ঢাকা , সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দ্বীনি ইলম অর্জনের যেসব পুরস্কার ঘোষণা করেছেন নবিজি (সা.)

  • পোস্ট হয়েছে : ১২:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ অগাস্ট ২০২২
  • 18

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যারা দোজখের শাস্তি থেকে নাজাত পাওয়া মানুষ দেখতে চায়, তারা যেন আল্লাহ তাআলার দ্বীনের ইলম অর্জনকারীদের দিকে তাকায়। তিনি দ্বীনি ইলম অর্জনকারীর বেশ কিছু পুরস্কারের কথা ঘোষণা করেছেন। সেসব পুরস্কার কী?

সৃষ্টিজগতে মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করার অন্যতম কারণ হচ্ছে ইলম বা জ্ঞানার্জন। এ ইলমের কারণেই মহান আল্লাহ তাআলা হজরত আদম আলাইহিস সালামকে ফেরেশতাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং তাকে সেজদা করতে বলেছিলেন। এটি ছিল মানুষের প্রতি মহান আল্লাহ কুদরত। এখনও যে বা যারা ইলম বা জ্ঞানের অধিকারী তারাই সমাজে শ্রেষ্ঠত্ব বা প্রাধান্য পাওয়ার অধিকারী। এ কারণে দ্বীনি ইলম শেখার বিকল্প নেই। হাদিসে পাকে এসেছে-

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে দোজখের শাস্তি থেকে নাজাত পাওয়া মানুষ দেখতে চায়, সে যেন আল্লাহ তাআলার দ্বীনের ইলম অন্বেষণকারীদের দিকে দৃষ্টি দেয়। তিনি হলফ করে বলেন-

১. কোনো আলেমের দরজায় যখন কোনো জ্ঞান অন্বেষণকারী (দ্বীনি) ইলম শেখার জন্য যায়, তখন তার প্রত্যেক পদক্ষেপের বিনিময় একবছরের ইবাদাতের ছাওয়াব লেখা হয়।

২. জান্নাতে তার জন্য একটি শহর তৈরি করা হয়।

৩. সে যখন জমিনে বিচরণ করে, জমিন তার জন্যে আল্লাহ তাআলার দরবারে ক্ষমাপ্রার্থনা করে। এবং

৪. তার উপর সকাল-সন্ধ্যা এমন অবস্থায় উপস্থিত হয় যে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন।

৫. ফেরেশতারা সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, তারা (দ্বীনি ইলম অর্জনকারীরা) দোজখ থেকে নাজাত হাসিলকারী।’

মনে রাখতে হবে

দ্বীনি ইলম শিক্ষা করার গুরুত্ব অনেক বেশি। দ্বীনি ইলম না থাকলে আল্লাহকে ভয় করার গুণ থেকেও বঞ্চিত হতে হয়, আর আল্লাহর ভয়ই হলো নেক কাজের তাওফিক লাভের উপায়। যার অন্তরে আল্লাহর ভয় আছে কোরআন তাদের জন্য পথপ্রদর্শক। ইলমের বরকতেই অন্তরে আল্লাহর ভয় পয়দা হয়। ইমাম রাজি রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইলম সম্পর্কে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। তাহলো-

১. বৃষ্টি যেমন আসমান থেকে নাযিল হয়, তেমনি ইলমও আসমান থেকে অবতীর্ণ হয়।

২. বৃষ্টিপাতের কারণে ফলফলাদি উৎপাদনের জন্য যেভাবে জমিন তৈরি হয়, তেমনি ইলম অর্জনের কারণে মানুষের মনের জমিনে মানবিক গুণাবলী অর্জন সম্ভব হয়।

৩. বৃষ্টিপাত ছাড়া যেমন জমিন থেকে ফসলাদি উৎপন্ন হয় না, ঠিক ইলম ছাড়াও মানুষ আল্লাহ তাআলার ইবাদাত-বন্দেগি করতে সক্ষম হয় না।

৪. আকাশে বজ্র ধ্বনি বা বিদ্যুৎ চমকালে যেভাবে বৃষ্টিপাত হয়, তেমনিভাবে জান্নাতের আশা এবং জাহান্নামের শাস্তির ভয়ের ফলে ইলম অর্জন হয়।

৫. বৃষ্টি যেমন অনেক সময় উপকারী হয় আবার অপকারী হয়, ঠিক ইলম অনুযায়ী যদি আমল করা হয় তবে তা উপকারী হয়। পক্ষান্তরে ইলম অনুযায়ী আমল না করলে তবে তা অপকারী হয়। (তাফসিরে কবির)

আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুসলিমাকে দ্বীনি ইলম অর্জনসহ সর্ব ধরনের কল্যাণকর জ্ঞান অর্জন করে দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

বিজনেস আওয়ার/ ২৪ আগস্ট,২০২২/ এস এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

দ্বীনি ইলম অর্জনের যেসব পুরস্কার ঘোষণা করেছেন নবিজি (সা.)

পোস্ট হয়েছে : ১২:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ অগাস্ট ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যারা দোজখের শাস্তি থেকে নাজাত পাওয়া মানুষ দেখতে চায়, তারা যেন আল্লাহ তাআলার দ্বীনের ইলম অর্জনকারীদের দিকে তাকায়। তিনি দ্বীনি ইলম অর্জনকারীর বেশ কিছু পুরস্কারের কথা ঘোষণা করেছেন। সেসব পুরস্কার কী?

সৃষ্টিজগতে মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করার অন্যতম কারণ হচ্ছে ইলম বা জ্ঞানার্জন। এ ইলমের কারণেই মহান আল্লাহ তাআলা হজরত আদম আলাইহিস সালামকে ফেরেশতাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং তাকে সেজদা করতে বলেছিলেন। এটি ছিল মানুষের প্রতি মহান আল্লাহ কুদরত। এখনও যে বা যারা ইলম বা জ্ঞানের অধিকারী তারাই সমাজে শ্রেষ্ঠত্ব বা প্রাধান্য পাওয়ার অধিকারী। এ কারণে দ্বীনি ইলম শেখার বিকল্প নেই। হাদিসে পাকে এসেছে-

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে দোজখের শাস্তি থেকে নাজাত পাওয়া মানুষ দেখতে চায়, সে যেন আল্লাহ তাআলার দ্বীনের ইলম অন্বেষণকারীদের দিকে দৃষ্টি দেয়। তিনি হলফ করে বলেন-

১. কোনো আলেমের দরজায় যখন কোনো জ্ঞান অন্বেষণকারী (দ্বীনি) ইলম শেখার জন্য যায়, তখন তার প্রত্যেক পদক্ষেপের বিনিময় একবছরের ইবাদাতের ছাওয়াব লেখা হয়।

২. জান্নাতে তার জন্য একটি শহর তৈরি করা হয়।

৩. সে যখন জমিনে বিচরণ করে, জমিন তার জন্যে আল্লাহ তাআলার দরবারে ক্ষমাপ্রার্থনা করে। এবং

৪. তার উপর সকাল-সন্ধ্যা এমন অবস্থায় উপস্থিত হয় যে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন।

৫. ফেরেশতারা সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, তারা (দ্বীনি ইলম অর্জনকারীরা) দোজখ থেকে নাজাত হাসিলকারী।’

মনে রাখতে হবে

দ্বীনি ইলম শিক্ষা করার গুরুত্ব অনেক বেশি। দ্বীনি ইলম না থাকলে আল্লাহকে ভয় করার গুণ থেকেও বঞ্চিত হতে হয়, আর আল্লাহর ভয়ই হলো নেক কাজের তাওফিক লাভের উপায়। যার অন্তরে আল্লাহর ভয় আছে কোরআন তাদের জন্য পথপ্রদর্শক। ইলমের বরকতেই অন্তরে আল্লাহর ভয় পয়দা হয়। ইমাম রাজি রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইলম সম্পর্কে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। তাহলো-

১. বৃষ্টি যেমন আসমান থেকে নাযিল হয়, তেমনি ইলমও আসমান থেকে অবতীর্ণ হয়।

২. বৃষ্টিপাতের কারণে ফলফলাদি উৎপাদনের জন্য যেভাবে জমিন তৈরি হয়, তেমনি ইলম অর্জনের কারণে মানুষের মনের জমিনে মানবিক গুণাবলী অর্জন সম্ভব হয়।

৩. বৃষ্টিপাত ছাড়া যেমন জমিন থেকে ফসলাদি উৎপন্ন হয় না, ঠিক ইলম ছাড়াও মানুষ আল্লাহ তাআলার ইবাদাত-বন্দেগি করতে সক্ষম হয় না।

৪. আকাশে বজ্র ধ্বনি বা বিদ্যুৎ চমকালে যেভাবে বৃষ্টিপাত হয়, তেমনিভাবে জান্নাতের আশা এবং জাহান্নামের শাস্তির ভয়ের ফলে ইলম অর্জন হয়।

৫. বৃষ্টি যেমন অনেক সময় উপকারী হয় আবার অপকারী হয়, ঠিক ইলম অনুযায়ী যদি আমল করা হয় তবে তা উপকারী হয়। পক্ষান্তরে ইলম অনুযায়ী আমল না করলে তবে তা অপকারী হয়। (তাফসিরে কবির)

আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুসলিমাকে দ্বীনি ইলম অর্জনসহ সর্ব ধরনের কল্যাণকর জ্ঞান অর্জন করে দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

বিজনেস আওয়ার/ ২৪ আগস্ট,২০২২/ এস এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: