ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আসামিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দণ্ড কার্যকর হবে

  • পোস্ট হয়েছে : ০২:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২১
  • 7

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন সাজার রায় দিয়েছেন আদালত। এ সময় আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে জানান, আসামিরা নির্মমভাবে একজন মেধাবী ছাত্রকে হত্যা করেছেন বিধায় তাঁদের প্রতি কোনো প্রকার সহানুভূতি দেখানোর সুযোগ নেই।

ট্রাইব্যুনাল রায়ে উল্লেখ করেছেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। আসামিরা নির্মমভাবে একজন মেধাবী ছাত্রকে হত্যা করেছেন বিধায় তাঁদের প্রতি কোনো প্রকার সহানুভূতি দেখানোর সুযোগ নেই। এ কারণে তাঁদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করাই যুক্তিযুক্ত।’

ট্রাইব্যুনাল আরও বলেন, ‘আবরার ফাহাদের মর্মান্তিক মৃত্যু বাংলাদেশের সব মানুষকে ব্যথিত করেছে। এ ধরনের মর্মান্তিক ও নৃশংস ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তা রোধকল্পে সব আসামিকে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।’

ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেছেন, ‘মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত দণ্ড কার্যকর করতে হবে।’

রায়ে আরও বলা হয়েছে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্টের অনুমোদন নিতে হবে। এ কারণে তিনি মামলার নথি হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্সের জন্য পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে আসামিরা ইচ্ছে করলে এই দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। পলাতক আসামিরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর অথবা দেশের কোনো আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর তাঁদের রায় কার্যকর হবে।

২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রটি আদালতে জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক ওয়াহেদুজ্জামান।

অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি ১৯ জন। এ ছাড়া তদন্তে আরও ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

ঘটনার বিবরণ–
ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নিয়ে যান বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডর থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ফাহাদের বাবা মো. বরকত উল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্তে জানা গেছে, রাত ১০টা থেকে একটানা রাত ২টা পর্যন্ত আবরারকে শিবির সন্দেহে পেটানো হয়। ক্রিকেট স্টাম্প, স্কিপিং দড়ি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। কিলঘুষি, লাথিও মারা হয়। এইভাবে আবরারকে হত্যা করা হয়।

স্বীকারোক্তি–
এ মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আট আসামি। তাঁরা হলেন ইফতি মোশাররফ হোসেন সকাল, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, অনিক সরকার, মো. মুজাহিদুর রহমান, মনিরুজ্জামান মনির, এ এস এম নাজমুস শাদাত ও তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এই মামলার প্রধান কৌঁসুলি মোশারফ হোসেন কাজল, আবু আবদুল্লাহ ভূঞাঁ, আব্দুস সোবহান তরফদার, মিজানুর রহমান খান প্রমুখ।

আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন মাহবুব আহমেদ, শহিদুল ইসলাম সর্দার, আজিজুর রহমান দুলু, শ্রী প্রাণনাথ প্রমুখ।

বিজনেস আওয়ার/০৮ ডিসেম্বর, ২০২১/এএইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

আসামিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দণ্ড কার্যকর হবে

পোস্ট হয়েছে : ০২:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন সাজার রায় দিয়েছেন আদালত। এ সময় আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে জানান, আসামিরা নির্মমভাবে একজন মেধাবী ছাত্রকে হত্যা করেছেন বিধায় তাঁদের প্রতি কোনো প্রকার সহানুভূতি দেখানোর সুযোগ নেই।

ট্রাইব্যুনাল রায়ে উল্লেখ করেছেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। আসামিরা নির্মমভাবে একজন মেধাবী ছাত্রকে হত্যা করেছেন বিধায় তাঁদের প্রতি কোনো প্রকার সহানুভূতি দেখানোর সুযোগ নেই। এ কারণে তাঁদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করাই যুক্তিযুক্ত।’

ট্রাইব্যুনাল আরও বলেন, ‘আবরার ফাহাদের মর্মান্তিক মৃত্যু বাংলাদেশের সব মানুষকে ব্যথিত করেছে। এ ধরনের মর্মান্তিক ও নৃশংস ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তা রোধকল্পে সব আসামিকে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।’

ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেছেন, ‘মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত দণ্ড কার্যকর করতে হবে।’

রায়ে আরও বলা হয়েছে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্টের অনুমোদন নিতে হবে। এ কারণে তিনি মামলার নথি হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্সের জন্য পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে আসামিরা ইচ্ছে করলে এই দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। পলাতক আসামিরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর অথবা দেশের কোনো আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর তাঁদের রায় কার্যকর হবে।

২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রটি আদালতে জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক ওয়াহেদুজ্জামান।

অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি ১৯ জন। এ ছাড়া তদন্তে আরও ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

ঘটনার বিবরণ–
ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নিয়ে যান বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডর থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ফাহাদের বাবা মো. বরকত উল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্তে জানা গেছে, রাত ১০টা থেকে একটানা রাত ২টা পর্যন্ত আবরারকে শিবির সন্দেহে পেটানো হয়। ক্রিকেট স্টাম্প, স্কিপিং দড়ি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। কিলঘুষি, লাথিও মারা হয়। এইভাবে আবরারকে হত্যা করা হয়।

স্বীকারোক্তি–
এ মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আট আসামি। তাঁরা হলেন ইফতি মোশাররফ হোসেন সকাল, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, অনিক সরকার, মো. মুজাহিদুর রহমান, মনিরুজ্জামান মনির, এ এস এম নাজমুস শাদাত ও তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এই মামলার প্রধান কৌঁসুলি মোশারফ হোসেন কাজল, আবু আবদুল্লাহ ভূঞাঁ, আব্দুস সোবহান তরফদার, মিজানুর রহমান খান প্রমুখ।

আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন মাহবুব আহমেদ, শহিদুল ইসলাম সর্দার, আজিজুর রহমান দুলু, শ্রী প্রাণনাথ প্রমুখ।

বিজনেস আওয়ার/০৮ ডিসেম্বর, ২০২১/এএইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: