ঢাকা , শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সোনালি পেপারের মূল ব্যবসার তুলনায় শেয়ারবাজার থেকে মুনাফা বেশি

শেয়ারবাজারের চলমান উত্থানে শেয়ার ব্যবসায় ঝুঁকে পড়েছে স্বল্প পরিশোধিত মূলধনের ও গেম্বলিং আইটেম সোনালি পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস কর্তৃপক্ষ। তারা ২২ কোটি টাকার মূলধনের কোম্পানিটির জন্য ঋণ নিয়ে কয়েকগুণ টাকা বিনিয়োগ করেছে শেয়ারবাজারে। যা থেকে কোম্পানিটির চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর ২১) বড় মুনাফাও অর্জন হয়েছে। যা কোম্পানির মূল ব্যবসার থেকেও বেশি।

অথচ ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত সোনালি পেপারের মূল ব্যবসা হচ্ছে ডুপ্লেক্স পেপার বোর্ড, নিউজ প্রিন্ট ও হোয়াইট পেপারস তৈরী করা। যা বিক্রি থেকে মুনাফা অর্জন করা। যে কোম্পানিটি ১৯৮৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হলেও পরবর্তীতে মন্দা ব্যবসার কারনে তালিকাচ্যুত করা হয়। তবে গত বছরের ১৫ জুন পূণ:তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

সোনালি পেপারের প্রথমার্ধে নিজস্ব ব্যবসায় পরিচালন মুনাফা হয়েছে ১৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। একইসময়ে কোম্পানি ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারবাজার থেকে এসেছে ১৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানিটির মূল ব্যবসার থেকে শেয়ারবাজার এখন মুনাফার প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠছে।

কোম্পানিটির চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে শেয়ার ব্যবসায় সিকিউরিটিজ বিক্রি থেকে (রিয়ালাইজড গেইন) মুনাফা হয়েছে ১৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। তবে আনরিয়েলাইজড লোকসান হয়েছে ২ কোটি ১ লাখ টাকা। আগের বছরের প্রথমার্ধে শেয়ার ব্যবসায় কোন মুনাফা বা লোকসান ছিল না।

দেখা গেছে, ওই মুনাফা থেকে কর পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ২৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা বা শেয়ারপ্রতি ১১.৬৭ টাকা। যার পরিমাণ আগের অর্থবছরের প্রথমার্ধে ছিল ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বা ১.৭২ টাকা। এ হিসাবে মুনাফা বেড়েছে ৫৭৮ শতাংশ।

এমন অস্থায়ী ও ঝুঁকিপূর্ণ মুনাফা দেখিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলে গেম্বলারদের সঙ্গে নিয়ে সোনালি পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলসের নিজের শেয়ার দরও বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরপরে এসে সোনালি পেপারের ধারনকৃত শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিতে শুরু করেন পরিচালকেরা। যেখানে মাত্র ৪% শেয়ার বিক্রি করে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ৩.৪২ গুণ টাকা তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন……

মনোস্পুল পেপার-পেপার প্রসেসিং ঋণে জর্জরিত: গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনাসুদে অর্থ প্রদান
বিবিএসের মূল ব্যবসায় লোকসান: সহযোগির বোনাস শেয়ার বেচেঁ নিট মুনাফা

শেয়ার ব্যবসায় ঝুকেঁছে উৎপাদনকারী আনোয়ার গ্যালভানাইজিং
প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের নিট মুনাফার ৬৪ শতাংশ এসেছে শেয়ার ব্যবসা থেকে
প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের মূল ব্যবসায় লোকসান হলেও শেয়ারবাজার দিয়ে বড় মুনাফা

স্বল্প মূলধনীর সোনালি পেপারের ব্যবসাও ছোট। এছাড়া মুনাফাও আহামরি কিছু হয় না। কিন্তু শেয়ার ব্যবসা থেকে অর্জিত মুনাফাকে পুঁজি করে গত কয়েক মাসে শেয়ারটির দর উঠে গেছে অন্য উচ্চতায়। গত ২৭ জুনের ১৯৭.৪০ টাকার শেয়ারটি ১৪ ফেব্রুয়ারি লেনদেন শেষে বেড়ে দাড়িঁয়েছে ৭৩৩.৬০ টাকায়। এক্ষেত্রে দর বেড়েছে ৫৩৬.২০ টাকা বা ২৭২ শতাংশ।

শেয়ারবাজারের দীর্ঘ অভিজ্ঞ এক ট্রেকহোল্ডার বিজনেস আওয়ারকে বলেন, মূল ব্যবসাকে বাদ দিয়ে কোন কোম্পানির শেয়ার ব্যবসায় জড়িয়ে পড়া স্বাভাবিক লক্ষণ না। কিন্তু অনেক কোম্পানিতেই এমনটি হচ্ছে। এছাড়া ‘এ’ কোম্পানি থেকে ‘বি’ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে ওই কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধি এবং ‘বি’ কোম্পানি থেকে ‘এ’ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে ওই কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধির মতো কারসাজির ঘটনা ঘটছে। এক্ষেত্রে অনেকটা পরস্পর যোগসাজোশে এক কোম্পানি আরেক কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধিতে দায়িত্ব পালন করছে। যা দীর্ঘমেয়াদি শেয়ারবাজারের উন্নয়নের পথে বাধাঁ।

তিনি বলেন, মূল ব্যবসার পরিবর্তে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে সাময়িক লাভবান হওয়া যায়, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে সম্ভব না। এখানে রাতারাতি যেমন লাভ করা যায়, তেমনি রাতারাতি লোকসানও হয়। ওইসময় কোম্পানিকে লোকসানে পতিত হতে হবে। অতিত অভিজ্ঞতা এমনটিই বলে। তাই শেয়ারবাজারে একটি কোম্পানির কিছু বিনিয়োগ হতে পারে, কিন্তু মূল ব্যবসার থেকে বেশি না। যদি এমনটি কোন কোম্পানিতে হয়, সেক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদেরকে সচেতন হতে হবে।

শেয়ার ব্যবসায় ঝুকেঁ পড়ার কারন হিসেবে সোনালি পেপারের সচিব রাশিদুল ইমন বিজনেস আওয়ারকে বলেন, করোনার কারনে সব ব্যবসাইতো ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আমাদের ম্যানেজমেন্ট চিন্তা করছে শেয়ারবাজার থেকে যদি কিছুটা ঝুঁকি লাঘব করা যায় বা সুবিধা নেওয়া যায়, এজন্যই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছে।

শেয়ারবাজার থেকে এমন মুনাফা পেতে গত বছরের শেষ প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন ২১) বিনিয়োগে শুরু করে সোনালি পেপার কর্তৃপক্ষ। তারা ওই প্রান্তিকেই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে ৪৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। যা চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে আরও ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে ৩১ ডিসেম্বর বেড়ে দাড়িঁয়েছে (বাজার দর) ৪৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকায়।

এই বিনিয়োগ করতে গিয়ে উচ্চ সুদের মার্জিন ঋণে জড়িঁয়েছে সোনালি পেপার। যে ঋণের কবলে ২০১০ সালের ধসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বিনিয়োগকারীরা। সোনালি পেপারের দুটি বিও হিসাবেই মার্জিন ঋণ নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে এসবিএল ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের পোর্টফোলিওতে ৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা ও ইবিএল সিকিউরিটিজের পোর্টফোলিওতে ৯ কোটি ৪ লাখ টাকার মার্জিন নেওয়া হয়েছে।

মার্জিন ছাড়াও ২২ কোটি টাকার সোনালি পেপার আরও প্রায় ১০৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকার ব্যাংক ঋণে জর্জরিত। গত ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির কাছে মধুমতি ব্যাংক ও পূবালি ব্যাংকের কারেন্ট পোরশনসহ দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ দাড়িঁয়েছে ৫১ কোটি ২২ লাখ টাকা। এছাড়া ব্যাংক দুটির কাছে স্বল্পমেয়াদি আরও ৫৪ কোটি ৬২ লাখ টাকার ঋণ রয়েছে।

মুনাফায় বড় উত্থানের কারন হিসেবে সোনালি পেপার কর্তৃপক্ষ স্টক এক্সচেঞ্জকে বিক্রি ও অন্যান্য আয় বৃদ্ধি কারন হিসেবে জানিয়েছেন। যা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে প্রকাশ করা হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

2 thoughts on “সোনালি পেপারের মূল ব্যবসার তুলনায় শেয়ারবাজার থেকে মুনাফা বেশি

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সোনালি পেপারের মূল ব্যবসার তুলনায় শেয়ারবাজার থেকে মুনাফা বেশি

পোস্ট হয়েছে : ১২:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২

শেয়ারবাজারের চলমান উত্থানে শেয়ার ব্যবসায় ঝুঁকে পড়েছে স্বল্প পরিশোধিত মূলধনের ও গেম্বলিং আইটেম সোনালি পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস কর্তৃপক্ষ। তারা ২২ কোটি টাকার মূলধনের কোম্পানিটির জন্য ঋণ নিয়ে কয়েকগুণ টাকা বিনিয়োগ করেছে শেয়ারবাজারে। যা থেকে কোম্পানিটির চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর ২১) বড় মুনাফাও অর্জন হয়েছে। যা কোম্পানির মূল ব্যবসার থেকেও বেশি।

অথচ ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত সোনালি পেপারের মূল ব্যবসা হচ্ছে ডুপ্লেক্স পেপার বোর্ড, নিউজ প্রিন্ট ও হোয়াইট পেপারস তৈরী করা। যা বিক্রি থেকে মুনাফা অর্জন করা। যে কোম্পানিটি ১৯৮৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হলেও পরবর্তীতে মন্দা ব্যবসার কারনে তালিকাচ্যুত করা হয়। তবে গত বছরের ১৫ জুন পূণ:তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

সোনালি পেপারের প্রথমার্ধে নিজস্ব ব্যবসায় পরিচালন মুনাফা হয়েছে ১৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। একইসময়ে কোম্পানি ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারবাজার থেকে এসেছে ১৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানিটির মূল ব্যবসার থেকে শেয়ারবাজার এখন মুনাফার প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠছে।

কোম্পানিটির চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে শেয়ার ব্যবসায় সিকিউরিটিজ বিক্রি থেকে (রিয়ালাইজড গেইন) মুনাফা হয়েছে ১৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। তবে আনরিয়েলাইজড লোকসান হয়েছে ২ কোটি ১ লাখ টাকা। আগের বছরের প্রথমার্ধে শেয়ার ব্যবসায় কোন মুনাফা বা লোকসান ছিল না।

দেখা গেছে, ওই মুনাফা থেকে কর পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ২৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা বা শেয়ারপ্রতি ১১.৬৭ টাকা। যার পরিমাণ আগের অর্থবছরের প্রথমার্ধে ছিল ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বা ১.৭২ টাকা। এ হিসাবে মুনাফা বেড়েছে ৫৭৮ শতাংশ।

এমন অস্থায়ী ও ঝুঁকিপূর্ণ মুনাফা দেখিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলে গেম্বলারদের সঙ্গে নিয়ে সোনালি পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলসের নিজের শেয়ার দরও বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরপরে এসে সোনালি পেপারের ধারনকৃত শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিতে শুরু করেন পরিচালকেরা। যেখানে মাত্র ৪% শেয়ার বিক্রি করে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ৩.৪২ গুণ টাকা তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন……

মনোস্পুল পেপার-পেপার প্রসেসিং ঋণে জর্জরিত: গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনাসুদে অর্থ প্রদান
বিবিএসের মূল ব্যবসায় লোকসান: সহযোগির বোনাস শেয়ার বেচেঁ নিট মুনাফা

শেয়ার ব্যবসায় ঝুকেঁছে উৎপাদনকারী আনোয়ার গ্যালভানাইজিং
প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের নিট মুনাফার ৬৪ শতাংশ এসেছে শেয়ার ব্যবসা থেকে
প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের মূল ব্যবসায় লোকসান হলেও শেয়ারবাজার দিয়ে বড় মুনাফা

স্বল্প মূলধনীর সোনালি পেপারের ব্যবসাও ছোট। এছাড়া মুনাফাও আহামরি কিছু হয় না। কিন্তু শেয়ার ব্যবসা থেকে অর্জিত মুনাফাকে পুঁজি করে গত কয়েক মাসে শেয়ারটির দর উঠে গেছে অন্য উচ্চতায়। গত ২৭ জুনের ১৯৭.৪০ টাকার শেয়ারটি ১৪ ফেব্রুয়ারি লেনদেন শেষে বেড়ে দাড়িঁয়েছে ৭৩৩.৬০ টাকায়। এক্ষেত্রে দর বেড়েছে ৫৩৬.২০ টাকা বা ২৭২ শতাংশ।

শেয়ারবাজারের দীর্ঘ অভিজ্ঞ এক ট্রেকহোল্ডার বিজনেস আওয়ারকে বলেন, মূল ব্যবসাকে বাদ দিয়ে কোন কোম্পানির শেয়ার ব্যবসায় জড়িয়ে পড়া স্বাভাবিক লক্ষণ না। কিন্তু অনেক কোম্পানিতেই এমনটি হচ্ছে। এছাড়া ‘এ’ কোম্পানি থেকে ‘বি’ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে ওই কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধি এবং ‘বি’ কোম্পানি থেকে ‘এ’ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে ওই কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধির মতো কারসাজির ঘটনা ঘটছে। এক্ষেত্রে অনেকটা পরস্পর যোগসাজোশে এক কোম্পানি আরেক কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধিতে দায়িত্ব পালন করছে। যা দীর্ঘমেয়াদি শেয়ারবাজারের উন্নয়নের পথে বাধাঁ।

তিনি বলেন, মূল ব্যবসার পরিবর্তে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে সাময়িক লাভবান হওয়া যায়, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে সম্ভব না। এখানে রাতারাতি যেমন লাভ করা যায়, তেমনি রাতারাতি লোকসানও হয়। ওইসময় কোম্পানিকে লোকসানে পতিত হতে হবে। অতিত অভিজ্ঞতা এমনটিই বলে। তাই শেয়ারবাজারে একটি কোম্পানির কিছু বিনিয়োগ হতে পারে, কিন্তু মূল ব্যবসার থেকে বেশি না। যদি এমনটি কোন কোম্পানিতে হয়, সেক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদেরকে সচেতন হতে হবে।

শেয়ার ব্যবসায় ঝুকেঁ পড়ার কারন হিসেবে সোনালি পেপারের সচিব রাশিদুল ইমন বিজনেস আওয়ারকে বলেন, করোনার কারনে সব ব্যবসাইতো ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আমাদের ম্যানেজমেন্ট চিন্তা করছে শেয়ারবাজার থেকে যদি কিছুটা ঝুঁকি লাঘব করা যায় বা সুবিধা নেওয়া যায়, এজন্যই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছে।

শেয়ারবাজার থেকে এমন মুনাফা পেতে গত বছরের শেষ প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন ২১) বিনিয়োগে শুরু করে সোনালি পেপার কর্তৃপক্ষ। তারা ওই প্রান্তিকেই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে ৪৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। যা চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে আরও ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে ৩১ ডিসেম্বর বেড়ে দাড়িঁয়েছে (বাজার দর) ৪৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকায়।

এই বিনিয়োগ করতে গিয়ে উচ্চ সুদের মার্জিন ঋণে জড়িঁয়েছে সোনালি পেপার। যে ঋণের কবলে ২০১০ সালের ধসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বিনিয়োগকারীরা। সোনালি পেপারের দুটি বিও হিসাবেই মার্জিন ঋণ নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে এসবিএল ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের পোর্টফোলিওতে ৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা ও ইবিএল সিকিউরিটিজের পোর্টফোলিওতে ৯ কোটি ৪ লাখ টাকার মার্জিন নেওয়া হয়েছে।

মার্জিন ছাড়াও ২২ কোটি টাকার সোনালি পেপার আরও প্রায় ১০৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকার ব্যাংক ঋণে জর্জরিত। গত ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির কাছে মধুমতি ব্যাংক ও পূবালি ব্যাংকের কারেন্ট পোরশনসহ দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ দাড়িঁয়েছে ৫১ কোটি ২২ লাখ টাকা। এছাড়া ব্যাংক দুটির কাছে স্বল্পমেয়াদি আরও ৫৪ কোটি ৬২ লাখ টাকার ঋণ রয়েছে।

মুনাফায় বড় উত্থানের কারন হিসেবে সোনালি পেপার কর্তৃপক্ষ স্টক এক্সচেঞ্জকে বিক্রি ও অন্যান্য আয় বৃদ্ধি কারন হিসেবে জানিয়েছেন। যা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে প্রকাশ করা হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: