ঢাকা , শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে কারণে সঞ্চয়পত্রে ঝুঁকছেন গ্রাহক

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ অগাস্ট ২০২১
  • 6

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : গেলো অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ৪১ হাজার ৯৫৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা নিট ঋণ এসেছে সরকারের, যা এর আগের অর্থবছরের তুলনায় ১৯১ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরের পুরো সময়ে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের নিট ঋণ আসে ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা।

এ প্রসঙ্গে বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যাংক আমানতের সুদহার কমে যাওয়ায় সঞ্চয়পত্রে ঝুঁকছেন গ্রাহক। ব্যাংকের চেয়ে প্রায় তিনগুণ মুনাফা আসছে সঞ্চয়পত্র থেকে। যার কারণে এখানে বিনিয়োগ বেশি হচ্ছে। পাশাপাশি সঞ্চয়পত্র থেকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ঋণ আসছে সরকারের।

তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের সর্বশেষ মাস জুনে সঞ্চয়পত্র বিক্রির মাধ্যমে চার হাজার ৫৭৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা নিট ঋণ আসে সরকারের। ২০২০ সালের জুন মাসে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ আসে তিন হাজার ৪১৭ কোটি টাকা। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

তথ্যে আরও দেখা যায়, আলোচিত অর্থবছরে নিট ঋণের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি ঋণ আসে সঞ্চয়পত্রে। গত অর্থবছরে মূল বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের নিট ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছরের শেষ দিকে এ খাতের ঋণ বেড়ে যাওয়ায় সংশোধিত বাজেটে এই লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৩০ হাজার ৩০২ কোটি টাকা করা হয়।

একটি নির্দিষ্ট সময়ে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ থেকে সরকার যে অর্থ সংগ্রহ করে তা থেকে আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের মূল ও মুনাফা পরিশোধের পর যে অবশিষ্ট অংশ থাকে তা সরকারের নিট ঋণ। এই ঋণ বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যয় করা হয়।

গত অর্থবছরে এক লাখ ১২ হাজার ১৮৮ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। মূল ও মুনাফা বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ৭০ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছর শেষে (জুলাই-জুন) সঞ্চয়পত্রে গ্রাহকের বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪১ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছরের এপ্রিল থেকে ব্যাংক ঋণের সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার নির্দেশনা দেয় সরকার। এর আগে থেকেই ব্যাংকগুলো আমানতের সুদহার কমিয়ে আনতে শুরু করে। গত জুন মাসে ব্যাংক খাতের আমানতের গড় সুদহার ছিল ৪ দশমিক ১৩ শতাংশ; যা মূল্যস্ফীতি হারের চেয়েও কম। এ কারণে গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তিন মাসের থেকে বেশি সময়ের জন্য রক্ষিত আমানতের সুদহার কোনোভাবেই মূল্যস্ফীতি হারের কম হবে না। যেখানে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১০ শতাংশের ওপরেই রয়েছে। এ কারণে সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাড়ছে ও এ খাত থেকে সরকারের ঋণও বাড়ছে।

বিজনেস আওয়ার/১৮ আগস্ট, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

যে কারণে সঞ্চয়পত্রে ঝুঁকছেন গ্রাহক

পোস্ট হয়েছে : ০৪:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ অগাস্ট ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : গেলো অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ৪১ হাজার ৯৫৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা নিট ঋণ এসেছে সরকারের, যা এর আগের অর্থবছরের তুলনায় ১৯১ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরের পুরো সময়ে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের নিট ঋণ আসে ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা।

এ প্রসঙ্গে বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যাংক আমানতের সুদহার কমে যাওয়ায় সঞ্চয়পত্রে ঝুঁকছেন গ্রাহক। ব্যাংকের চেয়ে প্রায় তিনগুণ মুনাফা আসছে সঞ্চয়পত্র থেকে। যার কারণে এখানে বিনিয়োগ বেশি হচ্ছে। পাশাপাশি সঞ্চয়পত্র থেকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ঋণ আসছে সরকারের।

তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের সর্বশেষ মাস জুনে সঞ্চয়পত্র বিক্রির মাধ্যমে চার হাজার ৫৭৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা নিট ঋণ আসে সরকারের। ২০২০ সালের জুন মাসে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ আসে তিন হাজার ৪১৭ কোটি টাকা। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

তথ্যে আরও দেখা যায়, আলোচিত অর্থবছরে নিট ঋণের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি ঋণ আসে সঞ্চয়পত্রে। গত অর্থবছরে মূল বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের নিট ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছরের শেষ দিকে এ খাতের ঋণ বেড়ে যাওয়ায় সংশোধিত বাজেটে এই লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৩০ হাজার ৩০২ কোটি টাকা করা হয়।

একটি নির্দিষ্ট সময়ে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ থেকে সরকার যে অর্থ সংগ্রহ করে তা থেকে আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের মূল ও মুনাফা পরিশোধের পর যে অবশিষ্ট অংশ থাকে তা সরকারের নিট ঋণ। এই ঋণ বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যয় করা হয়।

গত অর্থবছরে এক লাখ ১২ হাজার ১৮৮ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। মূল ও মুনাফা বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ৭০ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছর শেষে (জুলাই-জুন) সঞ্চয়পত্রে গ্রাহকের বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪১ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছরের এপ্রিল থেকে ব্যাংক ঋণের সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার নির্দেশনা দেয় সরকার। এর আগে থেকেই ব্যাংকগুলো আমানতের সুদহার কমিয়ে আনতে শুরু করে। গত জুন মাসে ব্যাংক খাতের আমানতের গড় সুদহার ছিল ৪ দশমিক ১৩ শতাংশ; যা মূল্যস্ফীতি হারের চেয়েও কম। এ কারণে গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তিন মাসের থেকে বেশি সময়ের জন্য রক্ষিত আমানতের সুদহার কোনোভাবেই মূল্যস্ফীতি হারের কম হবে না। যেখানে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১০ শতাংশের ওপরেই রয়েছে। এ কারণে সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাড়ছে ও এ খাত থেকে সরকারের ঋণও বাড়ছে।

বিজনেস আওয়ার/১৮ আগস্ট, ২০২১/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: