ঢাকা , শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমানতের সর্বনিম্ন সুদহার বেঁধে দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

  • পোস্ট হয়েছে : ০৭:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ অগাস্ট ২০২১
  • 1

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ব্যাংক আমানতের সুদহার তলানিতে নেমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ আমানতকারীরা। তাই ভবিষ্যতে ব্যাংকের আমানতের ওপর বিরূপ প্রভাব রোধে ঋণের সুদহার মতো আমানতের সর্বনিম্ন সুদহারও বেঁধে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

এখন থেকে ব্যাংকের তিন মাস ও তার বেশি মেয়াদি আমানতের সুদহার কোনোভাবেই মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম হবে না। গত জুন মাসে ভোক্তা মূল্যসূচকের হিসাবে গড় মূল্যস্ফীতির ৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এ হিসাবে এখন ব্যাংকের সর্বনিম্ন সুদ হবে সাড়ে ৫ শতাংশের ওপরে।

রোববার (৮ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে সব তফসিলি ব্যাংকে পাঠিয়েছে। আজ রোববার থেকেই এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারিকৃত সার্কুলারে বলা হয়, আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা ও ব্যাংকিং খাতে দায়-সম্পদের ভারসাম্যহীনতা রোধে তিন মাস ও তদূর্ধ্ব মেয়াদি আমানতের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিতে হবে।

ব্যক্তি পর্যায়ের মেয়াদি আমানত ও বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ভবিষ্যত তহবিল, অবসরোত্তর পাওনাসহ বিবিধ পাওনা পরিশোধের লক্ষ্যে গঠিত তহবিলের যেকোনো পরিমাণ মেয়াদি আমানতের সুদহার কোনোভাবেই মূল্যস্ফীতির হার থেকে কম নির্ধারণ করা যাবে না।

ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত বিবরণী সুত্রে জানা যায়, অধিকাংশ ব্যাংকের মেয়াদি আমানতে মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে কম হারে সুদ দেওয়া হচ্ছে। ক্ষুদ্র আমানতকারীসহ অন্যান্য আমানতকারীর একটি অংশ জীবিকা নির্বাহের জন্য ব্যাংকে রক্ষিত আমানতের সুদের ওপর নির্ভরশীল।

কিন্তু মেয়াদি আমানতে মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে কম হারে সুদ দেওয়া হচ্ছে বলে আমানতকারীদের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

এছাড়া মেয়াদি আমানতের সুদহার বেশি কমে গেলে জনসাধারণ সঞ্চয়ে নিরুৎসাহিত হন। ফলে ব্যাংকে অর্থ জমা রাখার পরিবর্তে ঝুঁকিপূর্ণ খাতসহ বিভিন্ন অনুৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগের প্রবণতা বাড়ছে। ব্যাংক তহবিলের প্রধান উৎস হলো, বিভিন্ন আমানতকারীদের কাছ থেকে সংগৃহীত আমানত।

আমানতের সুদহার অতিরিক্ত কমে গেলে ভবিষ্যতে ব্যাংকের আমানত সংগ্রহের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। ফলে ব্যাংকের দায়-সম্পদ ব্যবস্থাপনায়ও ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য আমানতের সুদহার বেঁধে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ঋণের সুদহার আগের নির্দেশনা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ অপরিবর্তিত
থাকবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ সার্কুলার জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বিজনেস আওয়ার/০৮ আগস্ট, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

আমানতের সর্বনিম্ন সুদহার বেঁধে দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

পোস্ট হয়েছে : ০৭:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ অগাস্ট ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ব্যাংক আমানতের সুদহার তলানিতে নেমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ আমানতকারীরা। তাই ভবিষ্যতে ব্যাংকের আমানতের ওপর বিরূপ প্রভাব রোধে ঋণের সুদহার মতো আমানতের সর্বনিম্ন সুদহারও বেঁধে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

এখন থেকে ব্যাংকের তিন মাস ও তার বেশি মেয়াদি আমানতের সুদহার কোনোভাবেই মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম হবে না। গত জুন মাসে ভোক্তা মূল্যসূচকের হিসাবে গড় মূল্যস্ফীতির ৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এ হিসাবে এখন ব্যাংকের সর্বনিম্ন সুদ হবে সাড়ে ৫ শতাংশের ওপরে।

রোববার (৮ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে সব তফসিলি ব্যাংকে পাঠিয়েছে। আজ রোববার থেকেই এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারিকৃত সার্কুলারে বলা হয়, আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা ও ব্যাংকিং খাতে দায়-সম্পদের ভারসাম্যহীনতা রোধে তিন মাস ও তদূর্ধ্ব মেয়াদি আমানতের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিতে হবে।

ব্যক্তি পর্যায়ের মেয়াদি আমানত ও বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ভবিষ্যত তহবিল, অবসরোত্তর পাওনাসহ বিবিধ পাওনা পরিশোধের লক্ষ্যে গঠিত তহবিলের যেকোনো পরিমাণ মেয়াদি আমানতের সুদহার কোনোভাবেই মূল্যস্ফীতির হার থেকে কম নির্ধারণ করা যাবে না।

ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত বিবরণী সুত্রে জানা যায়, অধিকাংশ ব্যাংকের মেয়াদি আমানতে মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে কম হারে সুদ দেওয়া হচ্ছে। ক্ষুদ্র আমানতকারীসহ অন্যান্য আমানতকারীর একটি অংশ জীবিকা নির্বাহের জন্য ব্যাংকে রক্ষিত আমানতের সুদের ওপর নির্ভরশীল।

কিন্তু মেয়াদি আমানতে মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে কম হারে সুদ দেওয়া হচ্ছে বলে আমানতকারীদের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

এছাড়া মেয়াদি আমানতের সুদহার বেশি কমে গেলে জনসাধারণ সঞ্চয়ে নিরুৎসাহিত হন। ফলে ব্যাংকে অর্থ জমা রাখার পরিবর্তে ঝুঁকিপূর্ণ খাতসহ বিভিন্ন অনুৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগের প্রবণতা বাড়ছে। ব্যাংক তহবিলের প্রধান উৎস হলো, বিভিন্ন আমানতকারীদের কাছ থেকে সংগৃহীত আমানত।

আমানতের সুদহার অতিরিক্ত কমে গেলে ভবিষ্যতে ব্যাংকের আমানত সংগ্রহের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। ফলে ব্যাংকের দায়-সম্পদ ব্যবস্থাপনায়ও ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য আমানতের সুদহার বেঁধে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ঋণের সুদহার আগের নির্দেশনা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ অপরিবর্তিত
থাকবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ সার্কুলার জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বিজনেস আওয়ার/০৮ আগস্ট, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: