ঢাকা , শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বর্ণান্ধতা কি এবং কেন হয়?

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • 81

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: বর্ণান্ধতা হচ্ছে বিভিন্ন রঙের মধ্যে কিছু কিছু রঙের পার্থক্য না করতে পারা। বর্ণান্ধতা বা বর্ণবৈকল্য (ইংরেজি: Color Blindness) হলো মানুষের, কতিপয় রঙ দেখার, শনাক্ত করার বা তাদের মধ্যে পার্থক্য করার অক্ষমতাজনিত এক প্রকার শারীরিক বৈকল্য। সাধারণত প্রতি ১০জন পুরুষে একজনের এই সমস্যা দেখা যায়।

বর্ণান্ধতা বলতে, যেমন- একজন ব্যক্তি বিভিন্ন রঙের মধ্যে, বিশেষ করে লাল, সবুজ বা নীলের পার্থক্য করতে পারেন না।

শরতের নীল আকাশ, প্রিয় মানুষের হাতে ধরা এক তোড়া লাল গোলাপ অথবা মাঠজুড়ে কাঁচা ধান। প্রতিটি বর্ণনাই আমাদের মনে তৈরি করে বিশেষ বিশেষ রঙের ছবি। তবে অনেকেই আছেন, যাদের কাছে রংগুলো ধরা দেয় অন্যভাবে; তাদের আমরা বলি বর্ণান্ধ।

পুরুষদের এক্স ক্রোমোজোমে ত্রুটিপূর্ণ জিন থাকলেই তারা বর্ণান্ধতায় বেশি ভোগে। রং বোঝার ঘাটতি পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং এটি বংশগত।

বর্ণান্ধতা হওয়ার পেছনে জেনেটিক আর বংশগত উভয় কারণ ছাড়াও অন্য অনেক কারণ থাকতে পারে।
যেমন:-
কোনো ওষুধ সেবনের পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
গুরুতর আঘাত পাওয়ার ফলে।
চোখে ছানি পড়ার কারণে।
পারকিনসন রোগে হলে।
ভিটামিন-এ-এর অভাবে।
বার্ধক্যজনিত কারণে কালার ব্লাইন্ড হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

ফর্টিস হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ নীতু শর্মা ভারতের হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘লাল-সবুজ রং বোঝার ঘাটতি এক্স ক্রোমোজোমের সঙ্গে জড়িত একটি বৈশিষ্ট্য। এর মানে হলো রং বোঝার ত্রুটির জন্য দায়ী সবুজটি বাহক মায়ের এক্স ক্রোমোজোমের মাধ্যমে ছেলের শরীরে এসেছে। জিনের গঠন অনুযায়ী, পুরুষদের একটি এক্স ও একটি ওয়াই ক্রোমোজোম থাকে।’

বর্ণান্ধতার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ হলো, দ্রুত পরীক্ষা করে গুরুতর কারণ শনাক্ত করা।

অ্যাকর্ড সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের পরিচালক এবং সিনিয়র চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও পি আনন্দ বলেন, ‘পুরুষদের মধ্যে আনুমানিক ৮ শতাংশ এবং নারীদের মধ্যে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বর্ণান্ধ। বর্ণান্ধতার মতো গুরুতর বিষয়টি আসলে বংশগত রোগ।’

বর্ণান্ধতার মূল কারণ লাল-সবুজ রঙের ত্রুটি থেকে নারীরা অনেকটাই মুক্ত। কারণ নারীদের দুটি এক্স ক্রোমোজোম থাকে। যদি একটি এক্স ক্রোমোজোম ত্রুটিপূর্ণ থাকে, তাহলেও অন্য এক্স ক্রোমোজোমের কারণে স্বাভাবিকভাবেই রং দেখতে পায়। এ কারণেই রং বোঝার ঘাটতি পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং এটি বংশগত।

ও পি আনন্দ আরও বলেন, ‘পুরুষদের এক্স ক্রোমোজোমে ত্রুটিপূর্ণ জিন থাকলেই তারা বর্ণান্ধতায় ভুগবেন। আর নারীদের ক্ষেত্রে বর্ণান্ধতায় না ভুগলেও এ রোগের বাহক হিসেবে কাজ করবেন।’

তবে আরেক ধরণের বর্ণান্ধতা আছে, যা নারী ও পুরুষের সমানভাবে হতে পারে। এর প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে হঠাৎ করে রং বুঝতে সমস্যা হওয়া।

বিভিন্ন কারণে এটি হতে পারে। যেমন—সিলডেনাফিল, ইথামবিউটল ডাইগক্সিন ও ম্যালেরিয়ার কিছু ওষুধ সেবন, চোখের স্নায়ুর সমস্যা, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত মদপান এবং কিছু রেটিনাল রোগের কারণে অর্জিত বর্ণান্ধতা হতে পারে।

বিজনেস আওয়ার/৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বর্ণান্ধতা কি এবং কেন হয়?

পোস্ট হয়েছে : ০৫:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: বর্ণান্ধতা হচ্ছে বিভিন্ন রঙের মধ্যে কিছু কিছু রঙের পার্থক্য না করতে পারা। বর্ণান্ধতা বা বর্ণবৈকল্য (ইংরেজি: Color Blindness) হলো মানুষের, কতিপয় রঙ দেখার, শনাক্ত করার বা তাদের মধ্যে পার্থক্য করার অক্ষমতাজনিত এক প্রকার শারীরিক বৈকল্য। সাধারণত প্রতি ১০জন পুরুষে একজনের এই সমস্যা দেখা যায়।

বর্ণান্ধতা বলতে, যেমন- একজন ব্যক্তি বিভিন্ন রঙের মধ্যে, বিশেষ করে লাল, সবুজ বা নীলের পার্থক্য করতে পারেন না।

শরতের নীল আকাশ, প্রিয় মানুষের হাতে ধরা এক তোড়া লাল গোলাপ অথবা মাঠজুড়ে কাঁচা ধান। প্রতিটি বর্ণনাই আমাদের মনে তৈরি করে বিশেষ বিশেষ রঙের ছবি। তবে অনেকেই আছেন, যাদের কাছে রংগুলো ধরা দেয় অন্যভাবে; তাদের আমরা বলি বর্ণান্ধ।

পুরুষদের এক্স ক্রোমোজোমে ত্রুটিপূর্ণ জিন থাকলেই তারা বর্ণান্ধতায় বেশি ভোগে। রং বোঝার ঘাটতি পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং এটি বংশগত।

বর্ণান্ধতা হওয়ার পেছনে জেনেটিক আর বংশগত উভয় কারণ ছাড়াও অন্য অনেক কারণ থাকতে পারে।
যেমন:-
কোনো ওষুধ সেবনের পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
গুরুতর আঘাত পাওয়ার ফলে।
চোখে ছানি পড়ার কারণে।
পারকিনসন রোগে হলে।
ভিটামিন-এ-এর অভাবে।
বার্ধক্যজনিত কারণে কালার ব্লাইন্ড হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

ফর্টিস হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ নীতু শর্মা ভারতের হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘লাল-সবুজ রং বোঝার ঘাটতি এক্স ক্রোমোজোমের সঙ্গে জড়িত একটি বৈশিষ্ট্য। এর মানে হলো রং বোঝার ত্রুটির জন্য দায়ী সবুজটি বাহক মায়ের এক্স ক্রোমোজোমের মাধ্যমে ছেলের শরীরে এসেছে। জিনের গঠন অনুযায়ী, পুরুষদের একটি এক্স ও একটি ওয়াই ক্রোমোজোম থাকে।’

বর্ণান্ধতার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ হলো, দ্রুত পরীক্ষা করে গুরুতর কারণ শনাক্ত করা।

অ্যাকর্ড সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের পরিচালক এবং সিনিয়র চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও পি আনন্দ বলেন, ‘পুরুষদের মধ্যে আনুমানিক ৮ শতাংশ এবং নারীদের মধ্যে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বর্ণান্ধ। বর্ণান্ধতার মতো গুরুতর বিষয়টি আসলে বংশগত রোগ।’

বর্ণান্ধতার মূল কারণ লাল-সবুজ রঙের ত্রুটি থেকে নারীরা অনেকটাই মুক্ত। কারণ নারীদের দুটি এক্স ক্রোমোজোম থাকে। যদি একটি এক্স ক্রোমোজোম ত্রুটিপূর্ণ থাকে, তাহলেও অন্য এক্স ক্রোমোজোমের কারণে স্বাভাবিকভাবেই রং দেখতে পায়। এ কারণেই রং বোঝার ঘাটতি পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং এটি বংশগত।

ও পি আনন্দ আরও বলেন, ‘পুরুষদের এক্স ক্রোমোজোমে ত্রুটিপূর্ণ জিন থাকলেই তারা বর্ণান্ধতায় ভুগবেন। আর নারীদের ক্ষেত্রে বর্ণান্ধতায় না ভুগলেও এ রোগের বাহক হিসেবে কাজ করবেন।’

তবে আরেক ধরণের বর্ণান্ধতা আছে, যা নারী ও পুরুষের সমানভাবে হতে পারে। এর প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে হঠাৎ করে রং বুঝতে সমস্যা হওয়া।

বিভিন্ন কারণে এটি হতে পারে। যেমন—সিলডেনাফিল, ইথামবিউটল ডাইগক্সিন ও ম্যালেরিয়ার কিছু ওষুধ সেবন, চোখের স্নায়ুর সমস্যা, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত মদপান এবং কিছু রেটিনাল রোগের কারণে অর্জিত বর্ণান্ধতা হতে পারে।

বিজনেস আওয়ার/৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: