিরাপত্তা ও পর্যাপ্ত পথ আছে কি-না… দুর্ঘটনা ঘটলে জরুরিভাবে বের হওয়ার রাস্তা আছে কি-না।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

আগে গাফিলতি খুঁজলে বেইলি রোডের ঘটনা ঘটত না : ডিবি প্রধান

পোস্ট হয়েছে : ০৫:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ মার্চ ২০২৪

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, একটা ঘটনা ঘটার পর আমরা গাফিলতি খুঁজি। কিন্তু নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে অসংখ্য জায়গায় তো রেস্টুরেন্ট ও ভবন করা হচ্ছে। এগুলোর আমরা খোঁজ-খবর নেই না। আগে থেকে দায়িত্বরতরা যদি খোঁজ-খবর নিতো, তাহলে নিমতলী, বঙ্গবাজার, এফআর টাওয়ার কিংবা বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজের ঘটনা ঘটত না।

সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

হারুন অর রশীদ বলেন, আমরাও দেখি, আপনারাও দেখেন। মোড়ের মধ্যে বড় দুটো বিল্ডিংয়ে এতোগুলো রেস্টুরেন্ট চালানোর মতো আদৌ পরিবেশ বা অনুমতি লাইসেন্স ছিল কি-না! ২০ শতাংশ ছাড়ে কাচ্চি খাওয়াচ্ছে…। ছোট একটা জায়গায় এতোগুলো মানুষ, যেখানে ২০ জন বসতে পারে না, সেখানে ৫০ জন মানুষ কাচ্চি খাচ্ছে। দুর্ঘটনা ঘটলে এই মানুষগুলো কীভাবে বের হবে? সিঁড়ির ওপরে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা হয়েছে। একটা ট্রেড লাইসেন্স আছে কি না… ফায়ার সার্ভিস আদৌ যথাযথ তদারকি করছে কি-না আমার জানা নেই।

তিনি বলেন, রেস্টুরেন্টের রুমগুলোর কথা কী বলবো! এমনভাবে ডেকোরেশন করেছে যে, ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা রাখা হয়নি, বাতাস যদি আসা-যাওয়া করত, তাহলে বেইলি রোডে ওই ভবনে এত মানুষ মরত না। আবার সেখানকার ছাদকেও রেস্টুরেন্ট বানিয়ে ফেলা হয়েছে। সেটিও যদি খালি থাকত, তাহলে মানুষ বাঁচার হয়ত পথ পেতো বা উদ্ধারের একটা জায়গা পাওয়া যেত। মানুষের যাওয়ার জায়গাও নেই, আবার সিঁড়িও খালি নেই… সেখানে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা। এ রকম অবস্থা তো শুধু বেইলি রোডেই নয়, এ রকম ভবন তো পুরো ঢাকা শহরেই আছে।

তিনি আরও বলেন, যে সংস্থা বা যার যে দায়দায়িত্ব, খেয়াল লাখা উচিত ছিল। ওই ভবনের যিনি ম্যানেজার, তিনি কী খবর রাখছিলেন! সেটিও আমরা জানি না। এই যে ৪৬ জন মারা গেলেন, মায়ের বুক খালি হলো, একজন পুলিশ কর্মকর্তার বুক খালি হলো, তার মেয়ে মেধাবী ছাত্রী। যার সন্তান মারা যায় সেই শোক বোঝে।

ডিবি প্রধান বলেন, আমরা মারা যাওয়ার পর শোক করি, কান্না করি ও জ্ঞান দেই। পরবর্তী সময়ে আরও যেসব অসংলগ্ন জায়গা বা অসংগতি আছে, সেখানে যদি নজর দিতাম, প্রতিটি সংস্থার যে দায়িত্ব… তা যদি পালন করতাম, তাহলে হয়ত নিমতলী, বঙ্গবাজার বা এফআর টাওয়ার কিংবা বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজের ঘটনা ঘটত না।

ডিএমপি অসংলগ্ন বা অসঙ্গতিপূর্ণ ভবন ও রেস্টুরেন্টে নজর রাখছে উল্লেখ করে ডিএমপির এ অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আমরা এখন ডিএমপির থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ রাজধানীর বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় নজর রাখছি। আমরাও চাই সবার মধ্যে স্বচ্ছতা আসুক। আমাদের টিম যেসব জায়গায় কাজ করছে, দেখছে যে, ঢাকা শহরে বিভিন্ন ভবন বিশেষ করে রেস্টুরেন্টের অগ্নিনিরাপত্তা ও পর্যাপ্ত পথ আছে কি-না… দুর্ঘটনা ঘটলে জরুরিভাবে বের হওয়ার রাস্তা আছে কি-না।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: