ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকার দুই মেয়রের সাত দিন: অগ্রাধিকার দিচ্ছেন করোনা মোকাবিলায়

  • পোস্ট হয়েছে : ১১:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মে ২০২০
  • 161

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদকঃ সম্প্রতি ঢাকার দুই সিটির দায়িত্ব নিয়েছেন নতুন নির্বাচিত দুই মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও মো. আতিকুল ইসলাম। উত্তরে মেয়র হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে আতিকুল ইসলাম এক সপ্তাহ পার করেছেন দুদিন আগে। আর দক্ষিণে ব্যারিস্টার তাপসে শপথ নেওয়ার এক সপ্তাহ হচ্ছে আজ শুক্রবার (২২ মে), যদিও তিনি কাজ শুরু করেন শপথের পরদিন থেকে। দায়িত্ব নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই অভ্যন্তরীণ নানা বিষয় বুঝে নেওয়ার বিষয়েই দুই মেয়র এখন বেশি মনোযোগী। তবে মূল কাজ বা পরিকল্পনার জায়গায় অন্য সবকিছুকে সরিয়ে দিয়ে হুট করে যে ‘করোনা মোকাবিলা’ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাচ্ছে সেটা দুই মেয়রের কথাতেই পরিষ্কার।

এ মুহূর্তে ঢাকাবাসীর চিকিৎসাসেবাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন তারা। দক্ষিণের মেয়র তাপস বলেছেন, করোনা মোকাবিলায় সফল রাষ্ট্রগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকেই কাজ করবেন। আর করোনার সময়ও মাঠে থাকা উত্তরের মেয়র আতিক দুস্থদের খাদ্য বণ্টন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার পাশাপাশি করোনা রোগীদের চিকিৎসায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে একটি মার্কেট হস্তান্তর করেছেন এরইমধ্যে। তবে নগরীর পরিচ্ছন্নতা কাজে উভয় মেয়র মনোযোগী। আপাতত গুরুত্ব দিচ্ছেন ব্লিচিং পাউডার ছিটানোয়।

৫টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে গত ১৬ মে দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) দায়িত্বগ্রহণ করেন ব্যরিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। এসময় তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না শতবছরেও এরকম চাপ নিয়ে আর কোনও মেয়র দায়িত্বগ্রহণ করবে। যেই মহামারির মধ্যে আমরা পড়েছি তাতে সারা বিশ্ববাসী চাপের মধ্যে আছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর আমি ৫টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। এর মধ্যে প্রথম হচ্ছে করোনা মোকাবিলা।’

হোম ওয়ার্কে অভিজ্ঞ মেয়র ফজলে নূর তাপস তখন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় রাষ্ট্রের অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বিত পরিকল্পনার কথা জানান। নিজের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে মেয়র বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর, আইইডিসিআর ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সবার সমন্বয়ে আমাদের যে হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো আছে সব কিছুকে নিয়ে আমরা ঢাকাবাসীর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য ব্যাপকভাবে কার্যক্রম শুরু করতে চাই। যাতে করে আমরা ঢাকাবাসীকে সুরক্ষা দিতে পারি।

করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতার আশঙ্কা করে মেয়র বলেন, করোনা সম্পূর্ণভাবে নির্মূল হয়তো কোনোদিন নাও হতে পারে। সুতরাং আমাদের জীবন ও জীবিকার তাগিদেই কার্যক্রম চালাতে হবে। এই করোনাভাইরাসকে নির্মূল করার জন্য আমাদের যে কয়টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র রয়েছে সেসব নিয়ে ব্যাপকভাবে কার্যক্রম চালানোর উদ্যোগ নিয়েছি। এটাকে কীভাবে আরও বেগবান করা যায় এবং ঢাকাবাসী যেন চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় আমরা সেদিকে নগর রাখছি।

তবে করোনা মোকাবিলায় মেয়র বিস্তর পরিকল্পনার কথা জানালেও এখন পর্যন্ত ডিএসসিসির পক্ষ থেকে সড়কে জীবাণুনাশক ব্লিচিং পাউডার ছিটানো ছাড়া আর কোনও কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না। আশা করা যায়, অচিরেই করোনা মোকাবিলায় ঢাকা দক্ষিণ মেয়রের পরিকল্পনার বিস্তারিত বাস্তবায়ন দেখতে পাবে নগরবাসী।

ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, করোনা চিকিৎসার জন্য আমাদের একটি মার্কেট স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে হস্তান্তর করেছি। এছাড়া ডিএনসিসি এলাকায় প্রতিদিন ১০টি ওয়াটার বাইজারের মাধ্যমে ব্যাপক হারে জীবাণুনাশক ছিটাচ্ছি। করোনা টেস্টের জন্য ৭টি স্থানে বুথ স্থাপন করেছি। নাগরিকদের মধ্যে খাদ্যসহায়তাসহ হাত ধোয়ার সাবান বিতরণ করেছি। এসব কাজ অব্যাহত থাকবে। ঢাকাবাসী যেন চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত না হন সেজন্য করোনা মোকাবিলায় আরও কিছু কর্মপরিকল্পনার কথা জানান তিনি। বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এসব পরিকল্পনা দৃশ্যমান হবে।

বিজনেস আওয়ার/ ২২ মে,২০২০/ কমা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ঢাকার দুই মেয়রের সাত দিন: অগ্রাধিকার দিচ্ছেন করোনা মোকাবিলায়

পোস্ট হয়েছে : ১১:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মে ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদকঃ সম্প্রতি ঢাকার দুই সিটির দায়িত্ব নিয়েছেন নতুন নির্বাচিত দুই মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও মো. আতিকুল ইসলাম। উত্তরে মেয়র হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে আতিকুল ইসলাম এক সপ্তাহ পার করেছেন দুদিন আগে। আর দক্ষিণে ব্যারিস্টার তাপসে শপথ নেওয়ার এক সপ্তাহ হচ্ছে আজ শুক্রবার (২২ মে), যদিও তিনি কাজ শুরু করেন শপথের পরদিন থেকে। দায়িত্ব নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই অভ্যন্তরীণ নানা বিষয় বুঝে নেওয়ার বিষয়েই দুই মেয়র এখন বেশি মনোযোগী। তবে মূল কাজ বা পরিকল্পনার জায়গায় অন্য সবকিছুকে সরিয়ে দিয়ে হুট করে যে ‘করোনা মোকাবিলা’ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাচ্ছে সেটা দুই মেয়রের কথাতেই পরিষ্কার।

এ মুহূর্তে ঢাকাবাসীর চিকিৎসাসেবাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন তারা। দক্ষিণের মেয়র তাপস বলেছেন, করোনা মোকাবিলায় সফল রাষ্ট্রগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকেই কাজ করবেন। আর করোনার সময়ও মাঠে থাকা উত্তরের মেয়র আতিক দুস্থদের খাদ্য বণ্টন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার পাশাপাশি করোনা রোগীদের চিকিৎসায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে একটি মার্কেট হস্তান্তর করেছেন এরইমধ্যে। তবে নগরীর পরিচ্ছন্নতা কাজে উভয় মেয়র মনোযোগী। আপাতত গুরুত্ব দিচ্ছেন ব্লিচিং পাউডার ছিটানোয়।

৫টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে গত ১৬ মে দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) দায়িত্বগ্রহণ করেন ব্যরিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। এসময় তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না শতবছরেও এরকম চাপ নিয়ে আর কোনও মেয়র দায়িত্বগ্রহণ করবে। যেই মহামারির মধ্যে আমরা পড়েছি তাতে সারা বিশ্ববাসী চাপের মধ্যে আছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর আমি ৫টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। এর মধ্যে প্রথম হচ্ছে করোনা মোকাবিলা।’

হোম ওয়ার্কে অভিজ্ঞ মেয়র ফজলে নূর তাপস তখন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় রাষ্ট্রের অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বিত পরিকল্পনার কথা জানান। নিজের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে মেয়র বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর, আইইডিসিআর ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সবার সমন্বয়ে আমাদের যে হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো আছে সব কিছুকে নিয়ে আমরা ঢাকাবাসীর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য ব্যাপকভাবে কার্যক্রম শুরু করতে চাই। যাতে করে আমরা ঢাকাবাসীকে সুরক্ষা দিতে পারি।

করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতার আশঙ্কা করে মেয়র বলেন, করোনা সম্পূর্ণভাবে নির্মূল হয়তো কোনোদিন নাও হতে পারে। সুতরাং আমাদের জীবন ও জীবিকার তাগিদেই কার্যক্রম চালাতে হবে। এই করোনাভাইরাসকে নির্মূল করার জন্য আমাদের যে কয়টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র রয়েছে সেসব নিয়ে ব্যাপকভাবে কার্যক্রম চালানোর উদ্যোগ নিয়েছি। এটাকে কীভাবে আরও বেগবান করা যায় এবং ঢাকাবাসী যেন চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় আমরা সেদিকে নগর রাখছি।

তবে করোনা মোকাবিলায় মেয়র বিস্তর পরিকল্পনার কথা জানালেও এখন পর্যন্ত ডিএসসিসির পক্ষ থেকে সড়কে জীবাণুনাশক ব্লিচিং পাউডার ছিটানো ছাড়া আর কোনও কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না। আশা করা যায়, অচিরেই করোনা মোকাবিলায় ঢাকা দক্ষিণ মেয়রের পরিকল্পনার বিস্তারিত বাস্তবায়ন দেখতে পাবে নগরবাসী।

ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, করোনা চিকিৎসার জন্য আমাদের একটি মার্কেট স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে হস্তান্তর করেছি। এছাড়া ডিএনসিসি এলাকায় প্রতিদিন ১০টি ওয়াটার বাইজারের মাধ্যমে ব্যাপক হারে জীবাণুনাশক ছিটাচ্ছি। করোনা টেস্টের জন্য ৭টি স্থানে বুথ স্থাপন করেছি। নাগরিকদের মধ্যে খাদ্যসহায়তাসহ হাত ধোয়ার সাবান বিতরণ করেছি। এসব কাজ অব্যাহত থাকবে। ঢাকাবাসী যেন চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত না হন সেজন্য করোনা মোকাবিলায় আরও কিছু কর্মপরিকল্পনার কথা জানান তিনি। বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এসব পরিকল্পনা দৃশ্যমান হবে।

বিজনেস আওয়ার/ ২২ মে,২০২০/ কমা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: