ঢাকা , সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটঁচাদপু্র ৩ নং কুশনা ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারের বিরুদ্ধে বয়স্ক ভাতার অর্থ আত্বসাতের অভিযোগ (ভিডিও)

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অগাস্ট ২০২০
  • 34

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক (ঝিনাইদহ): ঝিনাইদহ জেলার কোটঁচাদপুর উপজেলার ৩নং কুশনা ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতার সরকারী অনুদানের টাকা আত্বসাত করার অভিযোগ উঠেছে। পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান ও ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য বদিউজ্জামান বিরুদ্ধে এসব অনুদানের টাকা মেরে দেয়ার অভিযোগ করেছেন অনুদানের কার্ড পাওয়া সদস্যরা।

এ টাকার মধ্যে অনুদান প্রাপ্ত তালিকা থেকে এ ওয়ার্ডের মধ্যে অধিকাংশদের টাকা না দেয়ার তথ্য ও প্রমাণ বিজনেস আওয়ার ২৪.কম পত্রিকার হাতে এসেছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, বয়স্ক মানুষদের সরকার মাসিক ৫০০ টাকা হারে বছরে ৬ হাজার টাকা অনুদান দিয়ে থাকেন। ৫ নং ওয়ার্ডের রোহিত কামাল দাস বলেন, আমার নামে বয়স্ক ভাতা দেয়ার কার্ড দেয়া হয়েছে। অথচ আমাকে মাত্র ২০০ টাকা দেয়া হয়েছে। বাকী টাকা চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা দেয়নি। তাদের নাকি কাগজপত্র করতে টাকা খরচ হয়েছে।

বয়স্ক ভাতার কার্ড থাকার পরও চলতি বছরের জন্য কোন টাকা পাননি গঙ্গা রানী। তিনি বলেন, মেম্বার ৬ হাজার টাকা দিবে বললেও পরে দেয়নি। সারাদিন ইউনিয়ন পরিষদে বসিয়ে রাখার পর আগের বছরের ১৫০০ টাকা হাতে ধরিয়ে দেন।

সুর্য কান্তি দাস বলেন, আমার নামে কার্ড থাকলেও আমি কোন টাকা পাইনি। আমার নামে কার্ড রয়েছে। এ প্রসঙ্গে সুর্য কান্তির নাতি বলেন, ওয়ার্ডের সদস্য বদিউজ্জামান বই দিলেও টাকা দেননি। টাকা চাইলে তিনি বলেন এবছর অফিসারদের টাকা দিতে হবে। আগামী বছর থেকে টাকা পাবা।

হাজারী দাসের নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড থাকলেও কোন টাকা পায়নি তিনি। অথচ ও ওনার নামে সরকারী ফান্ডের টাকা তোলা হয়েছে বলে সরকারী ফাইলে উল্লেখ রয়েছে।

ভোলানাথ দাস বলেন, আমার কার্ড হলেও টাকা পায়নি। আমার টাকা কারা নিয়েছে তা আমি জানি না। যারা টাকা দিয়েছে তারাই নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

গঙ্গা রানী, সুর্য কান্তি, হাজারী দাস এবং ভোলানাথের মতো ভাতার টাকা না পাওয়ার এমন অভিযোগ অনেকেই করেছেন।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে ৩নং কুশনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদককে বলেন, এই বয়স্ক ভাতার টাকা দেয় ব্যাংক। যার নামে বই তাকেই টাকা দেয় ব্যাংক। আমি বিষয়টি শুনেছি। করোনা ভাইরাসের কারনে ব্যাংক থেকে বলা ছিলো মেম্বররা টাকা তুলে নিজ দায়িত্বে কার্ডধারিদের দেয়ার কথা। সেক্ষেত্রে মেম্বার হয়তো টাকা নিয়ে দিতে পারে। বা টাকা দিতে দু’এক দিন দেরি হতে পারে।

তিনি বলেন, যদি তারা টাকা না পেয়ে থাকে তাহলে মেম্বর টাকা মেরে খেয়েছে। এটা আমার জানার বাইরে। যারা আমার নামে অভিযোগ করেছে তারা আমার প্রতিপক্ষ। আপনি আসেন ওখান থেকে সমস্ত ব্যবস্থ্যা আমার। যদি কোনও ব্যক্তি বলতে পারে আমি কারও বই হাতে করে টাকা তুলে আত্মসাত করেছি, সেক্ষেত্রে যে সরকারি ব্যবস্থ্যা আছে সরকার নেবে।

আমি এ ব্যাপারে মেম্বারের সাথে কথা বললে মেম্ব্বার জানান আমি তো টাকা দিয়ে দিয়েছি ওনারা মিথ্যা অভিযোগ করেছে। আমি বিষয়টি যাচাই বাচাই করবো। যারা এগুলো করেছে তারা বিভিন্ন তালবাহানা করে খায়। ওরাই আমার কাছে টাকা চায়, যে টাকা দেন নাইলে করোনার মধ্যে আপনার মানে উলটো পালটা নিউজ করে দেবো। কোটচাদপুরের রমজান আলি, অনলাইনের এক সাংবাদিক, বাবলুর রহমান। এরা করোনার মধ্যে আমার কাছে টাকাও চেয়েছে।

আব্দুল হান্নান আরও বলেন, এই বিষয়ে মেম্বররা যদি টাকা মেরে খায় তাহলে সবচেয়ে বেশী দোষী ব্যাংক। এই কারনে বইটা যার সেই সুধু টাকা পাবে। নিজ উপস্থিত ছাড়া ব্যাংকের টাকা দেওয়া নিষেধ। ব্যাংক কিভাবে টাকা দেয়। আগের বইয়ে কিন্তু এমন হয়নি। করোনার মধ্যে নতুন যে বই হয়েছে সেই বইয়ে এই ঝামেলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার বদিউজ্জামান বিজনেস আওয়ারকে বলেন, আমি সবাইকে তাদের প্রাপ্য টাকা দিয়েছি। সামনে নির্বাচন আসছে আমার জনপ্রিয়তায় ইর্শ্বান্বিত হয়ে আমাকে ফাসানোর চেষ্টা করছে এই ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার বাহাজ্জেল। আর তার সঙ্গে যুক্ত আছেন বিএনপি নেতা পাতা বিশ্বাস, বাদল এবং কোটচাদপুরের একজন সাংবাদিক।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি।

বিজনেস আওয়ার/০৭ আগস্ট, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

কোটঁচাদপু্র ৩ নং কুশনা ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারের বিরুদ্ধে বয়স্ক ভাতার অর্থ আত্বসাতের অভিযোগ (ভিডিও)

পোস্ট হয়েছে : ১০:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অগাস্ট ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক (ঝিনাইদহ): ঝিনাইদহ জেলার কোটঁচাদপুর উপজেলার ৩নং কুশনা ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতার সরকারী অনুদানের টাকা আত্বসাত করার অভিযোগ উঠেছে। পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান ও ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য বদিউজ্জামান বিরুদ্ধে এসব অনুদানের টাকা মেরে দেয়ার অভিযোগ করেছেন অনুদানের কার্ড পাওয়া সদস্যরা।

এ টাকার মধ্যে অনুদান প্রাপ্ত তালিকা থেকে এ ওয়ার্ডের মধ্যে অধিকাংশদের টাকা না দেয়ার তথ্য ও প্রমাণ বিজনেস আওয়ার ২৪.কম পত্রিকার হাতে এসেছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, বয়স্ক মানুষদের সরকার মাসিক ৫০০ টাকা হারে বছরে ৬ হাজার টাকা অনুদান দিয়ে থাকেন। ৫ নং ওয়ার্ডের রোহিত কামাল দাস বলেন, আমার নামে বয়স্ক ভাতা দেয়ার কার্ড দেয়া হয়েছে। অথচ আমাকে মাত্র ২০০ টাকা দেয়া হয়েছে। বাকী টাকা চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা দেয়নি। তাদের নাকি কাগজপত্র করতে টাকা খরচ হয়েছে।

বয়স্ক ভাতার কার্ড থাকার পরও চলতি বছরের জন্য কোন টাকা পাননি গঙ্গা রানী। তিনি বলেন, মেম্বার ৬ হাজার টাকা দিবে বললেও পরে দেয়নি। সারাদিন ইউনিয়ন পরিষদে বসিয়ে রাখার পর আগের বছরের ১৫০০ টাকা হাতে ধরিয়ে দেন।

সুর্য কান্তি দাস বলেন, আমার নামে কার্ড থাকলেও আমি কোন টাকা পাইনি। আমার নামে কার্ড রয়েছে। এ প্রসঙ্গে সুর্য কান্তির নাতি বলেন, ওয়ার্ডের সদস্য বদিউজ্জামান বই দিলেও টাকা দেননি। টাকা চাইলে তিনি বলেন এবছর অফিসারদের টাকা দিতে হবে। আগামী বছর থেকে টাকা পাবা।

হাজারী দাসের নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড থাকলেও কোন টাকা পায়নি তিনি। অথচ ও ওনার নামে সরকারী ফান্ডের টাকা তোলা হয়েছে বলে সরকারী ফাইলে উল্লেখ রয়েছে।

ভোলানাথ দাস বলেন, আমার কার্ড হলেও টাকা পায়নি। আমার টাকা কারা নিয়েছে তা আমি জানি না। যারা টাকা দিয়েছে তারাই নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

গঙ্গা রানী, সুর্য কান্তি, হাজারী দাস এবং ভোলানাথের মতো ভাতার টাকা না পাওয়ার এমন অভিযোগ অনেকেই করেছেন।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে ৩নং কুশনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদককে বলেন, এই বয়স্ক ভাতার টাকা দেয় ব্যাংক। যার নামে বই তাকেই টাকা দেয় ব্যাংক। আমি বিষয়টি শুনেছি। করোনা ভাইরাসের কারনে ব্যাংক থেকে বলা ছিলো মেম্বররা টাকা তুলে নিজ দায়িত্বে কার্ডধারিদের দেয়ার কথা। সেক্ষেত্রে মেম্বার হয়তো টাকা নিয়ে দিতে পারে। বা টাকা দিতে দু’এক দিন দেরি হতে পারে।

তিনি বলেন, যদি তারা টাকা না পেয়ে থাকে তাহলে মেম্বর টাকা মেরে খেয়েছে। এটা আমার জানার বাইরে। যারা আমার নামে অভিযোগ করেছে তারা আমার প্রতিপক্ষ। আপনি আসেন ওখান থেকে সমস্ত ব্যবস্থ্যা আমার। যদি কোনও ব্যক্তি বলতে পারে আমি কারও বই হাতে করে টাকা তুলে আত্মসাত করেছি, সেক্ষেত্রে যে সরকারি ব্যবস্থ্যা আছে সরকার নেবে।

আমি এ ব্যাপারে মেম্বারের সাথে কথা বললে মেম্ব্বার জানান আমি তো টাকা দিয়ে দিয়েছি ওনারা মিথ্যা অভিযোগ করেছে। আমি বিষয়টি যাচাই বাচাই করবো। যারা এগুলো করেছে তারা বিভিন্ন তালবাহানা করে খায়। ওরাই আমার কাছে টাকা চায়, যে টাকা দেন নাইলে করোনার মধ্যে আপনার মানে উলটো পালটা নিউজ করে দেবো। কোটচাদপুরের রমজান আলি, অনলাইনের এক সাংবাদিক, বাবলুর রহমান। এরা করোনার মধ্যে আমার কাছে টাকাও চেয়েছে।

আব্দুল হান্নান আরও বলেন, এই বিষয়ে মেম্বররা যদি টাকা মেরে খায় তাহলে সবচেয়ে বেশী দোষী ব্যাংক। এই কারনে বইটা যার সেই সুধু টাকা পাবে। নিজ উপস্থিত ছাড়া ব্যাংকের টাকা দেওয়া নিষেধ। ব্যাংক কিভাবে টাকা দেয়। আগের বইয়ে কিন্তু এমন হয়নি। করোনার মধ্যে নতুন যে বই হয়েছে সেই বইয়ে এই ঝামেলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার বদিউজ্জামান বিজনেস আওয়ারকে বলেন, আমি সবাইকে তাদের প্রাপ্য টাকা দিয়েছি। সামনে নির্বাচন আসছে আমার জনপ্রিয়তায় ইর্শ্বান্বিত হয়ে আমাকে ফাসানোর চেষ্টা করছে এই ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার বাহাজ্জেল। আর তার সঙ্গে যুক্ত আছেন বিএনপি নেতা পাতা বিশ্বাস, বাদল এবং কোটচাদপুরের একজন সাংবাদিক।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি।

বিজনেস আওয়ার/০৭ আগস্ট, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: