ঢাকা , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাত দিনে ভার্চুয়াল কোর্টে জামিন পেল ২০৫ শিশু

  • পোস্ট হয়েছে : ০৬:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মে ২০২০
  • 62

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদকঃ সাত দিনে ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে জামিন পেয়েছে সমাজ সেবা অধিদফতরের অধীনে থাকা তিনটি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ২০৫ জন শিশু। গত ১২ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে জামিন পায় এসব শিশুরা।

এরইমধ্যে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় জামিনপ্রাপ্ত ১৩৫ জন শিশুকে তাদের অভিভাবকের ঠিকানায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে। বাকি শিশুদের ঈদের আগেই অভিভাবকের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে। সমাজসেবা অধিদফতর সূত্র বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে।

জানা গেছে, সমাজসেবা অধিদফতর দেশের তিনটি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পরিচালনা করে আসছে। কেন্দ্র তিনটি গাজীপুর জেলার টঙ্গী ও কোনাবাড়ি এবং যশোরে অবস্থিত। এরমধ্যে টঙ্গী ও যশোরের কেন্দ্র দুটি বালকদের জন্য নির্ধারিত। আর কোনাবাড়ির কেন্দ্রটিতে বালিকাদের রাখা হয়।

শিশু আইন-২০১৩ অনুযায়ী, আদালত আইনের সঙ্গে সংঘাতে বা সংস্পর্শে আসা শিশুদের জেলখানায় না পাঠিয়ে তাদের উন্নয়নের জন্যই শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়ে থাকে।

সমাজসেবা অধিদফতরের গবেষণা, মূল্যায়ন, প্রকাশনা ও গণসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক মো. সাজ্জাদুল ইসলাম জানান, ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে শিশুদের জামিনে মুক্ত করতে সমাজ সেবা অধিদফতর নানামুখী উদ্যোগ ও যোগাযোগ রক্ষা করে।

এ কাজে ‘সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি অব চাইল্ড রাইটস’র চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাপিলেড ডিভিশনের বিচারপতি মো. ইমান আলী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। জামিনপ্রাপ্ত শিশুদের এ কমিটির উদ্যোগে সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে ইউনিসেফের সহযোগিতায় অভিভাবকের ঠিকানায় পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে ১৩৫ জন শিশুকে অভিভাবকের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের আগ পর্যন্ত ৩০০ আসন বিশিষ্ট গাজীপুরের টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ৬৯৫ জন শিশু অবস্থান করত। যা ধারণক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি। অন্য দুই প্রতিষ্ঠানেও ধারণক্ষমতার অনেক বেশি শিশু অবস্থান করছিল। ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিতে ছিল শিশুরা।

এদিকে কোভিড-১৯ দুর্যোগে দেশের সকল আদালতের স্বাভাবিক বিচার ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়ে যায়। এতে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের জামিন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়ে। জামিন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে অবস্থানরত শিশুদের সুরক্ষা প্রদান করা কঠিন হয়ে পড়ে বলে জানায় সমাজসেবা অধিদফতর।

সরকার গত ৯ মে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ জারি করে। একইসঙ্গে উচ্চ আদালত থেকে জারি করা হয় বিশেষ প্রাকটিস নির্দেশনা। এর ফলে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনার পথ উন্মুক্ত হয়। এর পর গত ১২ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত এই কয় দিনে ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে জামিন পায় ২০৫ শিশু। এর মধ্যে টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ১২৭ জন বালক, যশোর কেন্দ্রের ৬৬ জন বালক এবং কোনাবাড়ি কেন্দ্রের ১২ বালিকা শিশু রয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/ ২১ মে,২০২০/ কমা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সাত দিনে ভার্চুয়াল কোর্টে জামিন পেল ২০৫ শিশু

পোস্ট হয়েছে : ০৬:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মে ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদকঃ সাত দিনে ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে জামিন পেয়েছে সমাজ সেবা অধিদফতরের অধীনে থাকা তিনটি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ২০৫ জন শিশু। গত ১২ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে জামিন পায় এসব শিশুরা।

এরইমধ্যে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় জামিনপ্রাপ্ত ১৩৫ জন শিশুকে তাদের অভিভাবকের ঠিকানায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে। বাকি শিশুদের ঈদের আগেই অভিভাবকের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে। সমাজসেবা অধিদফতর সূত্র বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে।

জানা গেছে, সমাজসেবা অধিদফতর দেশের তিনটি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পরিচালনা করে আসছে। কেন্দ্র তিনটি গাজীপুর জেলার টঙ্গী ও কোনাবাড়ি এবং যশোরে অবস্থিত। এরমধ্যে টঙ্গী ও যশোরের কেন্দ্র দুটি বালকদের জন্য নির্ধারিত। আর কোনাবাড়ির কেন্দ্রটিতে বালিকাদের রাখা হয়।

শিশু আইন-২০১৩ অনুযায়ী, আদালত আইনের সঙ্গে সংঘাতে বা সংস্পর্শে আসা শিশুদের জেলখানায় না পাঠিয়ে তাদের উন্নয়নের জন্যই শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়ে থাকে।

সমাজসেবা অধিদফতরের গবেষণা, মূল্যায়ন, প্রকাশনা ও গণসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক মো. সাজ্জাদুল ইসলাম জানান, ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে শিশুদের জামিনে মুক্ত করতে সমাজ সেবা অধিদফতর নানামুখী উদ্যোগ ও যোগাযোগ রক্ষা করে।

এ কাজে ‘সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি অব চাইল্ড রাইটস’র চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাপিলেড ডিভিশনের বিচারপতি মো. ইমান আলী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। জামিনপ্রাপ্ত শিশুদের এ কমিটির উদ্যোগে সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে ইউনিসেফের সহযোগিতায় অভিভাবকের ঠিকানায় পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে ১৩৫ জন শিশুকে অভিভাবকের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের আগ পর্যন্ত ৩০০ আসন বিশিষ্ট গাজীপুরের টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ৬৯৫ জন শিশু অবস্থান করত। যা ধারণক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি। অন্য দুই প্রতিষ্ঠানেও ধারণক্ষমতার অনেক বেশি শিশু অবস্থান করছিল। ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিতে ছিল শিশুরা।

এদিকে কোভিড-১৯ দুর্যোগে দেশের সকল আদালতের স্বাভাবিক বিচার ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়ে যায়। এতে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের জামিন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়ে। জামিন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে অবস্থানরত শিশুদের সুরক্ষা প্রদান করা কঠিন হয়ে পড়ে বলে জানায় সমাজসেবা অধিদফতর।

সরকার গত ৯ মে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ জারি করে। একইসঙ্গে উচ্চ আদালত থেকে জারি করা হয় বিশেষ প্রাকটিস নির্দেশনা। এর ফলে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনার পথ উন্মুক্ত হয়। এর পর গত ১২ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত এই কয় দিনে ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে জামিন পায় ২০৫ শিশু। এর মধ্যে টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ১২৭ জন বালক, যশোর কেন্দ্রের ৬৬ জন বালক এবং কোনাবাড়ি কেন্দ্রের ১২ বালিকা শিশু রয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/ ২১ মে,২০২০/ কমা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: