ঢাকা , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাইসেন্স ছাড়া কীভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তারা

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২১
  • 0

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসানকে চাপা দেয়া চালক রাসেল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো চালক নয়। আর মূল চালক বলা হারুন মিয়াও সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী।

সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, ময়লাবাহী গাড়িচালক হারুনের ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে।

অন্যদিকে গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, রাসেল ও হারুন দুজনেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। তাহলে লাইসেন্স ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে কীভাবে ময়লার গাড়ি চালাচ্ছিলেন তারা!

শুক্রবার ভোরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান নিহতের ঘটনায় অভিযুক্ত গাড়ির মূল চালক হারুন মিয়া ওরফে কাইল্লা হারুনকে (৩৭) গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এর আগে দুর্ঘটনাস্থল থেকে পালানোর সময় এলাকার টহল পুলিশ ও পথচারীরা ট্রাকের চালক রাসেল খান ও গাড়ির ভেতরে থাকা অপর দুই পরিচ্ছন্নতাকর্মী গোলাম রব্বানী ও বেলালকে আটক করে।

দক্ষিণ সিটির পরিবহন বিভাগ সূত্র বলছে, যে গাড়ির চাপায় নাঈম হাসান নিহত হয়েছে, সেটি ভারী যান। সংস্থাটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে ব্যবহারের জন্য এমন ৩১৭টি ভারী যান আছে। কিন্তু চালক আছেন মাত্র ৮৬ জন। রেওয়াজ অনুযায়ী পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মধ্যে যাদের লাইসেন্স আছে, তারা গাড়িগুলো চালাচ্ছেন।

হারুন ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া কীভাবে এতো দিন গাড়ি চালিয়ে আসছিলো এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, হারুনের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিলো। রাসেলের ছিলো না, রাসেল সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী কর্মী ছিলো। কাগজপত্রে হারুনের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিলো বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

এদিকে ডিএসসিসির একাধিক সূত্র জানায়, হারুন ও রাসেলের মতো এমন আরও শতাধিক চালক রয়েছে, যারা ক্লিনার ও পিয়ন হিসেবেই নিয়োগপ্রাপ্ত। কেউ আবার সিটি করপোরেশনের কোনো কর্মী নন। কিন্তু পরিবহন বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তার আশীর্বাদে অর্থের বিনিময়ে তাদের গাড়িচালক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। শুক্রবার হারুনকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব জানায় রাসেল ও হারুন দুজনেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই।

এদিকে হারুনের ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে এমন দাবি করছেন সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সেটা সত্যি কিনা জানতে চাইলে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদে গ্রেপ্তার হারুন জানিয়েছে তার কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। হারুন পরিচ্ছন্নতাকর্মী হয়েও এতোদিন গাড়ি চালিয়ে আসছেন। বিষয়টি আমরা সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে জানিয়েছি। ওই কর্মকর্তা কীভাবে বলছেন হারুনের লাইসেন্স আছে সেটা আমি বুঝতে পারছি না।

বিজনেস আওয়ার/২৭ নভেম্বর,২০২১/ এএইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

লাইসেন্স ছাড়া কীভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তারা

পোস্ট হয়েছে : ০১:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসানকে চাপা দেয়া চালক রাসেল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো চালক নয়। আর মূল চালক বলা হারুন মিয়াও সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী।

সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, ময়লাবাহী গাড়িচালক হারুনের ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে।

অন্যদিকে গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, রাসেল ও হারুন দুজনেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। তাহলে লাইসেন্স ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে কীভাবে ময়লার গাড়ি চালাচ্ছিলেন তারা!

শুক্রবার ভোরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান নিহতের ঘটনায় অভিযুক্ত গাড়ির মূল চালক হারুন মিয়া ওরফে কাইল্লা হারুনকে (৩৭) গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এর আগে দুর্ঘটনাস্থল থেকে পালানোর সময় এলাকার টহল পুলিশ ও পথচারীরা ট্রাকের চালক রাসেল খান ও গাড়ির ভেতরে থাকা অপর দুই পরিচ্ছন্নতাকর্মী গোলাম রব্বানী ও বেলালকে আটক করে।

দক্ষিণ সিটির পরিবহন বিভাগ সূত্র বলছে, যে গাড়ির চাপায় নাঈম হাসান নিহত হয়েছে, সেটি ভারী যান। সংস্থাটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে ব্যবহারের জন্য এমন ৩১৭টি ভারী যান আছে। কিন্তু চালক আছেন মাত্র ৮৬ জন। রেওয়াজ অনুযায়ী পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মধ্যে যাদের লাইসেন্স আছে, তারা গাড়িগুলো চালাচ্ছেন।

হারুন ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া কীভাবে এতো দিন গাড়ি চালিয়ে আসছিলো এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, হারুনের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিলো। রাসেলের ছিলো না, রাসেল সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী কর্মী ছিলো। কাগজপত্রে হারুনের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিলো বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

এদিকে ডিএসসিসির একাধিক সূত্র জানায়, হারুন ও রাসেলের মতো এমন আরও শতাধিক চালক রয়েছে, যারা ক্লিনার ও পিয়ন হিসেবেই নিয়োগপ্রাপ্ত। কেউ আবার সিটি করপোরেশনের কোনো কর্মী নন। কিন্তু পরিবহন বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তার আশীর্বাদে অর্থের বিনিময়ে তাদের গাড়িচালক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। শুক্রবার হারুনকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব জানায় রাসেল ও হারুন দুজনেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই।

এদিকে হারুনের ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে এমন দাবি করছেন সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সেটা সত্যি কিনা জানতে চাইলে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদে গ্রেপ্তার হারুন জানিয়েছে তার কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। হারুন পরিচ্ছন্নতাকর্মী হয়েও এতোদিন গাড়ি চালিয়ে আসছেন। বিষয়টি আমরা সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে জানিয়েছি। ওই কর্মকর্তা কীভাবে বলছেন হারুনের লাইসেন্স আছে সেটা আমি বুঝতে পারছি না।

বিজনেস আওয়ার/২৭ নভেম্বর,২০২১/ এএইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: