ঢাকা , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আম্পানে ধ্বংস বাড়িঘর, নষ্ট ফসল-মাছের ঘের ও ভেঙেছে বাঁধ

  • পোস্ট হয়েছে : ১২:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মে ২০২০
  • 38

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদকঃ উপকূলের পথে পথে ক্ষতচিহ্ন রেখে গেছে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। উপড়ে গেছে গাছপালা, ধ্বংস হয়েছে বাড়িঘর, ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়েছে। জেলায় জেলায় বিধ্বস্ত শহররক্ষা বাঁধ ও বেড়িবাঁধ। ঘূর্ণিঝড়ে এ পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে প্রাণহানি কম হলেও এড়ানো যায়নি কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছপালা আর ফসলের ক্ষতি। বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে পানি। দমকা হাওয়া ছিলো বৃহস্পতিবারও। বেড়েছে নদনদীর পানি।

ভরা জোয়ারের সময় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডব শুরু হয়। পানির তোড়ে ভেঙে যায় বাগেরহাটের শরণখোলা বেড়িবাঁধের কয়েক কিলোমিটার। এতে প্লাবিত হয় নিম্ন এলাকা। ভেসে যায় মাছের ঘের।

ঝড়ো হাওয়ায় জেলার বিভিন্ন স্থানে বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বাড়িঘর । উপড়ে গেছে গাছপালা। জমির ফসল হারিয়েছেন কৃষকরা।

আম্পানের আঘাতের ক্ষত সবচেয়ে বেশি উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায়। শ্যামনগর, আশাশুনি, কালীগঞ্জ এবং সদর উপজেলা অন্তত ২০টি বেড়িবাঁধে বুধবার (২০ মে) রাত থেকেই শুরু হয় ভাঙন। পানির নিচে গ্রামের পর গ্রাম। ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে হাজারো পরিবার।

আম্পানের তাণ্ডব শেষ হবার পরদিনও দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি হয় দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীতে। এতে দুর্ভোগ বাড়ে ঘর হারাদের। পরিবার-পরিজন নিয়ে তাদের দিন কাটছে অনিশ্চয়তায়।

নদীর পানি বাড়ায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে শহররক্ষা ও বেড়িবাঁধে। বিভিন্ন স্থানে আট কিলোমিটারের বেশি বাঁধ ধসে যাওয়ায় পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে ফসলি ক্ষেত ও বিস্তীর্ণ জনপদ। অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বিপাকে পানিবন্দি মানুষ।

আম্পানের প্রভাবে জোয়ারের তোড়ে পিরোজপুরের বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ধসে যায়। হু হু করে পানি ঢুকে ৩০টি গ্রাম ডুবে যায়। ঝড়ে অন্তত চারশ’ বসতঘর ক্ষতির কথা জানায় জেলা প্রশাসন। ভেঙে গেছে কাঁচাপাকা ২৫ কিলোমিটার রাস্তা।

ঝালকাঠিতে অব্যাহত রয়েছে নদনদীর পানি বৃদ্ধি। থেমে থেমে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া। জোয়ারের পানিতে কয়েকটি স্থানে বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করে লোকালয়ে। জেলার নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি বলে জানায় স্থানীয় প্রশাসন।

ঘূর্ণিঝড় আম্পান তাণ্ডব চালিয়েছে দক্ষিণপশ্চিমের জেলা যশোরেও। ঝড়ের কারণে বিভিন্ন এলাকায় উড়ে গেছে কাঁচা ও আধাপাকা ঘরবাড়ি। উপড়ে পড়েছে গাছপালা। এতে জেলার সঙ্গে উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকে দিনভর।

এছাড়া বরিশাল, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, কুড়িগ্রাম ও সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আঘাত হানে আম্পান। ঘরবাড়ি ও গাছপালার পাশাপাশি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এসব জেলায়।

বিজনেস আওয়ার/ ২২ মে,২০২০/ কমা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

আম্পানে ধ্বংস বাড়িঘর, নষ্ট ফসল-মাছের ঘের ও ভেঙেছে বাঁধ

পোস্ট হয়েছে : ১২:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মে ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদকঃ উপকূলের পথে পথে ক্ষতচিহ্ন রেখে গেছে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। উপড়ে গেছে গাছপালা, ধ্বংস হয়েছে বাড়িঘর, ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়েছে। জেলায় জেলায় বিধ্বস্ত শহররক্ষা বাঁধ ও বেড়িবাঁধ। ঘূর্ণিঝড়ে এ পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে প্রাণহানি কম হলেও এড়ানো যায়নি কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছপালা আর ফসলের ক্ষতি। বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে পানি। দমকা হাওয়া ছিলো বৃহস্পতিবারও। বেড়েছে নদনদীর পানি।

ভরা জোয়ারের সময় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডব শুরু হয়। পানির তোড়ে ভেঙে যায় বাগেরহাটের শরণখোলা বেড়িবাঁধের কয়েক কিলোমিটার। এতে প্লাবিত হয় নিম্ন এলাকা। ভেসে যায় মাছের ঘের।

ঝড়ো হাওয়ায় জেলার বিভিন্ন স্থানে বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বাড়িঘর । উপড়ে গেছে গাছপালা। জমির ফসল হারিয়েছেন কৃষকরা।

আম্পানের আঘাতের ক্ষত সবচেয়ে বেশি উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায়। শ্যামনগর, আশাশুনি, কালীগঞ্জ এবং সদর উপজেলা অন্তত ২০টি বেড়িবাঁধে বুধবার (২০ মে) রাত থেকেই শুরু হয় ভাঙন। পানির নিচে গ্রামের পর গ্রাম। ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে হাজারো পরিবার।

আম্পানের তাণ্ডব শেষ হবার পরদিনও দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি হয় দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীতে। এতে দুর্ভোগ বাড়ে ঘর হারাদের। পরিবার-পরিজন নিয়ে তাদের দিন কাটছে অনিশ্চয়তায়।

নদীর পানি বাড়ায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে শহররক্ষা ও বেড়িবাঁধে। বিভিন্ন স্থানে আট কিলোমিটারের বেশি বাঁধ ধসে যাওয়ায় পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে ফসলি ক্ষেত ও বিস্তীর্ণ জনপদ। অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বিপাকে পানিবন্দি মানুষ।

আম্পানের প্রভাবে জোয়ারের তোড়ে পিরোজপুরের বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ধসে যায়। হু হু করে পানি ঢুকে ৩০টি গ্রাম ডুবে যায়। ঝড়ে অন্তত চারশ’ বসতঘর ক্ষতির কথা জানায় জেলা প্রশাসন। ভেঙে গেছে কাঁচাপাকা ২৫ কিলোমিটার রাস্তা।

ঝালকাঠিতে অব্যাহত রয়েছে নদনদীর পানি বৃদ্ধি। থেমে থেমে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া। জোয়ারের পানিতে কয়েকটি স্থানে বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করে লোকালয়ে। জেলার নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি বলে জানায় স্থানীয় প্রশাসন।

ঘূর্ণিঝড় আম্পান তাণ্ডব চালিয়েছে দক্ষিণপশ্চিমের জেলা যশোরেও। ঝড়ের কারণে বিভিন্ন এলাকায় উড়ে গেছে কাঁচা ও আধাপাকা ঘরবাড়ি। উপড়ে পড়েছে গাছপালা। এতে জেলার সঙ্গে উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকে দিনভর।

এছাড়া বরিশাল, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, কুড়িগ্রাম ও সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আঘাত হানে আম্পান। ঘরবাড়ি ও গাছপালার পাশাপাশি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এসব জেলায়।

বিজনেস আওয়ার/ ২২ মে,২০২০/ কমা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: