বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : প্রসপেক্টাসে বিভিন্ন বিষয়ে ভুল তথ্যসহ অস্বাভাবিক ভবন নির্মাণ ব্যয় দেখিয়ে শেয়ারবাজারে সাধারন বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১৫ কোটি টাকা উত্তোলন করতে যাচ্ছে আছিয়া সী ফুডস। যার মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ বেশি দেখানো হয়েছে। অথচ এর আগে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করেও সমস্যার কারনে কোম্পানিটিকে বিগত কমিশনের সময়ে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, শেয়ারবাজারে আসার আগে কোম্পানির অস্বাভাবিক সম্পদ, বিক্রি, মুনাফাসহ নানা ইস্যুতে বেশি দেখানো নতুন কিছু না। তবে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার শুরুতে সেই অবস্থার উন্নতির ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই অবস্থা ধরে রাখতে পেরেছে বলে মনে হচ্ছে না।
প্রসপেক্টাসে প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ি, আছিয়া সী ফুডসের ২৭ হাজার ২৩ স্কয়ার ফিটের ভবন রয়েছে। পুরাতন ভবন সত্ত্বেও যা নির্মাণে (জমি ছাড়া) ১২ কোটি ৮ লাখ ৩৮ হাজার ৬৮১ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি স্কয়ার ফিট ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৪ হাজার ৪৭২ টাকা। যা কোনভাবেই বাস্তবসম্মত নয় বলে এ খাতের সংশ্লিষ্টদের দাবি।
এ বিষয়ে প্রকৌশলী ও একটি ডেভেলপার কোম্পানির কর্ণধার মো: হাবিবুর রহমান বিজনেস আওয়ারকে বলেন, ভবন নির্মাণে সাড়ে ৪ হাজার টাকা ব্যয় হওয়ার কোন সুযোগ নেই। যত ভালো মানেরই করা হোক না কেনো, সেটা বর্তমান জিনিসপত্রের বাজার দরেও ৩ হাজার টাকা অতিক্রম করতে পারে না। তবে আসল কথা হলো প্রায় সব কোম্পানিই শেয়ারবাজারে আসার আগে প্রতারণার জন্য বেশি করে দেখিয়ে থাকে।
প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানের বক্তব্য অনুযায়ি, কমপক্ষে ৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকার ভবন হিসাবেই সম্পদ বেশি দেখিয়েছে আছিয়া সী ফুডস। কোম্পানিটি যদি প্রতি স্কয়ার ফিটে ১ হাজার ৪৭২ (৪৪৭২-৩০০০) টাকা করে বেশি দেখিয়ে থাকে, তাহলে (১৪৭২*২৭০২৩) ৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকার বেশি সম্পদ দেখিয়েছে।
একই বিষয়ে আছিয়া সী ফুডসের খুলনা অঞ্চলের এবং সমজাতীয় ব্যবসায়ী এক কোম্পানির কর্মকর্তা বিজনেস আওয়ারকে বলেন, আছিয়া সী ফুডসের ভবন প্রায় ১৫-২০ বছর আগের। ওই সময় ভবন নির্মাণে সর্বোচ্চ ৫০০-৭০০ টাকা স্কয়ার ফিট ব্যয় হতে পারে। তবে সেটা কোনভাবেই ৪ হাজার ৪৭২ টাকা হওয়ার সুযোগ নেই। এছাড়া আছিয়া সী ফুডসের ভবনে এমন কোন বিশেষত্ত্ব নেই, যে কারনেও খরচ বেশি হতে পারে।
তিনি বলেন, আছিয়া সী ফুডসের যে ২৭ হাজার স্কয়ার ফিট ভবনের দাবি করা হয়েছে, সেটাও সঠিক না। এর পরিমাণ অনেক কম হবে। এমনকি ওই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ যদি সঠিক হারে ও নিয়মিত অবচয় চার্জ করত, তাহলে তাদেরই দাবিকৃত ১২ কোটি ৮ লাখ টাকার ভবনের এতো বছর পরে এসে রিটেইন ডাউন ভ্যালু ৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা থাকত না।
এমন অস্বাভাবিক ভবন নির্মাণ ব্যয়ের বিষয়ে ডিএসইর সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বিজনেস আওয়ারকে বলেন, সার্বিক পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় সাড়ে ৪ হাজার টাকা নির্মাণ ব্যয় সন্দেহজনক। কিন্তু প্রায় সব কোম্পানিই কোন না কোনভাবে এমন অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক ব্যয়ের সম্পদ দেখিয়ে থাকে। তারপরেও শেয়ারবাজার থেকে তাদের অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে সমস্যা হয় না।
এ বিষয়ে জানতে কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তার (সিএফও) সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ইস্যু ম্যানেজার এএএ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের সচিব মো. ওলিউর রহমান ভালো বলতে পারবেন। পরে ওলিউর রহমানকে ফোন দিলে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে মিডিয়ায় কথা বলার জন্য আমি দায়িত্বপ্রাপ্ত না।
আছিয়া সী ফুডসকে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন দেওয়া বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বিজনেস আওয়ারকে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
বিজনেস আওয়ার/১২ জুন, ২০২২/আরএ
[…] আরও পড়ুন….ভূয়া সম্পত্তি দেখিয়ে শেয়ারবাজারে আসছ… […]
[…] যা নিয়ে গত ১২ জুন বিজনেস আওয়ারে ‘ভূয়া সম্পত্তি দেখিয়ে শেয়ারবাজারে আস… শীর্ষক সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এর আলোকে […]
[…] আরও পড়ুন…..ভূয়া সম্পত্তি দেখিয়ে শেয়ারবাজারে … […]
[…] ভূয়া সম্পত্তি দেখিয়ে আগামি সপ্তাহে…শেয়ারবাজারে আসার আগে আছিয়া ফুডসের অস্বাভাবিক আয় বৃদ্ধি […]
[…] ভূয়া সম্পত্তি দেখিয়ে আগামি সপ্তাহে…শেয়ারবাজারে আসার আগে আছিয়া ফুডসের অস্বাভাবিক আয় বৃদ্ধি […]
[…] ভূয়া সম্পত্তি দেখিয়ে শেয়ারবাজারে …শেয়ারবাজারে আসার আগে আছিয়া ফুডসের অস্বাভাবিক আয় বৃদ্ধি […]
[…] যা নিয়ে গত ১২ জুন বিজনেস আওয়ারে ‘ভূয়া সম্পত্তি দেখিয়ে শেয়ারবাজারে আস… শীর্ষক সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এর আলোকে […]
[…] ভূয়া সম্পত্তি দেখিয়ে শেয়ারবাজারে … […]