ঢাকা , শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জীবনকে ক্ষতির দিকে ঠেলে দেওয়াও নিষিদ্ধ

  • পোস্ট হয়েছে : ০৮:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • 1

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : মুমিন কাবাগৃহের চেয়েও মর্যাদাবান। প্রখ্যাত তাবেঈন নাফে (রহ.) বলেন, একদিন আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বায়তুল্লাহ বা কাবাগৃহের দিকে তাকিয়ে বলেন, তুমি কত বৃহৎ! তুমি কত মর্যাদাবান! কিন্তু আল্লাহর কাছে মুমিন তোমার চেয়েও বেশি মর্যাদাবান। (তিরমিজি, হাদিস : ২০৩২)

মানুষের জীবন এতই মূল্যবান যে বাঁচাতে প্রয়োজনে হারাম উপকরণ সাময়িক ব্যবহার করা বৈধ হয়ে যায়। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই তিনি (আল্লাহ) তোমাদের জন্য হারাম করেছেন মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের গোশত এবং যা গায়রুল্লাহর (আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো) নামে জবেহ করা হয়েছে।

সুতরাং যে নিরুপায়, কিন্তু অবাধ্য বা সীমা লঙ্ঘনকারী নয় (ওই ব্যক্তি এসব খাবার গ্রহণ করলে), তার কোনো পাপ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৭৩)
জীবন বাঁচানোর তাগিদে ইসলামের তুলনামূলক কঠিন বিধান পালন না করে বিকল্প বিধান পালন করার সুযোগ আছে। এই তাগিদ থেকেই অজু-গোসলের বিপরীতে তায়াম্মুম, মোজা মাসেহ করা ইত্যাদির বিধান দেওয়া হয়েছে। জাবির (রা.) বলেন, একবার আমরা কোনো এক সফরে বের হই। পথিমধ্যে আমাদের একজনের মাথা পাথরের আঘাতে ফেটে যায়। ওই অবস্থায় তার স্বপ্নদোষ হয়। সে সঙ্গীদের জিজ্ঞেস করল, আমার জন্য তায়াম্মুম করার সুযোগ আছে কি? তারা বলল, যেহেতু তুমি পানি ব্যবহার করতে সক্ষম, তাই তোমাকে তায়াম্মুম করার সুযোগ দেওয়া যায় না। অতএব সে গোসল করল। অতঃপর সে মৃত্যুবরণ করল।

নবী (সা.)-এর কাছে এসে আমরা ঘটনাটি তাঁকে জানাই। তিনি বলেন, এরা অন্যায়ভাবে তাকে হত্যা করেছে। আল্লাহ এদের ধ্বংস করুন। তাদের যখন জানা ছিল না, তারা কেন জিজ্ঞেস করে নিল না। কেননা অজ্ঞতার ওষুধ হচ্ছে জিজ্ঞাসা করা। ওই লোকটির জন্য তায়াম্মুম করাই যথেষ্ট ছিল। আর জখমের স্থানে ব্যান্ডেজ করে তার ওপর মাসাহ করে শরীরের অন্যা স্থান ধুয়ে ফেললেই হতো। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৩৬)

মানুষের জীবন এতই মূল্যবান যে একটি অন্যায় হত্যাকে ইসলাম বিশ্বমানবতাকে হত্যার সমতুল্য বলে ঘোষণা করেছে। কোরআন বলছে, ‘নরহত্যা কিংবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজ করা ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকেই হত্যা করল। আর যে কারো প্রাণ রক্ষা করল, সে যেন (বিশ্বের) সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল। ’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৩২)

জীবন অমূল্য সম্পদ। এই জীবনকে বাঁচাতে প্রয়োজনে কখনো মুখে কুফরি শব্দ উচ্চারিত হলেও তা মাফ করে দেওয়া হবে বলে আশা করা যায়। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘কেউ আল্লাহর ওপর ঈমান আনার পর তাঁকে অস্বীকার করলে এবং কুফরির জন্য হৃদয় উম্মুক্ত রাখলে তার ওপর আপতিত হবে আল্লাহর গজব। তার জন্য আছে মহাশাস্তি। তবে ওই ব্যক্তি এর ব্যতিক্রম, যাকে কুফরির জন্য বাধ্য করা হয়; কিন্তু তার অন্তর ঈমানে অবিচলিত। ’ (সুরা নাহল, আয়াত : ১০৬)

সুতরাং অবহেলায় এই জীবনকে নষ্ট করা যাবে না। জীবনকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া যাবে না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় করো এবং নিজেদের হাতে নিজেদের ধ্বংসের দিকে নিক্ষেপ করো না…। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৫)

বিজনেসে আওয়ার/১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২/ জে ভি

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

জীবনকে ক্ষতির দিকে ঠেলে দেওয়াও নিষিদ্ধ

পোস্ট হয়েছে : ০৮:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : মুমিন কাবাগৃহের চেয়েও মর্যাদাবান। প্রখ্যাত তাবেঈন নাফে (রহ.) বলেন, একদিন আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বায়তুল্লাহ বা কাবাগৃহের দিকে তাকিয়ে বলেন, তুমি কত বৃহৎ! তুমি কত মর্যাদাবান! কিন্তু আল্লাহর কাছে মুমিন তোমার চেয়েও বেশি মর্যাদাবান। (তিরমিজি, হাদিস : ২০৩২)

মানুষের জীবন এতই মূল্যবান যে বাঁচাতে প্রয়োজনে হারাম উপকরণ সাময়িক ব্যবহার করা বৈধ হয়ে যায়। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই তিনি (আল্লাহ) তোমাদের জন্য হারাম করেছেন মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের গোশত এবং যা গায়রুল্লাহর (আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো) নামে জবেহ করা হয়েছে।

সুতরাং যে নিরুপায়, কিন্তু অবাধ্য বা সীমা লঙ্ঘনকারী নয় (ওই ব্যক্তি এসব খাবার গ্রহণ করলে), তার কোনো পাপ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৭৩)
জীবন বাঁচানোর তাগিদে ইসলামের তুলনামূলক কঠিন বিধান পালন না করে বিকল্প বিধান পালন করার সুযোগ আছে। এই তাগিদ থেকেই অজু-গোসলের বিপরীতে তায়াম্মুম, মোজা মাসেহ করা ইত্যাদির বিধান দেওয়া হয়েছে। জাবির (রা.) বলেন, একবার আমরা কোনো এক সফরে বের হই। পথিমধ্যে আমাদের একজনের মাথা পাথরের আঘাতে ফেটে যায়। ওই অবস্থায় তার স্বপ্নদোষ হয়। সে সঙ্গীদের জিজ্ঞেস করল, আমার জন্য তায়াম্মুম করার সুযোগ আছে কি? তারা বলল, যেহেতু তুমি পানি ব্যবহার করতে সক্ষম, তাই তোমাকে তায়াম্মুম করার সুযোগ দেওয়া যায় না। অতএব সে গোসল করল। অতঃপর সে মৃত্যুবরণ করল।

নবী (সা.)-এর কাছে এসে আমরা ঘটনাটি তাঁকে জানাই। তিনি বলেন, এরা অন্যায়ভাবে তাকে হত্যা করেছে। আল্লাহ এদের ধ্বংস করুন। তাদের যখন জানা ছিল না, তারা কেন জিজ্ঞেস করে নিল না। কেননা অজ্ঞতার ওষুধ হচ্ছে জিজ্ঞাসা করা। ওই লোকটির জন্য তায়াম্মুম করাই যথেষ্ট ছিল। আর জখমের স্থানে ব্যান্ডেজ করে তার ওপর মাসাহ করে শরীরের অন্যা স্থান ধুয়ে ফেললেই হতো। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৩৬)

মানুষের জীবন এতই মূল্যবান যে একটি অন্যায় হত্যাকে ইসলাম বিশ্বমানবতাকে হত্যার সমতুল্য বলে ঘোষণা করেছে। কোরআন বলছে, ‘নরহত্যা কিংবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজ করা ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকেই হত্যা করল। আর যে কারো প্রাণ রক্ষা করল, সে যেন (বিশ্বের) সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল। ’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৩২)

জীবন অমূল্য সম্পদ। এই জীবনকে বাঁচাতে প্রয়োজনে কখনো মুখে কুফরি শব্দ উচ্চারিত হলেও তা মাফ করে দেওয়া হবে বলে আশা করা যায়। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘কেউ আল্লাহর ওপর ঈমান আনার পর তাঁকে অস্বীকার করলে এবং কুফরির জন্য হৃদয় উম্মুক্ত রাখলে তার ওপর আপতিত হবে আল্লাহর গজব। তার জন্য আছে মহাশাস্তি। তবে ওই ব্যক্তি এর ব্যতিক্রম, যাকে কুফরির জন্য বাধ্য করা হয়; কিন্তু তার অন্তর ঈমানে অবিচলিত। ’ (সুরা নাহল, আয়াত : ১০৬)

সুতরাং অবহেলায় এই জীবনকে নষ্ট করা যাবে না। জীবনকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া যাবে না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় করো এবং নিজেদের হাতে নিজেদের ধ্বংসের দিকে নিক্ষেপ করো না…। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৫)

বিজনেসে আওয়ার/১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২/ জে ভি

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: