বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, প্রচুর বিদেশীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিয়ত বিনিয়োগের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এ তালিকায় সিঙ্গাপুর ও দুবাই রয়েছে। এমনকি আমেরিকা থেকেও বিনিয়োগের জন্য যোগাযোগ করছে। তাই অর্থ কোন সমস্যা হবে না।
বৃহস্পতিবার (০৬ মে) প্রাক বাজেট আলোচনার অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। আর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন বিএসইসির সাবেক কমিশনার আরিফ খান।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটিজ এসোসিয়েশন ও ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ)।
শিবলী রুবাইয়াত বলেন, বর্তমান কমিশন ব্যবসাবান্ধব। আমরা ব্যবসাকে সহজ করে দেওয়ার জন্য কাজ করছি। এরইমধ্যে আমরা দেশের ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে এসএমই বোর্ডে ১টি কোম্পানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আগামি ১ মাসের মধ্যে আরও ৪-৫টি কোম্পানির অনুমোদন দেওয়া হবে। এই বোর্ড আস্তে আস্তে বড় হবে এবং পরবর্তীতে এখান থেকে বিভিন্ন কোম্পানি মূল বোর্ডে চলে যাবে।
তিনি বলেন, আমরা অর্থনীতিতে অনেক পিছিয়ে রয়েছি। স্বাধীনতার সময় আমাদের যে লক্ষ্য ছিল, তা পূরন হয়নি। আমাদেরকে গতি বাড়াতে হবে। ১৫ বছর আগের ভিয়েতনামের দিকে তাকালেও আমরা কোথায় আছি, সেটা বুঝতে পারব। কিছু দুষ্টলোকের কারনে আমাদের এই অবস্থা।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, স্টার্টআপকে এগিয়ে নিতে কমিশন ১টি ভ্যাঞ্চার কোম্পানির লাইসেন্স দিয়েছে। আর ২টি কোম্পানির আবেদন জমা রয়েছে। তবে এই খাতকে এগিয়ে নিতে সুশাসনের দিকে নজড় দিতে হবে। কারন দু-একটি দুষ্টলোকের কারনে পুরো খাতটি হুমকির মূখে পড়তে পারে। তাই শুরু থেকেই এই খাতের সংগঠনকে সুশাসনে নজড় দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, স্টার্টআপ কোম্পানিগুলো ভালোই করছে। এই খাতের সহযোগিতায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় আছে। একইসঙ্গে আজকের আলোচনার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাজেটকে কেন্দ্র করে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান তিনি।
ভিসিপিয়াব সভাপতি শামীম আহসান বলেন, আমরা দৃড়ভাবে বিশ্বাস করি আগামী ১৫ বছরে বিশ্বের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান ইমপ্যাক্ট তৈরিকারী ব্যবসায় উদ্যোগী হবে এবং বিশ্বের অধিকাংশ জনগণ এসব কোম্পানি থেকেই পণ্য ও সেবা গ্রহণ করবেন। এটি আমাদেরকে কোভিড-১৯ এর মতো মহামারিতে কম ক্ষতিগ্রস্থ হতে এবং একটি স্থিতিশীল অর্থনীতি তৈরিতে সহায়তা করবে। এই ইমপ্যাক্ট ইকোসিস্টেমকে সহায়ক নীতিমালা ও ট্যাক্স ছাড়ের মাধ্যমে দ্রুত প্রবৃদ্ধি ঘটাতে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও সংস্থা যেমন অর্থ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালন, আইসিটি বিভাগ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে এগিয়ে আসতে হবে।
বিএসইসি কমিশনার প্রফেসর ড. শেখ সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের অর্থনীতিতে নতুন স্টার্টআপ ব্যবসা তৈরিতে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। স্টার্টআপগুলোকে শুধুমাত্র যেসব শহরে প্রযুক্তির সমৃদ্ধি রয়েছে সেসব শহর আর উচ্চশিক্ষিত ও সুবিধাপ্রাপ্ত শ্রেণীর কাছে সেবা পৌঁছালে হবে না। এর পরিবর্তে, তাদের ব্যবসায়ে ভিন্নতা আনতে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে এবং অধিকসংখ্যক মানুষের কাছে সেবা পৌঁছাতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্ণর আবু ফরাহ মো. নাছের বলেন, স্টার্টআপ এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটালকে বর্তমান নীতিমালার অধীনে সম্ভব সর্বোচ্চ পরিমাণ সহায়তা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতিমধ্যেই ঋণ সুবিধার জন্য বাজারে চাহিদা তৈরি হয়েছে এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে ব্যাংকিং খাতকে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে হবে।
বিজনেস আওয়ার/০৬ মে, ২০২১/আরএ