ঢাকা , শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভ্যাপসা গরমে বিপাকে শ্রমজীবী মানুষ

  • পোস্ট হয়েছে : ০৭:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪
  • 15

যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম। পেশায় একজন রিকশাচালক। জীবিকার তাগিদে সকালবেলা রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন। ততক্ষণে বাড়তে শুরু করেছে রোদের তীব্রতা। যাত্রাবাড়ী থেকে টিকাটুলী এরপর সেখান থেকে আবারও যাত্রী নিয়ে পল্টন মোড়ে। তীব্র রোদে আর এগোতে পারছেন না, তাই ক্লান্তি ভরা শরীর নিয়ে রিকশায় বসে ঝিমাচ্ছেন।

রোববার (২১ এপ্রিল) রাজধানীর পল্টন মোড়ে কথা হয় শহিদুলের সঙ্গে। গরমে কেমন আছেন জানতে চাইলে বলেন, গরমে মাথা ঘুরাচ্ছে। একটা ভাড়া টানলেই শরীর একদম ক্লান্ত হয়ে যায়। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে রিকশা চালাই। বড় কোনো ভাড়া টানতে পারি না। ২০ থেকে ৬০ টাকার ভাড়া টানি। গরম না থাকলে রিকশায় তিনজন নিয়েও চলতাম এখন দুইজন যাত্রী নিয়ে চালাতে কষ্ট। বেশিরভাগ সময় একজন নিয়ে চালাই। আগে দিনে ১২ থেকে ১৪টা ভাড়া টানতাম এখন ৭ থেকে ৮টার বেশি পারি না। এক ঘণ্টা রিকশা চালালে আবার এক ঘণ্টা রেস্ট নিতে হয়।

এই রিকশাচালক আরও বলেন, গত এক সপ্তাহ থেকে দূরের কোনো ভাড়া কিংবা একজনের বেশি যাত্রী টানতে পারছেন না তিনি। গরমে বেশি ভাড়া টানতে না পারায় আগের চেয়ে আয় রোজগার কমেছে, অন্যদিকে খরচও বেড়েছে নিত্যদিনের।

রাজধানীর জিরো পয়েন্ট মোড়ে কথা হয় ষাটোর্ধ্ব হাসমত উল্লাহর সঙ্গে। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, সকালবেলা রোদ ওঠার আগে ভাড়া টানা যায়। বেলা গড়িয়ে রোদ বাড়ার পর আর পারি না। খুব কষ্ট হয়। যতক্ষণ চালাই, মাথায় গামছা বেঁধে চালাই। এদিকে, গরমে মানুষও বের হচ্ছে কম। যারাই আছে, ভাড়া আছে ভালো। কিন্ত গরমে শরীর আর পা চলে না।

শুধু রাজধানী নয় সারাদেশে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় ভ্যাপসা গরমে জনজীবনে অস্বস্তি বিরাজ করছে। জীবিকার তাগিদে তীব্র রোদে পুড়ে কাজ করতে হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষকে।

শুধু রিকশাচালক নয় তীব্র গরমে ভোগান্তিতে রয়েছেন ভ্যানচালক থেকে শুরু করে হকার, রাইডারসহ পথচারীরা।

শান্তিনগর মোড়ে কথা পাঠাওচালক রাইশা ইব্রাহিমের সঙ্গে। জাগো নিউকে তিনি বলেন, আগে দিনে ৭ থেকে ৮টি ট্রিপ হলেও এখন হয় ৪ থেকে ৫টা হয়। গরমে দুপুরে মানুষ কম। জ্যামের মধ্যে পড়লে রোদের মধ্যে বসে থেকে মানুষ বিরক্ত হয়ে। হেলমেট ব্যবহার করে পেছনে বসে থাকা কষ্ট তাই অনেক যাত্রী কমেছে। বিকেল বা সন্ধ্যার সময় কিছু ভাড়া পাই।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, পাবনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী জেলাসহ খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং ঢাকা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, ফেনী, কক্সবাজার, চাঁদপুর ও রাঙ্গামাটি জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ভ্যাপসা গরমে বিপাকে শ্রমজীবী মানুষ

পোস্ট হয়েছে : ০৭:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪

যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম। পেশায় একজন রিকশাচালক। জীবিকার তাগিদে সকালবেলা রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন। ততক্ষণে বাড়তে শুরু করেছে রোদের তীব্রতা। যাত্রাবাড়ী থেকে টিকাটুলী এরপর সেখান থেকে আবারও যাত্রী নিয়ে পল্টন মোড়ে। তীব্র রোদে আর এগোতে পারছেন না, তাই ক্লান্তি ভরা শরীর নিয়ে রিকশায় বসে ঝিমাচ্ছেন।

রোববার (২১ এপ্রিল) রাজধানীর পল্টন মোড়ে কথা হয় শহিদুলের সঙ্গে। গরমে কেমন আছেন জানতে চাইলে বলেন, গরমে মাথা ঘুরাচ্ছে। একটা ভাড়া টানলেই শরীর একদম ক্লান্ত হয়ে যায়। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে রিকশা চালাই। বড় কোনো ভাড়া টানতে পারি না। ২০ থেকে ৬০ টাকার ভাড়া টানি। গরম না থাকলে রিকশায় তিনজন নিয়েও চলতাম এখন দুইজন যাত্রী নিয়ে চালাতে কষ্ট। বেশিরভাগ সময় একজন নিয়ে চালাই। আগে দিনে ১২ থেকে ১৪টা ভাড়া টানতাম এখন ৭ থেকে ৮টার বেশি পারি না। এক ঘণ্টা রিকশা চালালে আবার এক ঘণ্টা রেস্ট নিতে হয়।

এই রিকশাচালক আরও বলেন, গত এক সপ্তাহ থেকে দূরের কোনো ভাড়া কিংবা একজনের বেশি যাত্রী টানতে পারছেন না তিনি। গরমে বেশি ভাড়া টানতে না পারায় আগের চেয়ে আয় রোজগার কমেছে, অন্যদিকে খরচও বেড়েছে নিত্যদিনের।

রাজধানীর জিরো পয়েন্ট মোড়ে কথা হয় ষাটোর্ধ্ব হাসমত উল্লাহর সঙ্গে। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, সকালবেলা রোদ ওঠার আগে ভাড়া টানা যায়। বেলা গড়িয়ে রোদ বাড়ার পর আর পারি না। খুব কষ্ট হয়। যতক্ষণ চালাই, মাথায় গামছা বেঁধে চালাই। এদিকে, গরমে মানুষও বের হচ্ছে কম। যারাই আছে, ভাড়া আছে ভালো। কিন্ত গরমে শরীর আর পা চলে না।

শুধু রাজধানী নয় সারাদেশে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় ভ্যাপসা গরমে জনজীবনে অস্বস্তি বিরাজ করছে। জীবিকার তাগিদে তীব্র রোদে পুড়ে কাজ করতে হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষকে।

শুধু রিকশাচালক নয় তীব্র গরমে ভোগান্তিতে রয়েছেন ভ্যানচালক থেকে শুরু করে হকার, রাইডারসহ পথচারীরা।

শান্তিনগর মোড়ে কথা পাঠাওচালক রাইশা ইব্রাহিমের সঙ্গে। জাগো নিউকে তিনি বলেন, আগে দিনে ৭ থেকে ৮টি ট্রিপ হলেও এখন হয় ৪ থেকে ৫টা হয়। গরমে দুপুরে মানুষ কম। জ্যামের মধ্যে পড়লে রোদের মধ্যে বসে থেকে মানুষ বিরক্ত হয়ে। হেলমেট ব্যবহার করে পেছনে বসে থাকা কষ্ট তাই অনেক যাত্রী কমেছে। বিকেল বা সন্ধ্যার সময় কিছু ভাড়া পাই।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, পাবনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী জেলাসহ খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং ঢাকা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, ফেনী, কক্সবাজার, চাঁদপুর ও রাঙ্গামাটি জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: