ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সোনালি পেপারের জালিয়াতির অভিযোগ তদন্দের মধ্যে রাইট অনুমোদন

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ এপ্রিল ২০২২
  • 71

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেড পূণ:মূল্যায়নের মাধ্যমে অতিরঞ্জিত করে দেখানোর অভিযোগ যাচাই প্রক্রিয়ার মধ্যেই কোম্পানিটির রাইট শেয়ার ছেড়ে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন দিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কমিশনের ৮২১তম নিয়মিত সভায় কোম্পানিটিকে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ১ কোটি ৯ লাখ ৮১ হাজার ৭২৯টি শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর ফলে কোম্পানিটি এই শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে বাজার থেকে ১০ কোটি ৯৮ লাখ ১৭ হাজার ২৯০ টাকা সংগ্রহ করবে।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

তবে এই কোম্পানিটির বিরুদ্ধে অতিরঞ্জিত করে জমি পুনর্মূল্যায়ন করার অভিযোগ রয়েছে। তাই সম্প্রতি কোম্পানির দুটি সমাপ্ত হিসাব বছরের (২০২০ ও ২০২১ সালের ৩০ জুন) আর্থিক প্রতিবেদন পুনরায় বিশেষ নিরীক্ষা করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এ জন্য আজিজ হালিম খায়ের চৌধুরী অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসকে নিয়োগ দিয়েছে কমিশন।

সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি ১১.৫০ একর জমি স্বতন্ত্র মূল্যায়নের জন্য এস. এইচ. খান অ্যান্ড কেং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসকে নিয়োগ দেয়। পরবর্তীতে ওই বছরের ১৮ মে কোম্পানির নিয়োগকৃত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান মূল্যায়ন প্রতিবেদন জমা দেয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় অবস্থিত মোট ১১৫০ একর জমিটি পুনর্মূল্যায়ন করা হয়েছে ৫১৭.৫০ কোটি টাকায়। এর আগে জমিটির পূর্ব মূল্য ছিল ১.১৩৭ কোটি টাকা। জমিটি পুনর্মূল্যায়ন করার সময় প্রতি ডেসিমেলের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে কোম্পানিটির মোট শেয়ারহোল্ডারদের ইক্যুইটি এবং সোনালী পেপারের শেয়ারপ্রতি নিট অ্যাসেট ভ্যালুকে (এনএভি) প্রভাবিত করেছে।

ফলে নতুন বিশেষ নিরীক্ষক নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় অবস্থিত সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলসের পূর্বোক্ত ১১.৫০ একর জমি স্বতন্ত্র মূল্যায়ন করবে। ওই স্থানে একই ধরনের জমি সরকারি মৌজা মূল্যের সঙ্গে তুলনা করে উল্লেখিত জমি মূল্যায়ন করতে হবে। আর নিরীক্ষক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে ২০১৩ সালের ১৮ আগস্ট জারি করার বিএসইসির নির্দেশনা মেনে চলতে নির্দেশ দেওয়া হলো।

আরও পড়ুন……
সোনালি পেপারের মূল ব্যবসার তুলনায় শেয়ারবাজার থেকে মুনাফা বেশি
সোনালি পেপারের শেয়ার ব্যবসার আড়ালে পরিচালকদের ব্যক্তিগত স্বার্থ

এছাড়া কোম্পানিটি ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ডস (আইএফআরএস) এবং ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড অন অডিটিং (আইএসএ) অনুযায়ী কোম্পানির সম্পদ, দায় এবং ইক্যুইটিসহ ব্যালেন্স শিট এবং আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করেছে কি-না তা খতিয়ে দেখার জন্য বিশেষ নিরীক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হলো।

আর সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বিধিমালা, ২০২০ এর বিধি ১৪, উপ-বিধি (৩) এবং (৭) এর অধীনে এক মাসের মধ্যে বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রম শেষে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করা নির্দেশ দেওয়া হলো। এ নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ফি বাবদ আজিজ হালিম খায়ের চৌধুরী অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসকে প্রদান করা হবে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলসের আর্থিক প্রতিবেদন বিশেষ নিরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল বিএসইসি। আগের নির্দেশনা বাতিল করে নিরীক্ষা সংক্রান্ত নতুন কিছু বিষয় উল্লেখ করে সম্প্রতি কোম্পানির গত দুটি হিসাব বছরে আর্থিক প্রতিবেদন পুনরায় বিশেষ নিরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রাইট ইস্যুর বিষয়ে আজকের সভায় সোনলী পেপারকে (১রাইট :২) অর্থাৎ বিদ্যমান দুটি শেয়ারের বিপরীতে একটি করে সাধারণ রাইটস শেয়ার হিসেবে বাজারে ছেড়ে অর্থ উত্তোলনের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই অর্থদিয়ে কোম্পানির মূলধনী যন্ত্রপাতি কেনা হবে। কোম্পানির আবেদনের প্রেক্ষিতে রাইট শেয়ার ছেড়ে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

তবে শর্ত হচ্ছে কোম্পানটি আগামী ৫ বছর বোনাস শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে তার মূলধন বৃদ্ধি করতে পারবে না। স্পনসর-ডিরেক্টরা ৩ বছর কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করতে পারবে না। তারা লক ইনের মধ্যে থাকবেন। কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে ৩০ জুন ২০২১ সময়ে কোম্পানির শেয়ার প্রতি নীট সম্পদ মূল্য ২৩৫ দশমিক ২৭ টাকা। শেয়ার প্রতি আয় (ডায়লুটেড) ৪ টাকা ৭ পয়সা। কোম্পানটির ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে রয়েছে ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

বিজনেস আওয়ার/২০ এপ্রিল, ২০২২/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সোনালি পেপারের জালিয়াতির অভিযোগ তদন্দের মধ্যে রাইট অনুমোদন

পোস্ট হয়েছে : ০৪:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ এপ্রিল ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেড পূণ:মূল্যায়নের মাধ্যমে অতিরঞ্জিত করে দেখানোর অভিযোগ যাচাই প্রক্রিয়ার মধ্যেই কোম্পানিটির রাইট শেয়ার ছেড়ে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন দিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কমিশনের ৮২১তম নিয়মিত সভায় কোম্পানিটিকে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ১ কোটি ৯ লাখ ৮১ হাজার ৭২৯টি শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর ফলে কোম্পানিটি এই শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে বাজার থেকে ১০ কোটি ৯৮ লাখ ১৭ হাজার ২৯০ টাকা সংগ্রহ করবে।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

তবে এই কোম্পানিটির বিরুদ্ধে অতিরঞ্জিত করে জমি পুনর্মূল্যায়ন করার অভিযোগ রয়েছে। তাই সম্প্রতি কোম্পানির দুটি সমাপ্ত হিসাব বছরের (২০২০ ও ২০২১ সালের ৩০ জুন) আর্থিক প্রতিবেদন পুনরায় বিশেষ নিরীক্ষা করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এ জন্য আজিজ হালিম খায়ের চৌধুরী অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসকে নিয়োগ দিয়েছে কমিশন।

সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি ১১.৫০ একর জমি স্বতন্ত্র মূল্যায়নের জন্য এস. এইচ. খান অ্যান্ড কেং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসকে নিয়োগ দেয়। পরবর্তীতে ওই বছরের ১৮ মে কোম্পানির নিয়োগকৃত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান মূল্যায়ন প্রতিবেদন জমা দেয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় অবস্থিত মোট ১১৫০ একর জমিটি পুনর্মূল্যায়ন করা হয়েছে ৫১৭.৫০ কোটি টাকায়। এর আগে জমিটির পূর্ব মূল্য ছিল ১.১৩৭ কোটি টাকা। জমিটি পুনর্মূল্যায়ন করার সময় প্রতি ডেসিমেলের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে কোম্পানিটির মোট শেয়ারহোল্ডারদের ইক্যুইটি এবং সোনালী পেপারের শেয়ারপ্রতি নিট অ্যাসেট ভ্যালুকে (এনএভি) প্রভাবিত করেছে।

ফলে নতুন বিশেষ নিরীক্ষক নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় অবস্থিত সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলসের পূর্বোক্ত ১১.৫০ একর জমি স্বতন্ত্র মূল্যায়ন করবে। ওই স্থানে একই ধরনের জমি সরকারি মৌজা মূল্যের সঙ্গে তুলনা করে উল্লেখিত জমি মূল্যায়ন করতে হবে। আর নিরীক্ষক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে ২০১৩ সালের ১৮ আগস্ট জারি করার বিএসইসির নির্দেশনা মেনে চলতে নির্দেশ দেওয়া হলো।

আরও পড়ুন……
সোনালি পেপারের মূল ব্যবসার তুলনায় শেয়ারবাজার থেকে মুনাফা বেশি
সোনালি পেপারের শেয়ার ব্যবসার আড়ালে পরিচালকদের ব্যক্তিগত স্বার্থ

এছাড়া কোম্পানিটি ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ডস (আইএফআরএস) এবং ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড অন অডিটিং (আইএসএ) অনুযায়ী কোম্পানির সম্পদ, দায় এবং ইক্যুইটিসহ ব্যালেন্স শিট এবং আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করেছে কি-না তা খতিয়ে দেখার জন্য বিশেষ নিরীক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হলো।

আর সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বিধিমালা, ২০২০ এর বিধি ১৪, উপ-বিধি (৩) এবং (৭) এর অধীনে এক মাসের মধ্যে বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রম শেষে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করা নির্দেশ দেওয়া হলো। এ নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ফি বাবদ আজিজ হালিম খায়ের চৌধুরী অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসকে প্রদান করা হবে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলসের আর্থিক প্রতিবেদন বিশেষ নিরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল বিএসইসি। আগের নির্দেশনা বাতিল করে নিরীক্ষা সংক্রান্ত নতুন কিছু বিষয় উল্লেখ করে সম্প্রতি কোম্পানির গত দুটি হিসাব বছরে আর্থিক প্রতিবেদন পুনরায় বিশেষ নিরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রাইট ইস্যুর বিষয়ে আজকের সভায় সোনলী পেপারকে (১রাইট :২) অর্থাৎ বিদ্যমান দুটি শেয়ারের বিপরীতে একটি করে সাধারণ রাইটস শেয়ার হিসেবে বাজারে ছেড়ে অর্থ উত্তোলনের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই অর্থদিয়ে কোম্পানির মূলধনী যন্ত্রপাতি কেনা হবে। কোম্পানির আবেদনের প্রেক্ষিতে রাইট শেয়ার ছেড়ে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

তবে শর্ত হচ্ছে কোম্পানটি আগামী ৫ বছর বোনাস শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে তার মূলধন বৃদ্ধি করতে পারবে না। স্পনসর-ডিরেক্টরা ৩ বছর কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করতে পারবে না। তারা লক ইনের মধ্যে থাকবেন। কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে ৩০ জুন ২০২১ সময়ে কোম্পানির শেয়ার প্রতি নীট সম্পদ মূল্য ২৩৫ দশমিক ২৭ টাকা। শেয়ার প্রতি আয় (ডায়লুটেড) ৪ টাকা ৭ পয়সা। কোম্পানটির ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে রয়েছে ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

বিজনেস আওয়ার/২০ এপ্রিল, ২০২২/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: