ঢাকা , শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তীব্র তাপপ্রবাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও রমরমা কোচিং বাণিজ্য

  • পোস্ট হয়েছে : ০৭:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪
  • 48

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: সারাদেশে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। অতি প্রয়োজন ছাড়া দিনের বেলায় বাইরে চলাফেরা না করার পরামর্শ দিচ্ছেন আবহাওয়াবিদেরা। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। অথচ পুরোদমে চলছে কোচিং সেন্টারগুলো। স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের ব্যাচ করে প্রাইভেট পড়ানোও বন্ধ নেই। ফলে তীব্র গরমের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে বাইরে বের হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

অভিভাবকরা বলছেন, কোচিং ও প্রাইভেটে না গেলেও মাস গেলেই ফি গুনতে হবে। টাকা খরচ করে সন্তানদের ঘরে বসিয়ে রাখতে চাইছেন না তারা। এজন্য শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ে যেতে বাধ্য করছেন অভিভাবকরাও।

অন্যদিকে কোচিং সেন্টারগুলো বলছে, রমজান ও ঈদের ছুটির কারণে দীর্ঘদিন কোচিং বন্ধ ছিল। অভিভাবকরাই এখন ক্লাস চালু করতে বলছেন। তাছাড়া বড় কোচিং সেন্টারগুলোর ক্লাসরুমে এসি থাকায় গরমে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হচ্ছে না। এজন্য তারা কোচিংয়ে ক্লাস চালাচ্ছেন।

রাজধানীসহ সারাদেশে শাখা রয়েছে উদ্ভাস কোচিং সেন্টারের। ঢাকায় ১৭টিসহ বর্তমানে সারাদেশে উদ্ভাসের শাখা ৮৯টি। রোববার (২১ এপ্রিল) থেকে এ কোচিং সেন্টারের সব শাখায় পুরোদমে ক্লাস শুরু হয়েছে। স্কুলে না গেলেও শিক্ষার্থীরা কোচিংয়ে যাচ্ছে। উপস্থিতিও বেশ ভালো বলেই জানিয়েছেন কোচিং সেন্টারের শিক্ষক-কর্মচারীরা।

উদ্ভাস কোচিং সেন্টারের রাজধানীর শান্তিনগর শাখার কো-অর্ডিনেটর রাকিব জানান, তার শাখায় চারটি ব্যাচে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। রোববার ছুটির পর প্রথম দিন ক্লাস হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা সব আশপাশের হওয়ায় প্রায় সবাই কোচিংয়ের ক্লাসে এসেছেন।

খিলগাঁও শাখার ইনচার্জ ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মনির হোসাইন। তিনি বলেন, ‘অনেক দিন বন্ধ ছিল কোচিং। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ। অনেক অভিভাবকই আমাদের বলছেন—যেন কোচিংয়ে পড়াশোনাটা চালানো হয়। তারপরও যদি উদ্ভাস কর্তৃপক্ষ কোচিং বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়, সেটা জানালে আমার শাখাও বন্ধ থাকবে।’

তীব্র গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। তার মধ্যে কোচিং কেন খোলা রাখা হচ্ছে, এমন প্রশ্নে উদ্ভাসের ডেপুটি চিফ ম্যানেজার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সারাদেশে আমাদের যত শাখা আছে, তার সবগুলোতে ক্লাসরুমে এসি রয়েছে। নিজস্ব জেনারেটর ব্যবস্থা আছে। লোডশেডিং হলেও শিক্ষার্থীদের কোনো ভোগান্তি হবে না। এজন্য আমরা গরমের মধ্যেও ক্লাস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরবর্তী সময়ে অন্য কোনো সিদ্ধান্ত হলে সেটা জানিয়ে দেওয়া হবে।’

উদ্ভাসের শান্তিনগর শাখার নবম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থীর বাবা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘অনেক টাকা খরচা করে সন্তানকে ভর্তি করিয়েছি। ঈদের সময় অনেক দিন ছুটি ছিল। কিন্তু মাসিক বেতন ঠিকই পরিশোধ করতে হয়েছে। এখন তারা কোচিং খোলা রেখেছেন। যদি ছেলেকে না-ও পাঠাই, মাস শেষে বেতন দিতেই হবে। মানে কোচিংয়ে না গেলেও ফি গুনতে হবে। এজন্য কোচিংয়ে পাঠাচ্ছি।’

কোচিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আরেফিন। তার পরিচালিত কোচিং সেন্টার বাংলাদেশ ক্যাডেট অ্যাকাডেমিও বর্তমানে খোলা। ঈদের ছুটির পর ১৬ এপ্রিল থেকে তার কোচিং সেন্টারে ক্লাস চলছে। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় তার চারটি শাখা রয়েছে। সেখানে এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে।

মাহবুব আরেফিন বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আর কোচিংয়ের পরিবেশ এক নয়। অধিকাংশ কোচিং সেন্টারে এখন এসি রয়েছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে আইপিএস রয়েছে। তাছাড়া বেশিরভাগ কোচিং সেন্টার সকালে এবং সন্ধ্যার দিকে চালানো হচ্ছে। এতে যে সময়টাতে বেশি তাপপ্রবাহ থাকে, তখন শিক্ষার্থীদের বাইরে বের হতে হচ্ছে না।’

কোচিং অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত বা এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘না। আমাদের বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত নেই। কেউ যদি নিজ উদ্যোগে বন্ধ রাখে সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।’

কোচিং সেন্টারের মতোই পুরোদমে চালু রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ব্যাচভিত্তিক প্রাইভেট পড়ানো। রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলসহ নামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ব্যাচভিত্তিক প্রাইভেট পড়িয়ে থাকেন।

২৬ দিনের ছুটির পর শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি চিন্তা করে স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা হলেও শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ করেননি। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তবে কোনো শিক্ষকই প্রাইভেট চালু রাখার কথা স্বীকার করেননি। অনেকে দাবি করেছেন, তিনি প্রাইভেট পড়ানই না।

ব্যাচভিত্তিক প্রাইভেট পড়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের নিয়ে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপ রয়েছে শিক্ষকদের। সেখানে তীব্র গরমের মধ্যেও ‘প্রাইভেট পড়ানো চলবে’ বলে বার্তা পাঠিয়েছেন শিক্ষকরা। এমন কয়েকটি বার্তার স্ক্রিনশট হাতে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে ওই শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা তা অস্বীকার করেছেন।

কোচিং সেন্টারের মতো রাজধানীর কিছু কিন্ডারগার্টেন স্কুলও তীব্র এ গরমে চালু রাখা হয়েছে। রাজধানীর উত্তরবাড্ডা, রামপুরা, উলন রোড, মহাখালী ও মিরপুর এলাকার বেশ কিছু কিন্ডারগার্টেনে মর্নিং শিফট করে ক্লাস নেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

রামপুরার উলান রোডের সপ্তবর্ণ বিদ্যা নিকেতনের পরিচালক মারুখা খান বলেন, ‘আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা সব আশপাশের। ক্লাস শুরু হয় সকাল সাড়ে ৭টা থেকে। সাড়ে ১০টায় শেষ। গরম বেশি পড়ার আগেই স্কুল ছুটি হয়ে যাচ্ছে। ফলে শিশুদের সমস্যা হচ্ছে না।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘কোচিং সেন্টার চালু থাকলে সেগুলো নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ব্যবস্থা নেবে। তবে শিক্ষকরা যদি কোচিং করান বা বাসায় ব্যাচভিত্তিক প্রাইভেট পড়ান, সেক্ষেত্রে তথ্য-প্রমাণ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’

বিজনেস আওয়ার/২১ এপ্রিল/ এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

তীব্র তাপপ্রবাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও রমরমা কোচিং বাণিজ্য

পোস্ট হয়েছে : ০৭:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: সারাদেশে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। অতি প্রয়োজন ছাড়া দিনের বেলায় বাইরে চলাফেরা না করার পরামর্শ দিচ্ছেন আবহাওয়াবিদেরা। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। অথচ পুরোদমে চলছে কোচিং সেন্টারগুলো। স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের ব্যাচ করে প্রাইভেট পড়ানোও বন্ধ নেই। ফলে তীব্র গরমের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে বাইরে বের হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

অভিভাবকরা বলছেন, কোচিং ও প্রাইভেটে না গেলেও মাস গেলেই ফি গুনতে হবে। টাকা খরচ করে সন্তানদের ঘরে বসিয়ে রাখতে চাইছেন না তারা। এজন্য শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ে যেতে বাধ্য করছেন অভিভাবকরাও।

অন্যদিকে কোচিং সেন্টারগুলো বলছে, রমজান ও ঈদের ছুটির কারণে দীর্ঘদিন কোচিং বন্ধ ছিল। অভিভাবকরাই এখন ক্লাস চালু করতে বলছেন। তাছাড়া বড় কোচিং সেন্টারগুলোর ক্লাসরুমে এসি থাকায় গরমে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হচ্ছে না। এজন্য তারা কোচিংয়ে ক্লাস চালাচ্ছেন।

রাজধানীসহ সারাদেশে শাখা রয়েছে উদ্ভাস কোচিং সেন্টারের। ঢাকায় ১৭টিসহ বর্তমানে সারাদেশে উদ্ভাসের শাখা ৮৯টি। রোববার (২১ এপ্রিল) থেকে এ কোচিং সেন্টারের সব শাখায় পুরোদমে ক্লাস শুরু হয়েছে। স্কুলে না গেলেও শিক্ষার্থীরা কোচিংয়ে যাচ্ছে। উপস্থিতিও বেশ ভালো বলেই জানিয়েছেন কোচিং সেন্টারের শিক্ষক-কর্মচারীরা।

উদ্ভাস কোচিং সেন্টারের রাজধানীর শান্তিনগর শাখার কো-অর্ডিনেটর রাকিব জানান, তার শাখায় চারটি ব্যাচে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। রোববার ছুটির পর প্রথম দিন ক্লাস হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা সব আশপাশের হওয়ায় প্রায় সবাই কোচিংয়ের ক্লাসে এসেছেন।

খিলগাঁও শাখার ইনচার্জ ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মনির হোসাইন। তিনি বলেন, ‘অনেক দিন বন্ধ ছিল কোচিং। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ। অনেক অভিভাবকই আমাদের বলছেন—যেন কোচিংয়ে পড়াশোনাটা চালানো হয়। তারপরও যদি উদ্ভাস কর্তৃপক্ষ কোচিং বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়, সেটা জানালে আমার শাখাও বন্ধ থাকবে।’

তীব্র গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। তার মধ্যে কোচিং কেন খোলা রাখা হচ্ছে, এমন প্রশ্নে উদ্ভাসের ডেপুটি চিফ ম্যানেজার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সারাদেশে আমাদের যত শাখা আছে, তার সবগুলোতে ক্লাসরুমে এসি রয়েছে। নিজস্ব জেনারেটর ব্যবস্থা আছে। লোডশেডিং হলেও শিক্ষার্থীদের কোনো ভোগান্তি হবে না। এজন্য আমরা গরমের মধ্যেও ক্লাস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরবর্তী সময়ে অন্য কোনো সিদ্ধান্ত হলে সেটা জানিয়ে দেওয়া হবে।’

উদ্ভাসের শান্তিনগর শাখার নবম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থীর বাবা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘অনেক টাকা খরচা করে সন্তানকে ভর্তি করিয়েছি। ঈদের সময় অনেক দিন ছুটি ছিল। কিন্তু মাসিক বেতন ঠিকই পরিশোধ করতে হয়েছে। এখন তারা কোচিং খোলা রেখেছেন। যদি ছেলেকে না-ও পাঠাই, মাস শেষে বেতন দিতেই হবে। মানে কোচিংয়ে না গেলেও ফি গুনতে হবে। এজন্য কোচিংয়ে পাঠাচ্ছি।’

কোচিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আরেফিন। তার পরিচালিত কোচিং সেন্টার বাংলাদেশ ক্যাডেট অ্যাকাডেমিও বর্তমানে খোলা। ঈদের ছুটির পর ১৬ এপ্রিল থেকে তার কোচিং সেন্টারে ক্লাস চলছে। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় তার চারটি শাখা রয়েছে। সেখানে এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে।

মাহবুব আরেফিন বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আর কোচিংয়ের পরিবেশ এক নয়। অধিকাংশ কোচিং সেন্টারে এখন এসি রয়েছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে আইপিএস রয়েছে। তাছাড়া বেশিরভাগ কোচিং সেন্টার সকালে এবং সন্ধ্যার দিকে চালানো হচ্ছে। এতে যে সময়টাতে বেশি তাপপ্রবাহ থাকে, তখন শিক্ষার্থীদের বাইরে বের হতে হচ্ছে না।’

কোচিং অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত বা এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘না। আমাদের বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত নেই। কেউ যদি নিজ উদ্যোগে বন্ধ রাখে সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।’

কোচিং সেন্টারের মতোই পুরোদমে চালু রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ব্যাচভিত্তিক প্রাইভেট পড়ানো। রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলসহ নামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ব্যাচভিত্তিক প্রাইভেট পড়িয়ে থাকেন।

২৬ দিনের ছুটির পর শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি চিন্তা করে স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা হলেও শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ করেননি। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তবে কোনো শিক্ষকই প্রাইভেট চালু রাখার কথা স্বীকার করেননি। অনেকে দাবি করেছেন, তিনি প্রাইভেট পড়ানই না।

ব্যাচভিত্তিক প্রাইভেট পড়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের নিয়ে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপ রয়েছে শিক্ষকদের। সেখানে তীব্র গরমের মধ্যেও ‘প্রাইভেট পড়ানো চলবে’ বলে বার্তা পাঠিয়েছেন শিক্ষকরা। এমন কয়েকটি বার্তার স্ক্রিনশট হাতে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে ওই শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা তা অস্বীকার করেছেন।

কোচিং সেন্টারের মতো রাজধানীর কিছু কিন্ডারগার্টেন স্কুলও তীব্র এ গরমে চালু রাখা হয়েছে। রাজধানীর উত্তরবাড্ডা, রামপুরা, উলন রোড, মহাখালী ও মিরপুর এলাকার বেশ কিছু কিন্ডারগার্টেনে মর্নিং শিফট করে ক্লাস নেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

রামপুরার উলান রোডের সপ্তবর্ণ বিদ্যা নিকেতনের পরিচালক মারুখা খান বলেন, ‘আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা সব আশপাশের। ক্লাস শুরু হয় সকাল সাড়ে ৭টা থেকে। সাড়ে ১০টায় শেষ। গরম বেশি পড়ার আগেই স্কুল ছুটি হয়ে যাচ্ছে। ফলে শিশুদের সমস্যা হচ্ছে না।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘কোচিং সেন্টার চালু থাকলে সেগুলো নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ব্যবস্থা নেবে। তবে শিক্ষকরা যদি কোচিং করান বা বাসায় ব্যাচভিত্তিক প্রাইভেট পড়ান, সেক্ষেত্রে তথ্য-প্রমাণ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’

বিজনেস আওয়ার/২১ এপ্রিল/ এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: