ঢাকা , রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএসইসির পনের ট্রেডার স্থগিতাদেশ নিয়ে বিতর্ক

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০২২
  • 0

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৯ ব্রোকারেজ হাউজের ১৫ ট্রেডারের লেনদেন কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ নিয়ে ব্রোকার কমিউনিটির মধ্যে বিতর্ক উঠেছে। শুন্য দর প্রস্তাবের মাধ্যমে ওই ট্রেডাররা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন করেছে বলে মনে করে কমিশন। তবে এমন দর প্রস্তাব নিয়মের মধ্যেই রয়েছে এবং নিয়মিত ঘটে বলে ব্রোকার কমিউনিটির দাবি। যে কারনে বিএসইসির ১৫ ট্রেডারের কার্যক্রমে স্থগিতাদেশকে মানতে পারছেন না তারা।

বিএসইসির দাবি, গতকাল ৯ ব্রোকারেজ হাউজের ১৫ জন ট্রেডার ৯টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারে বিক্রয়াদেশ দর দেন শুন্য টাকা। তাদের এই বিক্রয়াদেশ অস্বাভাবিক। এই পরিস্থিতিতে ৯ ব্রোকারেজ হাউজের ১৫ জন ট্রেডারকে লেনদেন কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দিয়েছে কমিশন

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বিজনেস আওয়ারকে বলেন, আগের দিনের থেকে সর্বোচ্চ ২% কমে সুযোগ থাকলেও ৯টি ব্রোকারেজ হাউজের ১৫ জন ট্রেডার তালিকাভুক্ত ৯ কোম্পানির শেয়ারে শুন্য দরে বিক্রয়াদেশ দেয়। যা সন্দেহজনক ও অস্বাভাবিক। এটা দু-একজন হলে হয়তো সন্দেহজনক হতো না। এ কারনে ওই ১৫ জনকে লেনদেন কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।

তবে বিক্রয়াদেশ দেওয়ার নিয়মের মধ্যেই একজন বিক্রেতা সিকিউরিটিজের পাশাপাশি দর উল্লেখ করতেও পারে এবং নাও পারে বলে দাবি ব্রোকারদের।

শেয়ারবাজারে বর্তমানে তিন ভাবে বিক্রয়াদেশ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে লিমিট প্রাইস, মার্কেট প্রাইস ও মার্কেট বেস্ট প্রাইস পদ্ধতি। এই ৩টি পদ্ধতির মধ্যে শুধুমাত্র ‘লিমিট প্রাইস’ এর ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজের পরিমাণের পাশাপাশি দর উল্লেখ করতে হয়।

যেমন ছবিতে একজন বিনিয়োগকারী ‘লিমিট প্রাইস’ পদ্ধতিতে ১ হাজার বেক্সিমকোর শেয়ার বিক্রির আদেশ দিয়েছেন। যা বিক্রি করতে তাকে শেয়ারের পাশাপাশি দর উল্লেখের অপশন রয়েছে এবং প্রস্তাব করতে হয়েছে।

তবে মার্কেট প্রাইস ও মার্কেট বেস্ট প্রাইস পদ্ধতিতে দর প্রস্তাবের কোন সুযোগ নেই। ওই দুই পদ্ধতিতে শুধুমাত্র কি পরিমাণ সিকিউরিটিজ বিক্রি করতে চায়, তা উল্লেখ করলেই হয়। যেমন কেউ যদি ‘মার্কেট প্রাইস’ পদ্ধতিতে লেনদেন করতে চায়, তাহলে শুধুমাত্র সিকিউরিটিজের পরিমাণ উল্লেখ করতে পারবে। আর ওই সিকিউরিটিজ কেনার ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকারের মধ্যে যত কম দরেই ক্রেতা থাকুক না কেনো, সেই ক্রেতা কিনে নেবে। ক্রেতা না থাকলে বিক্রি হবে না।

এই ছবিতে যেমন একজন বিনিয়োগকারী ‘মার্কেট প্রাইস’ পদ্ধতিতে ১ হাজার বেক্সিমকোর শেয়ার বিক্রির আদেশ দিয়েছেন। যা বিক্রি করতে তাকে শেয়ারের পরিমাণ উল্লেখ করতে হয়েছে। কিন্তু এই পদ্ধতিতে দর উল্লেখের কোন সুযোগই নেই।

গতকালও ১৫ ট্রেডার ৯ কোম্পানির শেয়ারে ‘মার্কেট প্রাইস’ পদ্ধতিতে বিক্রয়াদেশ দিয়েছিলেন। যেখানে সিকিউরিটিজের দর উল্লেখ করার কোন সুযোগ ছিল না। আর এটাকেই শুন্য দরে দর প্রস্তাব বিবেচনায় অস্বাভাবিক মনে করে ১৫ ট্রেডারের কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দিয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও বিজনেস আওয়ারকে বলেন, বিদ্যমান নিয়মের মধ্যেই দর উল্লেখ না করে শুধুমাত্র সিকিউরিটিজ বিক্রির আদেশ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। যা নিয়মিত হয়। এতে প্রকৃতপক্ষে শুন্য দর প্রস্তাব বলে কিছু নেই। সত্যিকার অর্থে ‘মার্কেট প্রাইস’ পদ্ধতিতে কোন দরই প্রস্তাবের সুযোগই নেই। ওই পদ্ধতিতে শুধুমাত্র সিকিউরিটিজের পরিমাণ বসানো যায় এবং তার ক্রেতা থাকলে বিক্রি সম্পন্ন হয়।

বিজনেস আওয়ার/১৯ এপ্রিল, ২০২২/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

One thought on “বিএসইসির পনের ট্রেডার স্থগিতাদেশ নিয়ে বিতর্ক

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বিএসইসির পনের ট্রেডার স্থগিতাদেশ নিয়ে বিতর্ক

পোস্ট হয়েছে : ০৫:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৯ ব্রোকারেজ হাউজের ১৫ ট্রেডারের লেনদেন কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ নিয়ে ব্রোকার কমিউনিটির মধ্যে বিতর্ক উঠেছে। শুন্য দর প্রস্তাবের মাধ্যমে ওই ট্রেডাররা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন করেছে বলে মনে করে কমিশন। তবে এমন দর প্রস্তাব নিয়মের মধ্যেই রয়েছে এবং নিয়মিত ঘটে বলে ব্রোকার কমিউনিটির দাবি। যে কারনে বিএসইসির ১৫ ট্রেডারের কার্যক্রমে স্থগিতাদেশকে মানতে পারছেন না তারা।

বিএসইসির দাবি, গতকাল ৯ ব্রোকারেজ হাউজের ১৫ জন ট্রেডার ৯টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারে বিক্রয়াদেশ দর দেন শুন্য টাকা। তাদের এই বিক্রয়াদেশ অস্বাভাবিক। এই পরিস্থিতিতে ৯ ব্রোকারেজ হাউজের ১৫ জন ট্রেডারকে লেনদেন কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দিয়েছে কমিশন

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বিজনেস আওয়ারকে বলেন, আগের দিনের থেকে সর্বোচ্চ ২% কমে সুযোগ থাকলেও ৯টি ব্রোকারেজ হাউজের ১৫ জন ট্রেডার তালিকাভুক্ত ৯ কোম্পানির শেয়ারে শুন্য দরে বিক্রয়াদেশ দেয়। যা সন্দেহজনক ও অস্বাভাবিক। এটা দু-একজন হলে হয়তো সন্দেহজনক হতো না। এ কারনে ওই ১৫ জনকে লেনদেন কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।

তবে বিক্রয়াদেশ দেওয়ার নিয়মের মধ্যেই একজন বিক্রেতা সিকিউরিটিজের পাশাপাশি দর উল্লেখ করতেও পারে এবং নাও পারে বলে দাবি ব্রোকারদের।

শেয়ারবাজারে বর্তমানে তিন ভাবে বিক্রয়াদেশ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে লিমিট প্রাইস, মার্কেট প্রাইস ও মার্কেট বেস্ট প্রাইস পদ্ধতি। এই ৩টি পদ্ধতির মধ্যে শুধুমাত্র ‘লিমিট প্রাইস’ এর ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজের পরিমাণের পাশাপাশি দর উল্লেখ করতে হয়।

যেমন ছবিতে একজন বিনিয়োগকারী ‘লিমিট প্রাইস’ পদ্ধতিতে ১ হাজার বেক্সিমকোর শেয়ার বিক্রির আদেশ দিয়েছেন। যা বিক্রি করতে তাকে শেয়ারের পাশাপাশি দর উল্লেখের অপশন রয়েছে এবং প্রস্তাব করতে হয়েছে।

তবে মার্কেট প্রাইস ও মার্কেট বেস্ট প্রাইস পদ্ধতিতে দর প্রস্তাবের কোন সুযোগ নেই। ওই দুই পদ্ধতিতে শুধুমাত্র কি পরিমাণ সিকিউরিটিজ বিক্রি করতে চায়, তা উল্লেখ করলেই হয়। যেমন কেউ যদি ‘মার্কেট প্রাইস’ পদ্ধতিতে লেনদেন করতে চায়, তাহলে শুধুমাত্র সিকিউরিটিজের পরিমাণ উল্লেখ করতে পারবে। আর ওই সিকিউরিটিজ কেনার ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকারের মধ্যে যত কম দরেই ক্রেতা থাকুক না কেনো, সেই ক্রেতা কিনে নেবে। ক্রেতা না থাকলে বিক্রি হবে না।

এই ছবিতে যেমন একজন বিনিয়োগকারী ‘মার্কেট প্রাইস’ পদ্ধতিতে ১ হাজার বেক্সিমকোর শেয়ার বিক্রির আদেশ দিয়েছেন। যা বিক্রি করতে তাকে শেয়ারের পরিমাণ উল্লেখ করতে হয়েছে। কিন্তু এই পদ্ধতিতে দর উল্লেখের কোন সুযোগই নেই।

গতকালও ১৫ ট্রেডার ৯ কোম্পানির শেয়ারে ‘মার্কেট প্রাইস’ পদ্ধতিতে বিক্রয়াদেশ দিয়েছিলেন। যেখানে সিকিউরিটিজের দর উল্লেখ করার কোন সুযোগ ছিল না। আর এটাকেই শুন্য দরে দর প্রস্তাব বিবেচনায় অস্বাভাবিক মনে করে ১৫ ট্রেডারের কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দিয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও বিজনেস আওয়ারকে বলেন, বিদ্যমান নিয়মের মধ্যেই দর উল্লেখ না করে শুধুমাত্র সিকিউরিটিজ বিক্রির আদেশ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। যা নিয়মিত হয়। এতে প্রকৃতপক্ষে শুন্য দর প্রস্তাব বলে কিছু নেই। সত্যিকার অর্থে ‘মার্কেট প্রাইস’ পদ্ধতিতে কোন দরই প্রস্তাবের সুযোগই নেই। ওই পদ্ধতিতে শুধুমাত্র সিকিউরিটিজের পরিমাণ বসানো যায় এবং তার ক্রেতা থাকলে বিক্রি সম্পন্ন হয়।

বিজনেস আওয়ার/১৯ এপ্রিল, ২০২২/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: