ঢাকা , বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গুম-খুনের শিকার পরিবারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ভাতা দেওয়ার দাবি ফখরুলের

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৪
  • 45

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যারা গুম ও খুন হয়েছেন- তাদের পরিবারের সদস্যদের রাষ্ট্রীয়ভাবে ভাতা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ দাবি জানান। আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে ভয়াবহ দানবীয় সরকারের পতন হয়েছে। তাই আমরা এখন প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারছি। অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান গতকাল গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে সই করেছেন।’

এসময় তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া সব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে করার দাবি জানান।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখনো অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে স্বাধীনতাকামী মানুষের বিজয় নস্যাৎ করার জন্য। এজন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে থাকতে হবে। যারা বিভিন্ন বাহিনীর পরিচয়ে গুম-খুনের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।’

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাত নয়টা সাড়ে নয়টার সময় উওরার একটি বাসা থেকে চোখ বেঁধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে আমাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর আলোবিহীন এক রুমের রাখা হয়।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘গুম-খুনের নামে আয়নাঘরের প্রধান ছিলেন বেনজির, জিয়াউল হাসান। জিয়াউল হাসানকে কঠোরভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। জিজ্ঞাসাবাদ করলে সব গুম-খুনের তথ্য বেরিয়ে আসবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের গুম, খুন, হত্যার আসল ঘটনা বের করতে হবে। এই গুম খুনের প্রকল্পের প্রধান ছিলেন শেখ হাসিনা।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তাহসিনা রুশদীর লুনা বলেন, ‘আমার স্বামী ইলিয়াস আলী ২০১২ সালে গুম হয়ে যাওয়ার পর শেখ হাসিনার সঙ্গে সন্তানদেরসহ দেখা করি। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। বাংলাদেশে গুমের বিচারে কোনো আইন নেই। আমি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের মাধ্যমে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধায়নে গুম হয়ে যাওয়া সদস্যদের খুঁজে বের করার। এছাড়া এই গুম-খুনে যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

গুম হয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গঠিত মায়ের ডাক সংগঠনের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার গুম হয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যদের গত এক যুগ ধরে দেশের কোথাও দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেয়নি। আমরা গত ১১ বছর ধরে গুম হয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যরা নির্যাতিত হয়ে আসছি।’

বিজনেস আওয়ার/ ৩০ আগস্ট/ রহমান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

গুম-খুনের শিকার পরিবারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ভাতা দেওয়ার দাবি ফখরুলের

পোস্ট হয়েছে : ১০:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৪

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যারা গুম ও খুন হয়েছেন- তাদের পরিবারের সদস্যদের রাষ্ট্রীয়ভাবে ভাতা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ দাবি জানান। আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে ভয়াবহ দানবীয় সরকারের পতন হয়েছে। তাই আমরা এখন প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারছি। অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান গতকাল গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে সই করেছেন।’

এসময় তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া সব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে করার দাবি জানান।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখনো অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে স্বাধীনতাকামী মানুষের বিজয় নস্যাৎ করার জন্য। এজন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে থাকতে হবে। যারা বিভিন্ন বাহিনীর পরিচয়ে গুম-খুনের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।’

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাত নয়টা সাড়ে নয়টার সময় উওরার একটি বাসা থেকে চোখ বেঁধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে আমাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর আলোবিহীন এক রুমের রাখা হয়।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘গুম-খুনের নামে আয়নাঘরের প্রধান ছিলেন বেনজির, জিয়াউল হাসান। জিয়াউল হাসানকে কঠোরভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। জিজ্ঞাসাবাদ করলে সব গুম-খুনের তথ্য বেরিয়ে আসবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের গুম, খুন, হত্যার আসল ঘটনা বের করতে হবে। এই গুম খুনের প্রকল্পের প্রধান ছিলেন শেখ হাসিনা।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তাহসিনা রুশদীর লুনা বলেন, ‘আমার স্বামী ইলিয়াস আলী ২০১২ সালে গুম হয়ে যাওয়ার পর শেখ হাসিনার সঙ্গে সন্তানদেরসহ দেখা করি। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। বাংলাদেশে গুমের বিচারে কোনো আইন নেই। আমি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের মাধ্যমে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধায়নে গুম হয়ে যাওয়া সদস্যদের খুঁজে বের করার। এছাড়া এই গুম-খুনে যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

গুম হয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গঠিত মায়ের ডাক সংগঠনের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার গুম হয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যদের গত এক যুগ ধরে দেশের কোথাও দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেয়নি। আমরা গত ১১ বছর ধরে গুম হয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যরা নির্যাতিত হয়ে আসছি।’

বিজনেস আওয়ার/ ৩০ আগস্ট/ রহমান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: