ঢাকা , শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘খারাপ আইপিও’র কারণে বাজারের নাজেহাল অবস্থা’

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ মে ২০২০
  • 28

২০১০-এর পরে অনেকগুলো কোম্পানি এসেছে কিন্তু তারপরও বাজারের এমন হাল কেন? বাজারের সৌন্দর্য আইপিও নয় বরং বিনিয়োগকারী। যে বাজারে বিনিয়োগকারী নেই, যেখানে টাকা নেই সেখানে নতুন আইপিও বরং আরও খারাপ অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। তবে ভালো আইপিও এলে বিনিয়োগকারীসহ সবাই লাভবান হবেন। বেশ কিছু খারাপ আইপিও আসাতে বাজারের আজ এ নাজেহাল অবস্থা। এই আইপিও আনার পেছনে কারা ছিল, তাদের জবাবদিহির মধ্যে আনা দরকার।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।

খুজিস্তা নুর-ই-নাহারিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক প্রেসিডেন্ট সুলতান মাহমুদ ও টেকনিক্যাল এনালিস্ট মুহাম্মদ আল জাহাঙ্গীর।

সুলতান মাহমুদ বলেন, দীর্ঘদিনের আলোচনার পর ব্যাংকের এক অঙ্কের সুদ হারের বিষয়টি বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়, যেহেতু বিনিয়োগকারীরা সংঘবদ্ধ, তাই এক অঙ্কের সুদ হারের জন্য প্রথমেই আমানতকারীদের চেপে ধরা হয়েছে। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একটি মৌখিক প্রস্তাব দিয়েছে। এই ৯ শতাংশ সুদহার যেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না হয় সে দাবি জানানো হয়েছে। তবে ক্ষুদ্রঋণের ব্যাপারে এমন প্রস্তাব দেওয়া হলেও দেখা যায় যে, বড় অঙ্কের ঋণগ্রহীতাদের চেয়ে ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতাদের ঋণ পরিশোধের মানসিকতা ভালো হয়। বড় ঋণ অঙ্কের ঋণগ্রহীতারাই আজকে ঋণখেলাপি হচ্ছে।

২০১০ সাল-পরবর্তী পুঁজিবাজার চিত্র দেখলে বোঝা যাবে, আসলেই আইপিও মাধ্যমে আসা কোম্পানিগুলো বাজারের কতটা সৌন্দর্য ধরে রেখেছে। ২০১০-এর পরে অনেক কোম্পানি এসেছে, কিন্তু বাজারের এমন হাল কেন? তাই বলব, বাজারের সৌন্দর্য আইপিও নয় বরং বিনিয়োগকারী। যে বাজারে বিনিয়োগকারী নেই, যেখানে টাকা নেই, সেখানে নতুন আইপিও বরং আরও খারাপ অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। তবে এটা বলা ঠিক হবে না যে, আইপিও আসবে না। আইপিও’র দরকার আছে। ভালো আইপিও আসলে বিনিয়োগকারীসহ সবাই লাভবান হবেন। বাজারের চিত্র এবং আইপিও নিয়ে নীতিনির্ধারণীদের কিংবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিশ্লেষণ বা গবেষণা প্রকাশ না হলেও অনেকে এটা জানেন কীভাবে খারাপ আইপিও আনা হয়। বেশ কিছু খারাপ আইপিও এসেছে, যা বাজারের জন্য ক্ষতিকর। আর এই আইপিও আনার পেছনে কারা ছিল, তাদের জবাবদিহির মধ্যে আনা দরকার। বাজারে এমন কোম্পানি রয়েছে যারা পুঁজিবাজারে আসার জন্য উদগ্রিব না থাকলেও বিএসইসি, ডিএসই নানা প্রলোভন দেখিয়ে পুঁজিবাজারে আসার নানা পথ বাতলে দিয়েছে।

মুহাম্মদ আল জাহাঙ্গীর বলেন, এখন বাজারের অবস্থা ভালো। আমরা আশা করছি চার হাজার ৮০০ পর্যন্ত সূচকের অগ্রগতি হবে। আর সব ঠিক থাকলে বাজার আরও ভালো করবে। গত কয়েক বছরের বাজারের চিত্র এবং আইপিও নিয়ে নীতিনির্ধারণীরা কি কোনো বিশ্লেষণ বা গবেষণা করেছেন? অবশ্যই বিএসইসি, ডিএসই’র গবেষণা করা দরকার। এতে বোঝা যাবে আসলে বাজারে কী দরকার, বাজারে নতুন আইপিও দরকার না অন্য কিছু? আইপিও এলে বাজার ভালো হবে কেবল এটা মনে করলে হবে না। বাজারের আইপিও’র প্রয়োজনীয়তার জন্য গবেষণা জরুরি। কারণ গত ১০ বছরের আইপিওতে আসা কোম্পানিগুলো তেমন ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারেনি।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

‘খারাপ আইপিও’র কারণে বাজারের নাজেহাল অবস্থা’

পোস্ট হয়েছে : ০১:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ মে ২০২০

২০১০-এর পরে অনেকগুলো কোম্পানি এসেছে কিন্তু তারপরও বাজারের এমন হাল কেন? বাজারের সৌন্দর্য আইপিও নয় বরং বিনিয়োগকারী। যে বাজারে বিনিয়োগকারী নেই, যেখানে টাকা নেই সেখানে নতুন আইপিও বরং আরও খারাপ অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। তবে ভালো আইপিও এলে বিনিয়োগকারীসহ সবাই লাভবান হবেন। বেশ কিছু খারাপ আইপিও আসাতে বাজারের আজ এ নাজেহাল অবস্থা। এই আইপিও আনার পেছনে কারা ছিল, তাদের জবাবদিহির মধ্যে আনা দরকার।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।

খুজিস্তা নুর-ই-নাহারিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক প্রেসিডেন্ট সুলতান মাহমুদ ও টেকনিক্যাল এনালিস্ট মুহাম্মদ আল জাহাঙ্গীর।

সুলতান মাহমুদ বলেন, দীর্ঘদিনের আলোচনার পর ব্যাংকের এক অঙ্কের সুদ হারের বিষয়টি বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়, যেহেতু বিনিয়োগকারীরা সংঘবদ্ধ, তাই এক অঙ্কের সুদ হারের জন্য প্রথমেই আমানতকারীদের চেপে ধরা হয়েছে। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একটি মৌখিক প্রস্তাব দিয়েছে। এই ৯ শতাংশ সুদহার যেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না হয় সে দাবি জানানো হয়েছে। তবে ক্ষুদ্রঋণের ব্যাপারে এমন প্রস্তাব দেওয়া হলেও দেখা যায় যে, বড় অঙ্কের ঋণগ্রহীতাদের চেয়ে ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতাদের ঋণ পরিশোধের মানসিকতা ভালো হয়। বড় ঋণ অঙ্কের ঋণগ্রহীতারাই আজকে ঋণখেলাপি হচ্ছে।

২০১০ সাল-পরবর্তী পুঁজিবাজার চিত্র দেখলে বোঝা যাবে, আসলেই আইপিও মাধ্যমে আসা কোম্পানিগুলো বাজারের কতটা সৌন্দর্য ধরে রেখেছে। ২০১০-এর পরে অনেক কোম্পানি এসেছে, কিন্তু বাজারের এমন হাল কেন? তাই বলব, বাজারের সৌন্দর্য আইপিও নয় বরং বিনিয়োগকারী। যে বাজারে বিনিয়োগকারী নেই, যেখানে টাকা নেই, সেখানে নতুন আইপিও বরং আরও খারাপ অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। তবে এটা বলা ঠিক হবে না যে, আইপিও আসবে না। আইপিও’র দরকার আছে। ভালো আইপিও আসলে বিনিয়োগকারীসহ সবাই লাভবান হবেন। বাজারের চিত্র এবং আইপিও নিয়ে নীতিনির্ধারণীদের কিংবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিশ্লেষণ বা গবেষণা প্রকাশ না হলেও অনেকে এটা জানেন কীভাবে খারাপ আইপিও আনা হয়। বেশ কিছু খারাপ আইপিও এসেছে, যা বাজারের জন্য ক্ষতিকর। আর এই আইপিও আনার পেছনে কারা ছিল, তাদের জবাবদিহির মধ্যে আনা দরকার। বাজারে এমন কোম্পানি রয়েছে যারা পুঁজিবাজারে আসার জন্য উদগ্রিব না থাকলেও বিএসইসি, ডিএসই নানা প্রলোভন দেখিয়ে পুঁজিবাজারে আসার নানা পথ বাতলে দিয়েছে।

মুহাম্মদ আল জাহাঙ্গীর বলেন, এখন বাজারের অবস্থা ভালো। আমরা আশা করছি চার হাজার ৮০০ পর্যন্ত সূচকের অগ্রগতি হবে। আর সব ঠিক থাকলে বাজার আরও ভালো করবে। গত কয়েক বছরের বাজারের চিত্র এবং আইপিও নিয়ে নীতিনির্ধারণীরা কি কোনো বিশ্লেষণ বা গবেষণা করেছেন? অবশ্যই বিএসইসি, ডিএসই’র গবেষণা করা দরকার। এতে বোঝা যাবে আসলে বাজারে কী দরকার, বাজারে নতুন আইপিও দরকার না অন্য কিছু? আইপিও এলে বাজার ভালো হবে কেবল এটা মনে করলে হবে না। বাজারের আইপিও’র প্রয়োজনীয়তার জন্য গবেষণা জরুরি। কারণ গত ১০ বছরের আইপিওতে আসা কোম্পানিগুলো তেমন ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারেনি।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: